বাসায় ইয়াবা রেখে বিএনপি নেতাকে আটক, ২ পুলিশ কর্মকর্তা ক্লোজড

আশুগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) দীপক কুমার ও প্রদ্যুত ঘোষ চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে বিএনপির এক নেতার বাসায় ইয়াবা রেখে তাকে থানায় ধরে এনে আটকে রাখার ঘটনায় দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে ক্লোজ করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে। 

তারা হলেন, আশুগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) দীপক কুমার ও প্রদ্যুত ঘোষ চৌধুরী। 

এ ঘটনায় আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল হোসেনকেও অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

আজ শুক্রবার বিকেলে জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাবেদুর রহমান বিষয়টি দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করেছেন।  

ভুক্তভোগী নোমান মিয়া আশুগঞ্জ উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের একটি ওয়ার্ড শাখা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা শহীদ জিয়া স্মৃতি সংসদের শিল্প বিষয়ক সম্পাদক এবং স্থানীয় বাজারের ব্যবসায়ী।

গতকাল আশুগঞ্জ থানা হাজত থেকে ছাড়া পাওয়ার পর নোমান মিয়া পুরো বিষয়টি গণমাধ্যমকর্মীদের জানান এবং জেলা পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন।

লিখিত অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, গত বুধবার রাতে আশুগঞ্জ বাজার সংলগ্ন তার ভাড়া বাসায় যৌথবাহিনীর সদস্যরা অভিযান চালায়। এসময় সেনা সদস্যরা পুরো ঘরে তল্লাশি চালিয়ে অবৈধ কোনো কিছু খুঁজে পাননি। অভিযান শেষ করে সেনা সদস্যরা চলে যাচ্ছিলেন, এমন সময় আশুগঞ্জ থানার এসআই দীপক ও প্রদ্যুত বাসায় ঢুকে তল্লাশির একপর্যায়ে সোফার পেছনে ইয়াবা পাওয়া গেছে বলে চিৎকার করতে থাকেন। এসময় নোমান মিয়া তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ করে সেনা সদস্যদের জানান যে, ওই পুলিশ কর্মকর্তারা নিজেরাই সোফার পেছনে ইয়াবা ফেলেন। এসময় একজন পুলিশ কর্মকর্তা তার মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে গুলির হুমকি দিয়ে হাতকড়া পরিয়ে দেন। এরইমধ্যে পুলিশ কর্মকর্তারা ওই ব্যবসায়ীর বেডরুমে ঢুকে একটি ব্যাগে রাখা নগদ পাঁচ লাখ ৫৬ হাজার টাকা পেয়ে এগুলোকে 'হুন্ডির' টাকা আখ্যা দিয়ে নিজেদের আয়ত্তে নিয়ে নেন। এ ছাড়াও তারা বিভিন্ন ব্যাংকের নয়টি চেকের পাতা (ব্যবসায়িক প্রয়োজনে আগে থেকে স্বাক্ষর করা) ছিঁড়ে নিয়ে যান। এরপর তাকে গাড়িতে তুলে থানায় নেওয়া হয়। 

পুলিশের ওই সদস্যরা পরিকল্পিতভাবে তাকে ফাঁসানোর উদ্দেশ্যে এমনটি করেছেন বলেও অভিযোগে উল্লেখ করেন নোমান মিয়া।

এ বিষয়ে নোমান মিয়া দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার ঘটনায় আশুগঞ্জ থানায় যে মামলা দায়ের করা হয়েছে সেই মামলায় ভুলক্রমে তার নাম অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন বাদী। পরে মামলার বাদী রমজান মিয়ার সঙ্গে তারা যোগাযোগ করলে তার বিষয়ে বাদীর কোনো অভিযোগ নেই উল্লেখ করে আদালতে এফিডেভিট জমা দেওয়া হয়। এফিডেভিটে বাদী উল্লেখ করেন, নোমান মিয়াকে ভুলক্রমে আসামি করা হয়েছিল। কিন্তু এসব না জানার ভান করে তাকে হয়রানি করতে কিংবা তার কাছ থেকে মোটা অংকের অর্থ আদায় করতে এমন কাণ্ড করেছেন পুলিশ কর্মকর্তারা। 

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাবেদুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'নোমান মিয়াকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টার যে অভিযোগ উঠেছে, তা খতিয়ে দেখতে ইতোমধ্যে তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারেই দেখছি। ইতোমধ্যে প্রশাসনিক কারণ দেখিয়ে দুজন উপ-পরিদর্শককে ক্লোজ করা হয়েছে। অপরাধী যেই হোক না কেন, কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।'

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গতকাল বৃহস্পতিবার সকালেই অভিযোগটি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সরাইল সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. রকিবুল হাসানকে। 

তদন্তের দায়িত্ব পাওয়া এই কর্মকর্তা ডেইলি স্টারকে জানান, তিনি বিষয়টির প্রাথমিক তদন্ত করছেন। 
 

Comments

The Daily Star  | English

Pakistan minister denies nuclear body meeting after offensive launched on India

Pakistan's military said earlier that the prime minister had called on the authority to meet. The information minister did not respond immediately to a request for comment.

1h ago