ফেসবুকে চাকরি-মডেলিংয়ের বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রতারণা, শিক্ষার্থীসহ আটক ৮
ফেসবুকে লোভনীয় চাকরি, ট্যালেন্ট হান্টিং ও মডেলিংয়ের বিজ্ঞাপন দিয়ে যৌনকর্মে বাধ্য করার অভিযোগে আট জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ বুধবার সকালে সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) আজাদ রহমান রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানায়, বেসরকারি মেডিকেল শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান ও তার খালাতো ভাই শেখ জাহিদ বিন সুজন এই চক্রের মূলহোতা। গত সাত বছরে চক্রটি প্রায় ১০০ কোটি টাকা আয় করেছে।
গতকাল মঙ্গলবার সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টারের একটি টিম অভিযান চালিয়ে যশোর, সাতক্ষীরা, চাঁদপুর ও ঢাকা থেকে মো. মেহেদী হাসান (২৫) ও তার প্রধান সহযোগী শেখ জাহিদ বিন সুজনসহ আট জনকে আটক করে।
আটককৃত অন্যরা হলেন, মো. জাহিদ হাসান ওরফে কাঁকন (২৮), তানভীর আহমেদ ওরফে দীপ্ত (২৬), সৈয়দ হাসিবুর রহমান (২৭), শাদাত আল মুইজ (২৯), সুস্মিতা আক্তার ওরফে পপি (২৭) ও নায়না ইসলাম (২৪)।
সিআইডি বলছে, চক্রটি ফেসবুক ও অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চাকরির বিজ্ঞাপন, কখনো মডেল বা 'ট্যালেন্ট হান্ট' শীর্ষক প্রতিযোগিতার আয়োজন করত। এতে যারা সাড়া দিত তাদের নিয়ে টেলিগ্রাম গ্রুপ খোলা হত। পরে বিদেশিদের কাছে ছবি পাঠানোর কথা বলে কৌশলে ওই তরুণীদের ছবি হাতিয়ে নিত।
পরে সেসব ছবি ভাইরাল করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তাদের বাধ্য করা হতো ভিডিওকলে যুক্ত হতে এবং যৌন সম্পর্ক স্থাপনে বাধ্য করা হতো।
সিআইডি বলছে, দেশ-বিদেশে এই চক্রের শক্তিশালী একটি নেটওয়ার্ক রয়েছে। নানা নামে তাদের শতাধিক চ্যানেলে গ্রাহক সংখ্যা কয়েক লাখ। দীর্ঘদিন অনুসন্ধান করে সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার এই চক্রের মূল হোতা ও তার প্রধান সহযোগীদের শনাক্ত করতে সক্ষম হয়।
অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থে এ চক্রের সদস্যরা যশোর, সাতক্ষীরা, খুলনা এবং ঢাকায় বিপুল পরিমাণ জমি কিনেছে। তাদের আত্মীয়-স্বজনের ব্যাংক অ্যাকাউন্টেও বিপুল অর্থ জমিয়ে রাখার তথ্য পাওয়া গেছে বলে সিআইডি জানায়।
সিআইডি বলছে, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিতে চক্রটি কয়েকশ মোবাইল সিম ব্যবহার করেছে এবং এর কোনোটিই প্রকৃত ন্যাশনাল আইডি দিয়ে নিবন্ধন করা নয়।
আটককৃতদের মোবাইল ও ল্যাপটপ জব্দ করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ডিএমপির পল্টন থানায় পর্নোগ্রাফি আইন, পেনাল কোড ও সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে।
Comments