বরগুনায় শিকলে বেঁধে নির্যাতনে ইটভাটার শ্রমিকের মৃত্যু
বরগুনার আমতলী উপজেলার কালিবাড়ি গ্রামে একটি ইটভাটায় শিকলে বেঁধে সর্দারের নির্যাতনে এক শ্রমিকে মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। দাদনের ৪০ হাজার টাকা আদায়ে বৃহস্পতিবার রাতে তার ওপর নির্যাতন চালানো হয়। আজ রোববার সকাল ১১টায় তার মৃত্যু হয়।
নির্যাতনে মারা যাওয়া ওই শ্রমিকের নাম আনিছ গাজী (৫০)। আজ সন্ধ্যায় পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।
আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী শাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, আইএসএসবি ইটভাটার শ্রমিক আনিছেন মৃত্যুর খবর পেয়ে আমতলী থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তার মরদেহ উদ্ধার করে। এ বাপারে এখনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, কালিবাড়ি গ্রামের ইসলাম এন্ড সন্স ইটভাটায় কাজ করতেন পাশের ডালাচারা গ্রামের আনিছ। দুই মাস আগে তিনি ভাটার সর্দার ছালাম চৌকিদারের কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা দাদন নেন। আট দিন আগে আনিছ তার নিজের বাড়ি চলে যান। তিনি কাজে ফিরে না আসায় বৃহস্পতিবার রাতে সর্দার ছালাম চৌকিদার আনিছকে বাড়ি থেকে ধরে এনে ভাটার থাকার ঘরে শিকল দিয়ে বেঁধে রেখে নির্যাতন করেন।
ইটভাটার সর্দারের নির্যাতনে আনিছের মৃত্যু হয়েছে দাবি করে স্ত্রী ফিরোজা বেগম বলেন, আমার স্বামীকে সর্দার ছালাম ও তার সহযোগী খালেক ধরে এনে পায়ে শিকল দিয়ে রেঁধে শারীরিক নির্যাতন করে হত্যা করেন।
নির্যাতনে আনিছের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পরার পর ওই ভাটার অন্য সব শ্রমিক পালিয়ে গেছে বলে জানান স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা। তারা জানান, বর্তমানে ভাটার কাজ বন্ধ রয়েছে।
নির্যাতনে শ্রমিকের মৃত্যুর খবর পেয়ে বরগুনার পুলিশ সুপার মো. আব্দুস ছালাম, আমতলী-তালতলী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. রুহুল আমিন ও আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী শাখাওয়াত হোসেন তপু ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
ভাটার মালিক মো. ফারুক গাজী বলেন, সর্দার কাকে দাদন দিয়েছেন আমি জানি না। আনিছের মৃত্যুর বিষয়ে তিনি বলেন, শুনেছি অসুস্থ হয়ে একজন শ্রমিক মারা গেছেন।
বরগুনার পুলিশ সুপার মো. আব্দুস ছালাম বলেন, তদন্ত চলছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Comments