নারায়ণগঞ্জে সাংবাদিকের বাড়িতে হামলা-গুলি
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলায় একটি পত্রিকার সাংবাদিকের বাড়িতে হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। তারা ওই সাংবাদিকের বাড়ি লক্ষ্য করে গুলিও চালায়।
আজ রোববার সন্ধ্যায় এই হামলার ঘটনা ঘটে।
পুলিশ জানিয়েছে, সন্ধ্যা সোয়া ৬টায় উপজেলার গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের নতুন বাজার এলাকায় দৈনিক কালবেলার প্রতিনিধি জাহাঙ্গীর মাহমুদের বাড়িতে হামলা হয়েছে।
সহকারী পুলিশ সুপার মেহেদী ইসলাম (সার্কেল-গ) বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং বুলেটের খোসা আলামত হিসেবে সংগ্রহ করেছে।
'ওই সাংবাদিক হামলায় জড়িত কয়েকজনের নাম জানিয়েছেন, যারা কিছু দিন আগেও তার ওপর হামলা করেছিল। আমরা তদন্ত করে দেখছি,' বলেন তিনি।
জাহাঙ্গীর মাহমুদ অভিযোগ করেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট মাসুদুর রহমানের নেতৃত্বে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
তিনি বলেন, 'নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি মাসুদুর রহমান ও সাবেক সহসাধারণ সম্পাদক মো. ইয়াসিন মিয়া এলাকায় মাদক চোরাকারবারিতে জড়িত। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ইয়াসিনের বিরুদ্ধে মাদক, চাঁদাবাজি, জমি দখলসহ বিভিন্ন অপরাধ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করি। সরকার পতনের পর ইয়াসিন ওই সংবাদের ক্ষতিপূরণ বাবদ দুই লাখ টাকা দাবি করে আসছেন,' বলেন তিনি।
'টাকা না দেওয়ায় গত ১৬ নভেম্বর ইয়াসিন তার লোকজন নিয়ে বাড়িতে হামলা চালিয়ে আমাকে মারধর করেন। এ ঘটনায় রূপগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক সাংবাদিক আহমেদ রাসেল বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেন। এরপর থেকেই মাসুদুর রহমান ও ইয়াসিন মিয়া হুমকি দিচ্ছিলেন, মামলা তুলে না নিলে আমাকে হত্যা করা হবে', বলেন জাহাঙ্গীর।
হুমকি পেয়েছেন জানিয়ে ঘটনায় গত শনিবার জাহাঙ্গীর রূপগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন।
মারধরের মামলায় রোববার দুই আসামি আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন। শুনানি নিয়ে আদালত তাদের একজনকে জামিন দেন এবং অন্যজনকে কারাগারে নেওয়ার আদেশ দেন।
তবে মাসুদুর রহমানের দাবি, জাহাঙ্গীরের অভিযোগ মিথ্যা। মোবাইল ফোনে তিনি বলেন, 'কিছু দিন আগে এলাকার কিছু কিশোর জাহাঙ্গীর ভাইকে না বলে তার গাছের ডাব পেড়ে খেয়ে ফেলে। জাহাঙ্গীর ভাই ওই কিশোরদের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়ালে আমার অনুসারী ছাত্রদল নেতা বিষয়টি মীমাংসার জন্য সেখানে যান। ওই সময় কিশোরদের ছোড়া একটি ইটের টুকরো জাহাঙ্গীর ভাইয়ের শরীরে আঘাত করে। এর জেরে তিনি এলাকার নিরপরাধ লোকজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন, যাদের অনেকেই আমার অনুসারী।'
'মামলার পর থেকে সবাই এলাকা ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। বিষয়টি মীমাংসার জন্য আমি জাহাঙ্গীর ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলেছি। আজ শুনেছি তার বাড়িতে গুলি চালানো হয়েছে। ঘটনার সময় আমি সোনারগাঁয়ে ছিলাম। আমি চাই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হোক।'
Comments