এস আলম গ্রুপের জাহাজ থেকে অপরিশোধিত ভোজ্যতেল ‘চুরি’, গ্রেপ্তার ৪

অভিযোগ রয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে অবস্থানরত মাদার ভেসেল থেকে কর্ণফুলী নদী হয়ে অপরিশোধিত ভোজ্যতেল পাচার করে আসছে কয়েকটি চক্র।
এমভি ওশান ভিউ। এই জাহাজের মাধ্যমে এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন একটি জাহাজ থেকে অপরিশোধিত ভোজ্যতেল চুরি করা হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীতে এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন একটি জাহাজ থেকে অপরিশোধিত ভোজ্যতেল চুরির অভিযোগে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে নৌ পুলিশ। মামলার আলামত হিসেবে জব্দ করা হয়েছে এস আলম গ্রুপের জাহাজসহ মোট ২টি জাহাজ।

আজ রোববার ভোররাতে কর্ণফুলী নদীর ডায়মন্ড সিমেন্ট ঘাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয় মো. রায়হান (২৩), মো. বুলবুল আহমাদ (২৫), মো. আব্দুল হক (৪২) ও মো. ওয়াহিদুর নবীকে (৪২)। এ সময় 'চুরি করা' ১ হাজার ২০০ লিটার অপরিশোধিত ভোজ্যতেল জব্দ করা হয়।

এ ঘটনায় আজ দুপুরে এস আলম গ্রুপ বাদী হয়ে ৪ জনকে আসামি করে কর্ণফুলী থানায় মামলা করেছে।

নৌ পুলিশের সদরঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আকরাম উল্লাহ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন তেলের ট্যাংকার এমটি বুলবুল ডায়মন্ড সিমেন্ট ঘাটের কাছে কর্ণফুলী নদীতে নোঙর করেছিল। আজ ভোররাত ১২টার দিকে তেল পাচারকারীরা লাইটার জাহাজ এমভি ওশান ভিউ নিয়ে সেখানে যায় এবং তেলবাহী জাহাজ এমটি বুলবুলের কর্মীদের সহায়তায় তেল সরিয়ে নিতে থাকে।'

তিনি আরও বলেন, 'এমভি ওশান ভিউয়ে অভিযান চালিয়ে ২ জনকে আটক করা হয়। পরে জাহাজের সামনের পানির ট্যাঙ্কে তল্লাশি চালিয়ে ১ হাজার ২০০ লিটার অপরিশোধিত ভোজ্যতেল পাওয়া যায়। আটককৃত ২ জনের তথ্যের ভিত্তিতে কর্ণফুলী নদীর তীরবর্তী এলাকা থেকে আরও ২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।'

'তেল পাচারে জাহাজের মাস্টার-শুকানী জড়িত না থাকলে এভাবে পাচার করা সম্ভব নয়। এ ঘটনায় মামলার আলামত হিসেবে এস আলম গ্রুপের জাহাজ ওটি বুলবুল এবং লাইটার জাহাজ এমভি ওশান ভিউ জব্দ করা হয়েছে। জাহাজের বিষয়ে আদালতের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে,' যোগ করেন তিনি।

অভিযোগ রয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে অবস্থানরত মাদার ভেসেল থেকে কর্ণফুলী নদী হয়ে অপরিশোধিত ভোজ্যতেল পাচার করে আসছে কয়েকটি চক্র।

পুলিশ বলছে, বিভিন্ন গ্রুপের আমদানিকৃত হাজারো টন তেল নিয়ে আসা মাদার ভেসেল থেকে জাহাজের কর্মীদের সহায়তায় এই তেল চুরি হয়।

পুলিশ ও তদন্তকারীরা জানান, অপরিশোধিত ভোজ্যতেল পরবর্তীতে চাক্তাই, খাতুনগঞ্জ ও চট্টগ্রামের অন্যান্য এলাকায় খোলা বাজারে বিক্রি করা হয়। রাস্তার পাশের হোটেল-রেস্তোরাঁ এবং নিম্ন আয়ের মানুষ এই তেলের প্রধান ক্রেতা, যা স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলছে।

Comments