ক্যামেরা থাকলে ব্যালটে কারচুপি ধরা বেশি সহজ: সাখাওয়াত হোসেন

ছবি: সংগৃহীত

ইভিএম কেনার পরিবর্তে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠানে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের পরামর্শ দিয়েছেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেন, পেপার ব্যালটে ভোট যদি চুরিও করে, ভেরি ইজি টু ফাইন্ড আউট।

আজ বুধবার দুপুরে নির্বাচন কমিশনে বৈঠক শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

কমিশনের সঙ্গে কী আলোচনা হয়েছে জানতে চাইলে সাখাওয়াত হোসেন বলেন, আমি বলেছি একটি বড় জেলায় ১৪-১৬টি নির্বাচনী এলাকা। এখন যে অবস্থা, ১০ কোটি ভোটার। এখানে একজন রিটার্নিং অফিসার দিয়ে কাজ হবে না। আইনে কোথাও বলা নেই একজনই রিটার্নিং অফিসার হতে হবে। সেই জায়গায় নিজস্ব অফিসার...যেন নিয়ন্ত্রণ আপনাদের হাতে থাকে। যদিও আমার কথায় অনেকে রাজি হয়নি।

তিনি আরও বলেন, এনআইডি সরকার কেন নিতে চাচ্ছে সেটা পরিষ্কার হয়নি। এটা যদি আলাদা হয়ে যায় তাহলে কোনো এক সময় ভবিষ্যতে ভোটার তালিকা নিয়ে কথা উঠবে। কারটা ঠিক, এনআইডি নাকি ভোটার তালিকা! কাল একজন গিয়ে বলবে আমার বয়স ৩০ না, ভুল করে লিখেছে। আমার বয়স ১৯ বছর। করে ফেলল, ভোটার তালিকায় কী হবে? নাম পরিবর্তন হয়ে গেল। আল্টিমেটলি এটা নিয়ে একটা গণ্ডগোল হবে। আমি বলেছি, এই জায়গায় সরকারকে বোঝাতে হবে। সরকার বুঝবে, কারণ এই সরকারের আমলেই তো আমরা ভোটার তালিকা তৈরি করেছিলাম। এনআইডি সরকার কেন নিতে চাচ্ছে সেটার যৌক্তিক কারণ পাওয়া যায়নি।

ইভিএমের পরিবর্তে সিসিটিভি ক্যামেরা কেনা উচিত মত দিয়ে তিনি বলেন, ইভিএম নিয়ে বির্তক আছে। কমিশন ১৫০ ইভিএম যে বাজেটে কিনবে, তার চেয়ে ভালো যতখানি পারে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করুক। এটা রেকর্ডেড থাকবে। আর পেপার ব্যালটে ভোট যদি চুরিও করে, ভেরি ইজি টু ফাইন্ড আউট। কমিশনকে বলেছি, এখন আপনাদের কাছে স্বচ্ছ ভোটার তালিকা আছে, সই আছে, সব কিছু ম্যাচ করা যায়। সূক্ষ কারচুপি আপনারা যেটা দেখলেন, ইভিএমে—বাইরে অ্যাবসুলুটলি ফার্স্ট ক্লাস, কোনো ঝামেলা নেই, হৈচৈ নেই, কিচ্ছু নেই, ভেতরে কী হচ্ছে! অন্য সিস্টেমে যেটা হবে বাইরেও হৈচৈ হবে। একা তো পারবে না, বুথ ক্যাপচার করতে ৫-৬ জন লোক লাগবে। তাহলে প্রতিপক্ষ হৈচৈ তো করবে। সেটা আপনারা আরও ভালো করে দেখতে পারবেন।

এক প্রশ্নের জবাবে সাখাওয়াত বলেন, নির্বাচন কমিশনের কাজ না; কে থাকল কে থাকল না, কী সিস্টেমে সরকার চলছে। নির্বাচন কমিশন শপথ নিয়েছে সংবিধান অনুযায়ী। সংবিধানের আলোকে নির্বাচন হবে। আমি বলেছি, আপনাদের চিন্তা করতে হবে কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, বাস্তবায়ন করতে হবে। কী কী ব্যবস্থা নিলে করতে পারবেন। এখানে বিস্তারিত আলোচনা করার সুযোগ নেই।

আমাদের কথার পরিপ্রেক্ষিতে কমিশন কোনো কথা বলেনি। কী বলবে আমি জানি না। আমি বলেছি, আপনাদের কোনো সংকট নেই। সংবিধান যা বলছে, আপনারা ঠিক তাই করছেন—বলেন সাখাওয়াত।

গাইবান্ধার নির্বাচন বন্ধ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা ৫ মাস বন্ধ রেখেছিলাম। একটি আসনের জন্য তো সংসদে কোনো গণ্ডগোল হচ্ছে না। আমি মনে করি, আপনাদের যে সাংবিধানিক ক্ষমতা দেওয়া আছে—যতক্ষণ না আপনি নিশ্চিত হচ্ছেন অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন হবে, আপনি বন্ধ রাখতে পারেন। কে কী বললো সেটা শুনে লাভ নেই। কমিশনের যে ক্ষমতা সেটা তারা প্রয়োগ করেছে। এখন যেটা হচ্ছে ফলোআপ কী করবে? যদি ফলোআপ করতে না পারে কারা দোষী, বের করে যদি শাস্তি দিতে না পারে তাহলে কমিশনের উদ্দেশ্য নিয়ে লোকে প্রশ্ন করবে এবং ভবিষ্যতে আপনারা ক্ষমতার প্রয়োগ করতে পারবেন না।

Comments

The Daily Star  | English
probe committee for past elections in Bangladesh

Govt launches probe into last 3 national polls

The government has formed a committee to investigate allegations of corruption, irregularities, and criminal activities in the three national elections held in 2014, 2018, and 2024.

8h ago