ফতুল্লায় ইট-বালুর ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আ. লীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা

সুরুজ মিয়া

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার এবং ইট-বালু ব্যবসা নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে পুরোনো দ্বন্দ্বের জেরে এই ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টার দিকে কাশীপুর ইউনিয়নের ভোলাইল আলীপাড়া এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে বলে জানান ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আযম।

পুলিশ জানায়, নিহত ব্যক্তির নাম সুরুজ মিয়া (৬৭)। তিনি কাশীপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ছিলেন। আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন নিহতের দুই ছেলে মো. জনি আহমেদ (৩৫) ও রাজু আহমেদ (৪০), তাদের সহযোগী অটোরিকশা চালক মো. রাসেল (৩২) ও শাকিল (৩০)।

স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সুরুজ মিয়া ও তার ছেলেরা ইট ও বালুর ব্যবসা করেন। এ ব্যবসা নিয়ে ওই এলাকার 'সাল্লু বাহিনীর' সঙ্গে দ্বন্দ্ব ছিল তাদের। এর জেরেই হামলা হয়।

ফতুল্লা থানার ওসি নূরে আযম বলেন, 'আধিপত্য বিস্তার ও ইট-বালু ব্যবসার নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে পুরোনো দ্বন্দ্বের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, সন্ত্রাসী সালাউদ্দিন সালু ওরফে সাল্লু তার লোকজন নিয়ে এ হামলা চালায়। তারা দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে পাঁচজনকে কুপিয়ে আহত করেন। হাসপাতালে একজন মারা যান।'

নিহতের আত্মীয় সাব্বির হোসেন বলেন, 'সাল্লু ও তার ভাই হীরাসহ তাদের লোকজন এ হামলা চালিয়েছে। তাদের অস্ত্রের কোপে আমার তালইয়ের (সুরুজ মিয়া) আঙুল বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ওরা সন্ত্রাসী, এলাকায় খুব উৎপাত করে। বাড়ি বানালেও ওদের চাঁদা দিতে হয়, ওদের কাছ থেকে ইট, বালু কিনতে বাধ্য করে। কেউ প্রতিবাদ করলেই তাদের উপর হামলা চালায়।'

গত বছরের ৬ এপ্রিল হত্যা, ডাকাতি, ছিনতাই, মাদক, মারামারিসহ নানা অভিযোগে ১৬ মামলার আসামি আফজাল হোসেনকে (৪২) রাস্তার উপর কুপিয়ে খুন করা হয়। এ ঘটনায়ও সালাউদ্দিন ওরফে সাল্লুর জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে।

এদিকে, দুপুরে হামলার ঘটনার পর থেকে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সন্ধ্যায় সরেজমিনে গিয়ে অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ পাওয়া যায়।

স্থানীয় এক মুদির দোকানি আবুল কাশেম বলেন, 'আতঙ্কে লোকজন দোকান বন্ধ করে দিয়েছে। আবারও হামলা বা মারামারি হয় কিনা সেই ভয়ে লোকজন ঘর থেকে কম বের হচ্ছে।'

ওসি নূরে আযম বলেন, 'নিহতের মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে আছে। পুলিশের একাধিক টিম হামলাকারীদের ধরতে অভিযান চালাচ্ছে। এই ঘটনায় একটি হত্যা মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।'

তবে রাত নয়টায় এ প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা হয়নি।

Comments

The Daily Star  | English

Sagar-Runi murders: HC grants 6 more months to taskforce to end probe

Additional attorney general seeks nine-month time citing lost documents, staff transfers

32m ago