চাঁদপুরে কার্গো জাহাজে ঘুমন্তদের মাথায় কুপিয়ে হত্যা করা হয়: নৌপুলিশ
চাঁদপুরের মেঘনা নদীতে কার্গো জাহাজে নিহতদের ঘুমন্ত অবস্থায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথায় কুপিয়ে হত্যা করা হয় বলে জানিয়েছে নৌপুলিশ।
এ ঘটনায় নিহত সাত শ্রমিকের মধ্যে জাহাজ থেকে উদ্ধারকৃত পাঁচজনের মরদেহের সুরতহালের দায়িত্বে থাকা চাঁদপুরের হরিণা নৌপুলিশের উপপরিদর্শক তরিকুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, 'সারবাহী আল বাকেরা কার্গো জাহাজটিতে পাঁচ শ্রমিক যেভাবে ঘুমিয়েছিলেন, সেভাবেই তাদের রক্তাক্ত মৃতদেহ পাওয়া যায়।'
চাঁদপুর অঞ্চলের নৌপুলিশের পুলিশ সুপার মুশফিকুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কার্গো জাহাজের নিহত সাত শ্রমিকের সুরতহাল শেষ হয়েছে। শিগগির পিবিআই ও সিআইডির তদন্ত দল মরদেহের ময়নাতদন্ত শুরু করবে। আশা করি ময়নাতদন্তের পর আমরা বেশ কিছু তথ্য পাব। আপাতত তিনজন নিহত ও একজন আহত শ্রমিকের পরিচয় পাওয়া গিয়েছে। আশা করছি খুব শিগগির বাকিদের পরিচয় পাওয়া যাবে।'
'কী উদ্দেশ্যে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, এটা ডাকাতি না পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড, এখন পর্যন্ত আমরা কিছুই জানতে পারিনি। প্রাথমিকভাবে জাহাজের সবকিছু পর্যবেক্ষণ করে যতটুকু দেখেছি, তাতে জাহাজের কোনো পণ্য বা কোনো কিছু খোয়া যায়নি। ইতোমধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তদন্ত শুরু করেছে। আশা করছি খুব শিগগির আমরা মূল কারণ জানতে পারব। এ ঘটনায় আহত একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে', বলেন তিনি।
উল্লেখ্য, বৃষ্টি এন্টারপ্রাইজ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের জাহাজ আল বাকেরার আট শ্রমিক সার নিয়ে চট্টগ্রাম থেকে সিরাজগঞ্জের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন। রোববার রাতে জাহাজটি চাঁদপুরের ঈশানবালা এলাকায় মেঘনা নদীতে থাকার সময় শ্রমিকরা জাহাজের বিভিন্ন কক্ষে ঘুমিয়ে ছিলেন। রাতের কোনো এক সময়ে দুর্বৃত্তরা ওই শ্রমিকদের কুপিয়ে রক্তাক্ত করে। পরে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে এ খবর পেয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জাহাজ থেকে পাঁচ শ্রমিকের মৃতদেহ উদ্ধার করে, পাশাপাশি আরও তিনজনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে। পরে আহতদের মধ্যে দুজনকে চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
পরিচয় শনাক্ত হওয়া নিহতরা হলেন, কার্গো জাহাজের মাস্টার ফরিদপুর জেলার মো. কিবরিয়া। জাহাজের চালক সালাউদ্দিন ও সুকানি আমিনুল। তাদের বাড়ি নড়াইলে। আহত শ্রমিক জুয়েল খালাসী। তিনি ফরিদপুর সদর উপজেলার বকারটিলা গ্রামের সেকান্দার খালাসীর ছেলে।
Comments