শিক্ষককে মারধর, মাদক দিয়ে ফাঁসানো চেষ্টার অভিযোগে ২ কনস্টেবল প্রত্যাহার

শিশু চুরি
স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

নাটোরের বাগাতিপাড়ায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষককে মারধর ও মাদক দিয়ে ফাঁসানো চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে দুই পুলিশ কনস্টেবলসহ তিন জনের বিরুদ্ধে।

এ ঘটনায় পুলিশ কনস্টেবল সজিব খান ও মো. আসাদুজ্জামানকে প্রত্যাহার করে নাটোর পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে বলে জানান জেলা পুলিশ সুপার মো. তারিকুল ইসলাম।

তিনি বলেন, 'শিক্ষককে হেনস্তার খবর পেয়ে ওই দুই পুলিশ সদস্যকে পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযোগ না দিলেও বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোনো অফিসার ছাড়া কনস্টেবল কাউকে তল্লাশি করা বা আটক করার কোনো বিধান নাই। যে যতটুকু দোষ করেছে সে ততটুকু শাস্তি অবশ্যই পাবে।'

ভুক্তভোগী শিক্ষক বাদল উদ্দিন বাগাতিপাড়া উপজেলার রহিমানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।

তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, গত রোববার স্কুল ছুটির পর মোটরসাইকেলে নাটোর শহরের বাসায় ফেরার পথে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ক্ষিদ্র মালঞ্চি এলাকায় পুলিশ কনস্টেবল সজিব খান ও মো. আসাদুজ্জামান এবং পুলিশের স্থানীয় সোর্স বিদ্যুৎ তার পথরোধ করে এলোপাতাড়ি পেটান। এসময় দৌড়ে পার্শ্ববর্তী কওমি মাদ্রাসায় আশ্রয় নিলে মাদ্রাসার শিক্ষকরা এগিয়ে এলে পুলিশের দুই সদস্য গিয়ে বলেন, "তোর কাছে মাদক আছে"। পরে তারা তল্লাশি করে তাদের কাছে থাকা দুটি কাগজ দেখিয়ে বলে এই যে দুই পুরিয়া হিরোইন পাওয়া গেছে।'

'এরপর দুই পুলিশ সদস্য আমাকে হাতকড়া পরিয়ে মোটরসাইকেলে তুলে থানায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলে পথে দুই হাজার টাকা দিলে ছেড়ে দেয়ার কথা বলেন। টাকা না থাকায় তাদের বিকাশ নাম্বার দিয়ে টাকা পাঠাতে বলে আমার পকেটে থাকা ৪০০ নিয়ে আমাকে ছেড়ে দেন। পরে তারা বেশ কয়েকবার টাকার জন্য ফোন করলেও আমি টাকা দেইনি। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় নাটোর সদর হাসপাতালে ভর্তি হই,' বলছিলেন বাদল উদ্দিন।

বাদল উদ্দিন বলেন, তার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মনির উদ্দিনের সঙ্গে দ্বন্দ্ব আছে। সেকারণেও এই হামলা হয়ে থাকতে পারে।

অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবল মো. আসাদুজ্জামান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'একটা ইনফরমেশন ছিল তাই আমরা এসে জিজ্ঞাসাবাদ করছিলাম। এরমধ্যেই বিদ্যুৎ এসে মারধর শুরু করেন। ওই সময় ওই শিক্ষকের কাছে থেকে কাগজ বের করে বলল হিরোইন পাওয়া গেছে। আসলে কাগজ ছিল নাকি মাদক ছিল তা জানি না। পরে কিছুদূর নিয়ে যাওয়া পর আরও দুই জন শিক্ষক বাদলকে ছেড়ে দিতে বললে আমরা ছেড়ে দিয়ে চলে আসি। আর ওই কাগজ ওসি স্যারের হাতে দিয়ে দিয়েছি।'

রহিমানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মনির উদ্দিন বলেন, বাদল কেন তার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করছেন সেটা তিনি জানেন না। তবে বিষয় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে কিনা জানতে চাইলে মতিন বলেন, তিনি কাউকে কিছু জানাননি।

বাগাতিপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নান্নু খান বলেন, মাদকের ইনফরমেশন পেয়ে দুই পুলিশ কনস্টেবল একজন শিক্ষককে জিজ্ঞাসাবাদ করছিল। এসময় সংবাদদাতা (সোর্স) ওই শিক্ষককে মারধর করতে থাকেন। পরে তার কাছ থেকে দুই পুরিয়া হিরোইন পাওয়া গেছে বলে দাবি ওই দুই কনস্টেবলের। পরে আসামিকে ছেড়ে দিয়ে আসে।

ওই দুই পুলিশ কনস্টেবল কাউকে না জানিয়ে শিক্ষকের সঙ্গে এসব ঘটিয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। পুলিশ সদস্যরা কেন কীভাবে সেখানে গেল এসব খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশ কনস্টেবল সজিব থানায় একটা পুরিয়া জমা দিয়েছে। তাতে হেরোইন আছে কিনা সেসব পরীক্ষা করে জানা যাবে, বলেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Dhaka summons Indian envoy, hands him protest letter

The foreign ministry summoned Indian High Commissioner in Bangladesh Pranay Verma and handed a protest note yesterday, a day after the Bangladesh Assistant High Commission in Agartala came under an attack during a protest by the Hindu Sangharsh Samity.

1h ago