কাশিমপুর থেকে কুমিল্লা কারাগারে ‘বিশেষ নজরে’ পাপিয়া
গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে হাজতিকে মারধর ও নির্যাতনের অভিযোগে কারাবন্দি বহিষ্কৃত মহিলা যুবলীগ নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়াকে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তর করা হয়েছে। সেখানে পাপিয়াকে বিশেষ নজরদারিতে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে কারাগার কর্তৃপক্ষ।
সোমবার বিকেল ৫টায় গাজীপুরের কাশিমপুর থেকে একটি প্রিজনভ্যানে করে তাকে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে উদ্দেশে পাঠানো হয়।
কাশিমপুর কারাগারের জেল সুপার ওবায়দুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, হাজতি নির্যাতনের অভিযোগের ঘটনায় কাশিমপুর কারাগারের জেলার ফারহানা আক্তার, ডেপুটি জেলার জান্নাতুল তায়েবা ও মেট্রন হাবিলদার ফাতেমাকে শোকজ করা হয়েছে।
কুমিল্লা কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার আব্দুল্লা আল মামুন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'যেহেতু তার আচরণে সমস্যা ছিল, বন্দিদের মারধর করতো, তাই এখানে যেন ওই ধরনের কোনো ঘটনা না ঘটাতে পারে, সে জন্য পাপিয়ার প্রতি বিশেষ নজর রাখা হয়েছে।'
'গাজীপুরে যেমন তাকে রাইটার হিসেবে একটা দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, কুমিল্লায় তাকে কোনো বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়নি।'
আব্দুল্লা আল মামুন আরও জানান, কুমিল্লায় নারীদের জন্য বিশেষায়িত কোনো কারাগার নেই, শুধু ছোট ছোট দুটো কক্ষ আছে। যার প্রত্যেকটিতে ৪০-৫০ জন করে আসামি থাকেন। পাপিয়াকে সেখানে সাধারণ আসামিদের সঙ্গে রাখা হয়েছে। তার জন্য বিশেষ কোনো ব্যবস্থাও নেই।
মারধরের শিকার রুনা লায়লা এখন গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে ভর্তি রয়েছেন।
অভিযোগকারী রুনা লায়লার ভাই আবদুল করিম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সোমবার রাত ৯টার দিকে সেই ভয়ঙ্কর পাপিয়াকে গাজীপুর কাশিমপুর কারাগার থেকে কুমিল্লা কারাগারে পাঠানোর খবর শুনেছি। এটা আমাদের পরিবারের জন্য কোনো ভালো সংবাদ নয়। এটা কাশিমপুর কারাগারে বন্দিদের জন্য ভালো খবর।'
আবদুল করিম বলেন, 'আমি ডিসি স্যারের কাছে আমার বোনকে নির্যাতনের বিচার চেয়েছি। আমি বিচার পাইনি। পাপিয়া আমার বোনের জীবনটা নষ্ট করে ফেলেছে। গতকাল থেকে আমার বোন কাওকে দেখলেই ভয় পেয়ে যায়। আগে আমার বোনের শ্বাসকষ্ট ছিল না। এখন শ্বাস কষ্ট হচ্ছে। হাসপাতালের ডাক্তার বলছে, পরীক্ষার কিছু রিপোর্ট ভালো নয়। ডাক্তার আমাদের বলেছে, আমার বোনের আরও কী কী সমস্যা যেন হইছে।'
কাশিমপুর কারাগারের জেল সুপার ওবায়দুর রহমান বলেন, 'ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষের নির্দেশে তাকে কুমিল্লা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ২৭ বছরের সাজাপ্রাপ্ত কয়েদি হিসেবে জেল বিধি অনুযায়ী পাপিয়াকে রাইটার হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। পাপিয়া কারাগারের ভেতর রুনা লায়লা নামে এক হাজতিকে নির্যাতন করে। এমন অভিযোগে গাজীপুরের জেলা প্রশাসকের লিখিত অভিযোগ করেন রুনা লায়লার ভাই আব্দুল করিম। এ ঘটনায় সোমবার বিকেল ৫টায় একটি প্রিজন ভ্যানে পাপিয়াকে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।'
গত রোববার দুপুর ১টায় গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মুমূর্ষু অবস্থায় বিছানায় কাতরাতে দেখা গেছে রুনা লায়লা নামের ওই নারীকে। রোগীর অবস্থা ভালো মনে হচ্ছে না বলে জানান, তার সঙ্গে হাসপাতালে থাকা বোন রওশন আরা।
Comments