‘জানি না আমার বোন বেঁচে আছে, নাকি মারা গেছে’

বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন
নাতাশা জেসমিন। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর ওয়ারীর একাডেমিয়া স্কুলের শিক্ষক নাতাশা জেসমিন গতকাল সন্ধ্যা ৭টার দিকে ফরিদপুরে তার বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে ঢাকাগামী ট্রেনে ওঠেন।

স্বামীর সঙ্গে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে ওঠার পর নাতাশা তার মাকে ফোন করে জানান, ঢাকায় ফিরছেন তিনি।

তবে গতরাতে ঢাকার গোপীবাগে ট্রেনে আগুন দেওয়ার পর নাতাশা আর বাড়ি ফেরেননি।

রাতভর পুড়ে যাওয়া ট্রেনের বগি এবং স্থানীয় হাসপাতালে খুঁজে না পেয়ে নাতাশার ছোট বোন শাহিন নাসরিন ও খুশবু আজ সকালে রেললাইনে বোনকে খুঁজতে আসেন। কিন্তু সেখানও বোনের খোঁজ মেলেনি।

মনে হচ্ছে কোথাও নাতাশার কোনো খোঁজ নেই।

'আমি আমার বোনকে খুঁজে পাচ্ছি না। আমি জানি না সে বেঁচে আছে নাকি মারা গেছে। আমি কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করছি তারা যে লাশগুলো পেয়েছে সেগুলোর দ্রুত ডিএনএ পরীক্ষা করা হোক,' শাহিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রাখা চারটি পুড়ে যাওয়া মরদেহ এখনো শনাক্ত করা যায়নি।

নাতাশার স্বামী আসিফ খান গুরুতর দগ্ধ হয়ে শেখ হাসিনা জাতীয়  বার্ন ইনস্টিটিউটে  ভর্তি আছেন।

আগুনের ঘটনার সময় তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন। এরপর থেকে তিনি আর স্ত্রীকে দেখেননি।

শাহীন আক্ষেপ করে বলেন, 'ট্রেনে আগুন দেওয়ার পর থেকে আমার বোন নিখোঁজ এবং আমার কেউ জানি না সে কোথায় আছে।'

শুক্রবার রাত ৯টার দিকে ঢাকার বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় চার জন নিহত ও অনেকে আহত হয়েছেন।

'জ্বলন্ত মানুষ দেখেছি, ঘুমাতে পারিনি'

এদিকে, আজ সকাল থেকে গোপীবাগে রেললাইনের কাছে স্থানীয়রা ভিড় করছেন। ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ ও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন।

গত রাতে জ্বলন্ত ট্রেন দেখে অনেকেই বাড়ি থেকে পানি নিয়ে ছুটে আসেন।

ঘটনাস্থলে গিয়ে এই সংবাদদাতা রেললাইনের পাশে পোড়া কাপড়, জুতা এবং অন্যান্য জিনিসপত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতে দেখেন।

জরিনা বেগমের (৪৫) বাসা ট্রেনটি যেখানে থামে তার ঠিক সামনেই। ঘটনার পর থেকে তিনি ঘটনাস্থলের সামনেই দাঁড়িয়ে আছেন।

তিনি তার বেদনাদায়ক অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন।

'গত রাতে আগুন নেভানোর জন্য বাসায় যে পানি ছিল তা নিয়েই ছুটে গেছি। চোখের সামনে জলন্ত মানুষ দেখেছি। ঘুমাতে পারিনি।'

শামীম হোসেন নামে আরেক ব্যক্তি জানান, তিনি ছয় জনকে পোড়া বগি থেকে বাঁচাতে সাহায্য করেছেন।

তিনি বলেন, অনেক যাত্রী জানালা খুলতে জানেন না এবং ঠান্ডার কারণে অনেক জানালা বন্ধ ছিল, যার ফলে যাত্রীদের সরিয়ে নিতে দেরি হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

Public gatherings banned in key Dhaka areas from tomorrow: ISPR

Restrictions imposed to maintain order near Chief Adviser’s Office, military zones

1h ago