তনু হত্যার ৭ বছর

‘একদিন রহস্য উন্মোচন করবে পিবিআই’

সোহাগী জাহান তনু। ছবি: সংগৃহীত

সোহাগী জাহান তনু হত্যার ৭ বছর পার হলো। কিন্তু আজ পর্যন্তও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী কোনো বাহিনীই তনু হত্যাকাণ্ড তদন্তের কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি করতে পারেনি। হত্যাকাণ্ডের পর এ পর্যন্ত ৪টি সংস্থা এই মামলা তদন্ত করলেও গ্রেপ্তার হয়নি ১ জনও।

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের শিক্ষার্থী থিয়েটার কর্মী তনুকে সেনানিবাসের মতো স্পর্শকাতর স্থানে ২০১৬ সালের ২০ মার্চ রাতে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়।

এ ঘটনায় সারা দেশে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ শুরু হয়। তনুর ২ বার ময়নাতদন্ত করা হলেও মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত করতে পারেনি কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকরা।

ঘটনার পর প্রথমে নাজিরাবাজার পুলিশ ফাঁড়ি এবং গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) মামলার তদন্ত করে। ২০১৬ সালের মে মাসে অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) কর্মকর্তারা ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত করেন যে হত্যার আগে তাকে ৩ জন পুরুষ ধর্ষণ করেছিলেন।

তৎকালীন তদন্তকারী সংস্থা জানায়, তনুর পোশাকে ৩ জন পুরুষের স্পার্ম পাওয়া গিয়েছিল, যা সন্দেহভাজনদের সঙ্গে ক্রসম্যাচ করেনি।

ওই সময়ে সিআইডি কর্মকর্তারা বেশ কয়েকজন সেনাকর্মকর্তাসহ প্রায় ২০০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন বলে দাবি করেন। কিন্তু তারা হত্যার রহস্য উদঘাটন করতে পারেননি।

২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তনু হত্যা মামলার তদন্তের দায়িত্ব পায়।

তনুর মা আনোয়ার বেগম জানান, 'দীর্ঘদিন যাবত পিবিআই থেকে কোনো যোগাযোগ করেনি। সর্বশেষ ২০২০ সালে তনুর মরদেহ উদ্ধার স্থান পরিদর্শনে এসে তনুর বাবা ইয়ার হোসেন ও ছোট ভাই আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে পিবিআইয়ের কর্মকর্তারা কথা বলেছিলেন।'

তিনি বলেন, 'আমার মেয়ে হত্যার বিচারের আশা দিন দিন মলিন হয়ে যাচ্ছে। আমরা দুজনেই (তনুর মা ও বাবা) অসুস্থ হয়ে পড়ছি। বেঁচে থাকতে আমার নিষ্পাপ মেয়েকে হত্যার বিচার দেখতে পাবো কি না, জানি না।'

তনু হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক মো. মজিবুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মামলার বিষয়ে যেকোনো তথ্য জানাতে সিনিয়র কর্মকর্তারা মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলবেন। আমি এ বিষয়ে কিছু বলতে পারবো না।'

মামলাটির অগ্রগতির বিষয়ে জানতে চাইলে পিবিআই প্রধান বনজ কুমার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পিবিআই টিম চাঞ্চল্যকর এই মামলায় যথাসাধ্য তদন্ত করছে। পিবিআই একদিন এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।'

 

Comments