সাভারে পুলিশের সোর্স হত্যার তদন্তে নেমে আরও এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার
সাভারের বিরুলিয়ায় মাদক চোরাকারবারির স্ত্রীকে গ্রেপ্তারের জেরে এক গোয়েন্দা পুলিশের সোর্সকে হত্যা করে মাটিচাপা দেওয়ার ঘটনায় তদন্তে নেমেছিল পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের পর আসামির দেওয়া তথ্য থেকে মঙ্গলবার আরও এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, সম্প্রতি ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আবদুল হামিদ মিয়া ও অপর মাদক চোরাকারবারি স্বপনের স্ত্রীকে আটকের জেরে গোয়েন্দা পুলিশের সোর্স সীমা বেগমকে (৪২) নিখোঁজের পর হত্যা করে মরদেহ মাটি চাপা দেয়ার অভিযোগ পাওয়া যায়। পরে বিরুলিয়ার খনিজ নগর এলাকায় মাদক চোরাকারবারি স্বপনের বাড়ির পাশ থেকে ওই মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকায় আরেক মাদক চোরাকারবারি সাইফুলকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ওই মামলায় সাইফুল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তবে জবানবন্দিতে তিনি ১৪ মাস আগে সাভার পৌর সিটিলেন এলাকার এক যুবককে হত্যা করে মরদেহ মাটিচাপা দেওয়ার কিছু ক্লুও প্রকাশ করেন।
সেই ক্লু ধরে গোয়েন্দা পুলিশ মাদক চোরাকারবারি স্বপনের সিটিলেনের নির্মাণাধীন ভবনের মাটি খুঁড়ে মাথার খুলিসহ দেহের বিভিন্ন অংশের হাড় উদ্ধার করে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে মরদেহের খণ্ডাংশ উদ্ধারের পর মাদক চোরাকারবারি স্বপনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মো: আসাদুজ্জামান ঘটনাস্থল থেকে এসব তথ্য গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন।
গ্রেপ্তার স্বপন সাভার পৌরসভার ইমান্দিপুরের শাহজাহানের ছেলে। তার সাভারের বিভিন্ন এলাকায় কয়েকটি বাড়ি রয়েছে।
সরেজমিনে সাভারের আনন্দপুর সিটিলেন এলাকার স্বপনের দ্বিতল বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির প্রবেশ পথ বাঁশ দিয়ে বন্ধ করে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। বাইরে উৎসুক জনতা ভিড় করলেও ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত প্রায় ৮ ফুট মাটি খুঁড়ে মরদেহের হাড়গোড় উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ সুপার জানান, গেল বছরের ১৯ এপ্রিল সাভার থেকে নিখোঁজ হন তোফাজ্জল হোসেন টোনো। এই ঘটনায় তার পরিবার সাভার মডেল থানায় একটি মামলা করে। মামলাটি ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশ তদন্ত করে আসছিল। সম্প্রতি সীমা নিখোঁজের ঘটনায় মাদক চোরাকারবারী সাইফুলকে গ্রেপ্তারের পর স্বীকারোক্তিতে তিনি ১৪ মাস আগে নিখোঁজ তোফাজ্জল হোসেন টোনো হত্যাকাণ্ডের তথ্যও জানায়।
এসপি বলেন, 'ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ধামরাইয়ের কুল্লা থেকে মাদক চোরাকারবারি স্বপনকে গ্রেপ্তার করে। পরে তার মালিকানাধীন সাভারের সিটিলেন মহল্লায় দোতলা বাড়ির নিচতলার মেঝের মধ্যে মাটিচাপা দিয়ে পুতে রাখা টোনোর মরদেহের মাথার খুলি, হাড়সহ দেহাবশেষ উদ্ধার করা হয়।'
প্রাথমিকভাবে নিহতদের স্বজন টোনোর জামা থেকে দেহাবশেষ টোনের বলে নিশ্চিত করলেও ডিএনএ টেষ্টের পর বিস্তারিত জানা যাবে বলেও জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ১ঌ এপ্রিল বাসার পাশ থেকে নিখোঁজ হয় তোফাজ্জল। এ ঘটনায় গত বছরের ২১ এপ্রিল তারিখে নিখোঁজের বাবা সেলামত মিয়া বাদী হয়ে সাভার মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।
Comments