নৌকা বিজয়ী হবে, এর কোনো বিকল্প নেই: আরাফাত

আরাফাত
গুলশান মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে ভোটদান শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোহাম্মদ আলী আরাফাত। ছবি: প্রবীর দাশ/স্টার

ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেছেন, 'চারদিকে শুধু নৌকার ভোট। নৌকা বিজয়ী হবে। এর তো কোনো বিকল্প নেই বাংলাদেশে।'

আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে গুলশান মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে ভোটদান শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

ভোটারদের কম উপস্থিতির বিষয়ে আরাফাত বলেন, 'সকালে কয়েকটা জায়গায় ঘুরেছি এবং খোঁজ নিয়েছি সকালে একটু বৃষ্টি পড়েছে। এ কারণে ভোটের টার্নআউট একটু কম হয়েছে। গুলশান, বনানী, বারিধারার ভোটকেন্দ্র দেখেছেন, সেখানে এমনিতেও একটু দেরি করে ঘুম থেকে ওঠেন এই এলাকার ভোটাররা। কিন্তু কালাচাঁদপুর, নর্দ্দা এলাকায় অনেক ভোটার। ভাসানটেকে, কড়াইলেও অনেক ভোটার এসেছে। এখন পর্যন্ত ভোটের পরিবেশ শান্তিপূর্ণ মনে হচ্ছে।' 

কেমন ভোট পড়েছে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'লাইন দেখে মনে হচ্ছে ভালোই ভোটার আসছে। সঠিক ফিগার বলতে পারবো না। আমরা শুধু বলছি ভোট দেন ভোট দেন। আমরা এটাও বলছি না যে নৌকায় ভোট দেন। কারণ আমরা জানি মানুষ ভোট দিতে আসলে ভোট নৌকায় পড়বে। চারদিকে শুধু নৌকার ভোট। আমাদের প্রচেষ্টা মানুষকে ভোট দিতে নিয়ে আসা‌।'

'অল্প দিনের নির্বাচন বলে মানুষের অনাগ্রহ থাকতে পারে। অনীহা থাকতে পারে। এখানে আমরা অনুপ্রেরণা দেওয়ার চেষ্টা করছি। আগ্রহী করার চেষ্টা করছি। আশা করছি যথেষ্ট পরিমাণ ভোট আমরা সংগ্রহ করতে পারব,' যোগ করেন তিনি। 

জয়ের ব্যাপারে কতটা আশাবাদী, জানতে চাইলে আরাফাত বলেন, 'নৌকা বিজয়ী হবে। এর তো কোনো বিকল্প নেই বাংলাদেশে। আমাদের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ এটাই ছিল ৫-৬ মাসের নির্বাচন একটা অনীহা থাকে। আরেকটা অনীহা তৈরি হয় যখন নৌকার এত ভোট সবাই ভাবে ব্যক্তি জীবনে আমি ভোট না দিলে কী হবে, কেউ না কেউ তো ভোট দিচ্ছে। নৌকা এত জনপ্রিয় যে জিতে যাবে। এটা ভয়ংকর চিন্তা।'

তিনি আরও বলেন, 'এটা আমাদের জন্য খুব ভালো যে সমাজে নৌকার অনেক জনপ্রিয়তা। কিন্তু এই জনপ্রিয়তা ভোটে ব্যালটে আনতে গেলে ওই চিন্তাটা আমাদের জন্য অনেক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়।'

কেন্দ্রে অন্যান্য প্রার্থীর পোলিং এজেন্ট না থাকার বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ এ আরাফাত বলেন, 'এ নিয়ে কিছু বলার নেই। যদি সাংগঠনিক শক্তিমত্তা না থাকে এখানে ১২৪টা সেন্টার আছে। বুথ আছে আমার ধারণা ৬০০টির মতো, এজেন্ট ৬০০ জন তো মিনিমাম লাগবে। একজন এজেন্ট প্রতিটা বুথে সারাদিন। শুধু এজেন্টের কথা চিন্তা করলে ১২০০ তো লাগে। সাংগঠনিক শক্তি যদি না থাকে, সে ক্ষেত্রে আমার কিছু বলার নাই। তবে আওয়ামী লীগের তো সেই সাংগঠনিক শক্তি আছে।' 

