নির্বাচন কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিতের অভিযোগে সরকারি আইনজীবীর বিরুদ্ধে মামলা

বুধবার রাতে পালং মডেল থানায় আলমগীর মুন্সির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে
Shariatpur
স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

শরীয়তপুর সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে লাঞ্চিত করার অভিযোগে জজ কোর্টের সরকারি আইনজীবী আলমগীর মুন্সীর বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে।

গতকাল বুধবার রাতে পালং মডেল থানায় আলমগীর মুন্সির বিরুদ্ধে মামলা করেন নির্বাচন কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র দে।

থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মেজবাহ উদ্দীন আহাম্মেদ আজ দুপুরে দ্য ডেইলি স্টারকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র দে শরীয়তপুর জজ আদালতের আইনজীবী (জিপি) আলমগীর হোসেন মুন্সির বিরুদ্ধে

মামলা করেছেন। মামলায় তিনি উল্লেখ করেছেন, তার সঙ্গে জিপি দুর্ব্যবহার করেছেন এবং তাকে মারধর করতে উদ্যত হয়েছেন। আমরা তদন্ত শুরু করেছি, তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পালং মডেল থানা ও নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র দে, আগামী ২১ মে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া শরীয়তপুর সদর উপজেলা নির্বাচনে দায়িত্বরত প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের তালিকা ও ভোটকেন্দ্রের তথ্য সংক্রান্ত গোপনীয় নথি নিয়ে গত মঙ্গলবার রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সাইফুদ্দিন গিয়াসের কার্যালয়ে যান। এই সময় তিনি নথিপত্র নিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলছিলেন। তখন সেই কক্ষে প্রবেশ করেন আলমগীর মুন্সী। নির্বাচন কর্মকর্তা নথিগুলো সরিয়ে রাখলে এতে ক্ষুব্ধ হন আলমগীর মুন্সী।

অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, বুধবার বিকেলে নির্বাচন কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যাওয়ার পথে কার্যালয়ের সামনে আলমগীর মুন্সী তার গতিরোধ করে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন। এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সাইফুদ্দিন গিয়াস, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাইনউদ্দিন ও এনডিসি সোহেল রানা সেখানে আসেন। বিকাশ চন্দ্র বিষয়টি নিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলেন। তখন আলমগীর মুন্সী পুনরায় তাকে গালাগালি করে মারতে যান। জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা তখন দুই জনকে সরিয়ে দেন। পরে বিকাশ চন্দ্র রাতে বাদী হয়ে পালং মডেল থানায় মামলা করেন।

জানতে চাইলে সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র দে বলেন, নির্বাচন সংক্রান্ত কিছু গোপন নথি আলমগীর মুন্সী দেখতে চেয়েছিলেন। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য চাইলে আমরা সব ধরনের তথ্য যে কাউকে দিতে পারি না। তাছাড়া জিপি সাহেব একজন চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থক। তাই আমি ওই তথ্য দিতে রাজি না হলে তিনি আমার সাথে অশোভন আচরণ করেন।   আমাকে লাঞ্ছিত করেন। বিষয়টি আমি নির্বাচন কমিশন ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি। বুধবার রাতে বাদী হয়ে পালং মডেল থানায় মামলা করেছি।

আলমগীর হোসেন মুন্সির কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বক্তব্য দেবেন না বলে জানান।

তবে সকালে গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, 'আমার বিরুদ্ধে কেন মামলা করা হয়েছে তা বলতে পারব না।'

রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সাইফুদ্দিন গিয়াস বলেন, ঘটনাটি আমাদের সামনে ঘটেছে। এটা দুঃখজনক ও অনাকাঙ্ক্ষিত।  এই ঘটনায় মামলা হয়েছে। বিষয়টি আমরা গুরুত্ব দিয়ে দেখছি।

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবদুল মান্নান বলেন, আমরা বিষয়টি কমিশনকে জানিয়েছি। আইনি পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।

আগামী ২১ মে শরীয়তপুর সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।  সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে পাঁচ জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাদের একজন জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুজ্জামান উজ্জল ঘোড়া প্রতিকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। কামরুজ্জামানের পক্ষে নির্বাচনি কার্যক্রম পরিচালনা কমিটির দায়িত্ব পালন করছেন, শরীয়তপুর জজ কোর্টের সরকারি কৌশলী (জিপি) ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আলমগীর মুন্সী।

Comments