ঘুষের টাকা ফেরত চেয়ে থানায় অভিযোগ পরাজিত প্রার্থীর
বগুড়ার ধুনট উপজেলায় ৬ লাখ টাকা ঘুষ নিয়েও একটি স্কুলের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতিপ্রার্থীকে ভোট না দেওয়া এবং পরবর্তীতে সেই টাকা ফেরত না দেওয়ায় এক শিক্ষক প্রতিনিধির বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছেন পরাজিত প্রার্থী।
পরাজিত সেই প্রার্থী হলেন উপজেলার এলাঙ্গী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও একই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি এমএ তারেক হেলাল। গতকাল রোববার রাতে ধুনট থানায় এলাঙ্গী উচ্চবিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির নবনির্বাচিত শিক্ষক প্রতিনিধি আব্দুল হান্নানের (৩৫) বিরুদ্ধে তিনি অভিযোগ করেন।
অভিযোগপত্র থেকে জানা যায়, গত ২০ মার্চ এলাঙ্গী উচ্চবিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে সদস্য পদে নির্বাচিত হন ৮ জন। তাদের মধ্যে শিক্ষক প্রতিনিধি পদে ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কামাল পাশা, আব্দুল হান্নান ও রুনা লায়লা নির্বাচিত হন। ওই ৮ সদস্যদের ভোটে গত ২৫ মার্চ কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হন এলাঙ্গী ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হক। একই পদে প্রার্থী ছিলেন তারেক হেলাল।
অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, শিক্ষক প্রতিনিধি আব্দুল হান্নান নিজেরসহ আরও ২ সদস্যের ভোট তারেক হেলালকে দেবেন বলে গত ২৪ মার্চ সন্ধ্যায় কয়েকজন সাক্ষীর সামনে ৬ লাখ টাকা নেন। কিন্তু ভোটের পরে দেখা যায়, টাকা নেওয়ার পরেও ওই ৩ শিক্ষক তারেককে ভোট দেননি।
তারেক হেলাল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, '২টি প্যানেল থেকে ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য নির্বাচিত হয়েছে। আমার প্যানেল থেকে কম নির্বাচিত হয়েছে। পরে জানতে পারি অন্য প্যানেলের নির্বাচিত সদস্যরাও আমাকে ভোট দেবে সভাপতি নির্বাচিত করার জন্য। কিন্তু এর জন্য টাকা লাগবে। সর্বশেষ দরকষাকষির পর আমি আব্দুল হান্নানকে তিনিসহ আরও ২ সদস্যের ভোটের জন্য ৬ লাখ টাকা দেই। কিন্তু তারা আমাকে ভোট না দিয়ে প্রতারণা করেছেন। পরে টাকা ফেরত চাইলে তা দিতে অস্বীকৃতি জানান। তাই আমি থানায় অভিযোগ করেছি।'
ঘুষ দেওয়াও তো অপরাধ। স্কুলের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি হওয়ার জন্য কেন ঘুষ দিলেন? জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'এখন তো শুধু নির্বাচনে দাঁড়িয়ে পোস্টার ছাপালেই হয় না। এটা তাদের চাওয়া ছিল, তাই দিয়েছি।'
অভিযোগ বিষয়ে জানতে আব্দুল হান্নানের নম্বরে ফোন করলে তিনি বলেন, 'এটা রং নম্বর।'
ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গতকাল রাতে তারেক হেলাল অভিযোগ করেছেন। আমরা তাকে সাক্ষী-প্রমাণ নিয়ে থানায় আসতে বলেছি। তিনি এখনো থানায় আসেননি। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
ঘুষ দেওয়া ও নেওয়া, দুটোই সমান অপরাধ। সেক্ষেত্রে উভয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না, জানতে চাইলে ওসি বলেন, 'আমি যতদূর জেনেছি, ওই স্কুলের ব্যবস্থাপনা কমিটি নিয়ে ২ পক্ষের বিরোধ আছে। তাই অভিযোগটি সত্য কি না, আগে সেটা জানতে হবে। তারপরে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
Comments