'আপনারা খেয়াল করে দেখবেন প্রতিটি কেন্দ্রের বাইরে আওয়ামী লীগের ব্যাচ পরা কেন্দ্রভিত্তিক কমিটিতে আমাদের নেতাকর্মীরা আছে। শুধু তারা যদি ভোট দেয়, এর মধ্যে যারা ভোটার এবং তাদের আত্মীয়-স্বজনরা যদি ভোট দেয়, তাহলেই তো ২০-২৫ হাজার ভোট পড়ে যাবে,' যোগ করেন তিনি।

কত শতাংশ ভোট পড়তে পারে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'কত শতাংশ ভোট পড়বে, এগজাক্ট নম্বরটা বলতে চাচ্ছি না। তবে আপনারা উপনির্বাচনগুলোতে দেখেছেন যে খুব কম টার্নআউট হয়েছে, আমাদের চেষ্টা ছিল সেই টার্ন আউটটা বাড়ানো মানে ডাবল করা। সেই চেষ্টা আমরা করেছি।' 

'পাঁচ মাস আসলে খুবই অল্প সময়, পাঁচ মাসে অনেক কিছু শুরু করা যায়। আমি যে সমস্যাগুলো এলাকায় গিয়েছি দেখে এসেছি সেই সমস্যার সমাধান নিয়ে আমি ইতোমধ্যে চিন্তা করা শুরু করেছি। কিছু কিছু কাজ আমি শুরু করে দেবো সেটা সবাই দেখবে,' যোগ করেন তিনি।

দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে সকাল ১১টার দিকে আরাফাত এ কেন্দ্রে ভোট দিতে আসেন। তিনি আসার আগে ও চলে যাওয়ার পরে ভোটকেন্দ্রের ভেতরে ও বাইরে নৌকার ব্যাজ পরা অনেক লোককে দেখা যায়। 

সকাল সাড়ে ১১টা পর্যন্ত গুলশান মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৫টি কেন্দ্রে মোট ভোট পড়েছে ২৬০টি। এই ৫ কেন্দ্রের মোট ভোটার সংখ্যা ১৩ হাজার ৯৫৭ জন।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১৫, ১৮, ১৯ ও ২০ নম্বর ওয়ার্ড এবং ঢাকা সেনানিবাস এলাকা নিয়ে গঠিত এই আসনে ভোটকেন্দ্র আছে ১২৫টি এবং ভোটার ৩ লাখ ২৫ হাজার ২০৫ জন।

এই আসনের সংসদ সদস্য আকবর হোসেন পাঠান ফারুকের মৃত্যুতে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ৫ মাস আগে এ উপনির্বাচন হচ্ছে।

১২৪টি ভোটকেন্দ্রের ৬০৫টি ভোটকক্ষে সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীন ভোটগ্রহণ চলবে।

এ আসনে উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আছেন ৮ জন। তাদের মধ্যে দলীয় প্রার্থীরা হলেন- আওয়ামী লীগের মোহম্মদ আলী আরাফাত, জাতীয় পার্টির সিকদার আনিসুর রহমান, জাকের পার্টির কাজী মো. রাশিদুল হাসান, তৃণমূল বিএনপির শেখ হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. রেজাউল ইসলাম স্বপন ও বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তি জোটের মো. আকবর হোসেন।

আর স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে আছেন আলোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর মো. আশরাফুল আলম (হিরো আলম) এবং মো. তারিকুল ইসলাম।

 

Comments

The Daily Star  | English
The Indian media and Bangladesh-India relations

The Indian media and Bangladesh-India relations

The bilateral relationship must be based on a "win-win" policy, rooted in mutual respect, non-hegemony, and the pursuit of shared prosperity and deeper understanding.

5h ago