ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আইনজীবীদের আদালত বর্জনের ষষ্ঠ দিন, বিপাকে বিচারপ্রার্থীরা

বর্জন কর্মসূচিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতের চিত্র। ছবি: মাসুক হৃদয়/স্টার

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আইনজীবী সমিতির টানা আদালত বর্জন কর্মসূচির কারণে বিচারপ্রার্থীরা চরম বিপাকে পড়েছেন।

গত সপ্তাহের বুধবার থেকে আজ বুধবার পর্যন্ত টানা ৬ কার্যদিবস আদালতে বিচারিক কার্যক্রম বন্ধ আছে। এতে প্রতিদিন অন্তত ১০ হাজারের বেশি বিচারপ্রার্থী সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার ভাদুঘর গ্রামের বাসিন্দা সোহেল মিয়া একটি বেসরকারি চাকুরির সুবাদে নরসিংদীতে থাকেন। কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের পাশে নিজেদের একটি জমি নিয়ে আদালতে চলমান দেওয়ানি মামলা রায়ের অপেক্ষায় আছেন তিনি। গত ২ দিন ধরে তিনি নরসিংদী থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া এসে আদালত চত্ত্বরে ঘোরাফেরা করছেন।

সোহেল মিয়া বলেন, 'কয়েকদিন ধরে আদালতের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় আমাদের মামলাটির কোন সুরাহা হচ্ছে না। কবে নাগাদ কার্যক্রম শুরু হবে তাও বুঝতে পারছি না।'

আখাউড়া উপজেলার তন্তর গ্রামের বাসিন্দা আল মাহমুদ ভূঁইয়া রতন জানান, বিরোধপূর্ণ একটি জায়গা নিয়ে এই আদালতে একটি দেওয়ানি মামলা দায়ের করে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ জারি করানো দরকার তার। কিন্তু আদালত বর্জনের সিদ্ধান্তে আইনজীবীরা অটল থাকায় তিনি মামলা দায়ের করতে পারছেন না।

বিজয়নগর উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের মাধবেরবাগ গ্রামের বাসিন্দা নুরুল ইসলাম বলেন, 'আমার ছেলেকে একটি মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। গত সপ্তাহের বুধবার তার জামিন শুনানি হওয়ার কথা ছিল। এরপর আরও এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও তার জামিন শুনানি হচ্ছে না।'

শীতকালীন ছুটির আগে আদালতের শেষ কার্যদিবস ছিল গত ১ ডিসেম্বর। ওই দিন ৩টি মামলা না নেওয়ায় ১ জানুয়ারি থেকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মোহাম্মদ ফারুকের আদালত বর্জন করেন আইনজীবীরা।

এরপর ২ জানুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর এজলাস চলাকালে বিচারক মোহাম্মদ ফারুকের সঙ্গে আইনজীবীদের বাদানুবাদের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ৪ জানুয়ারি জেলা বিচার বিভাগীয় কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশন আদালতের সব এজলাসের দরজা ও প্রধান ফটকে তালা দিয়ে এক দিনের কর্মবিরতি পালন করে।

এর প্রতিবাদে ৫ জানুয়ারি আইনজীবীরা সাধারণ সভা করে ৩ কার্যদিবসের কর্মবিরতির ডাক দেন। পরে এটি বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বাড়ানো হয়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি তানভীর ভূইয়া দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'জেলা জজ শারমিন নিগার, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ ফারুককে অপসারণ এবং আদালতের নাজির মোমিনুল ইসলাম চৌধুরীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত বর্জন কর্মসূচি চলমান থাকবে।'

 

Comments

The Daily Star  | English
August 5 declared as July Mass Uprising Day

Govt declares 3 new days for nat’l observance

The interim government yesterday declared August 5 as “July Mass Uprising Day” to commemorate the student-led protests that toppled the Sheikh Hasina regime that day last year.

1h ago