নরসিংদী: ৪ দিনেও উদ্ধার হয়নি আনসারের লুট হওয়া অস্ত্র
নরসিংদীর বড় বাজার এলাকার আনাসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ২ সদস্যের কাছ থেকে ২টি শটগান ও ১০ রাউন্ড গুলি লুট হওয়ার ৪ দিন পেরিয়ে গেলেও এ ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। লুট হওয়া অস্ত্র ও গুলিও উদ্ধার হয়নি।
পুলিশের ভাষ্য, রাতের অন্ধকারে অস্ত্র ও গুলি লুট হওয়ার সময় অপরাধীদের প্রায় সবার মুখ কাপড় ও মাস্ক দিয়ে ঢাকা ছিল। তাই তাদের শনাক্ত করার বিষয়টি কঠিন হয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সামসুল আরেফিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এই কাজে অংশ নেওয়া ১৮-২০ জনের মধ্যে একজনের মুখে কোনো কাপড় কিংবা মাস্ক ছিল না। আমরা তার পরিচয় উদঘাটনের চেষ্টা করছি। এ ব্যাপারে বেশ অগ্রগতি হয়েছে। তবে তদন্তের স্বার্থে কিছু বিষয় গোপন রাখা হচ্ছে।'
নরসিংদী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কাশেম ভূঁইয়াও বলেন, 'অস্ত্র ও গুলি উদ্ধারের পাশাপাশি এর সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশ সাধ্যমতো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।'
গত সোমবার রাতে নরসিংদী বড় বাজারের আনসার ক্যাম্পের ফাঁড়িতে ৪ জন দায়িত্বে ছিলেন। তারা হলেন- মো. আনারুল হক, জাফর ইকবাল, রাশেদ হোসেন ও আতিক হোসেন। ওই দিন রাত দেড়টার দিকে ১৫-১৮ জনের একটি দল হাড়িয়াধোয়া নদীর পাশে টহলরত আনসার সদস্যদের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে ২ টি শট গান ও ১০ রাউন্ড গুলি ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়।
ঘটনার পরের দিন মঙ্গলবার বিকালে নরসিংদী সদর উপজেলা আনসার কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) লুৎফরনেসা লতিফা বাদী হয়ে অজ্ঞাত ১৬-১৭ জনকে আসামি করে নরসিংদী সদর থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, সোমবার দিবাগত রাতে বাজার এলাকায় টহলে ছিলেন আনারুল, জাফর, রাশেদ ও আতিক নামের ৪ আনসার সদস্য। রাত দেড়টার দিকে ১৫-১৮ জন দুর্বৃত্ত একাধিক রামদাসহ ধারালো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তাদের ঘিরে ধরে। রাশেদ ও আতিক নামের ২ আনসার সদস্য এ সময় পালিয়ে গিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে খবর দেন। পরে দুর্বৃত্তরা আনারুল ও জাফরকে দড়ি দিয়ে বেঁধে ১০ রাউন্ড গুলিসহ ২টি শটগান ছিনিয়ে নেয়। পরে দড়ি দিয়ে বাঁধা অবস্থায় তাদের ফেলে রেখে নদীর পাড় ধরে হেঁটে চলে যায়। খবর পেয়ে রাত ২টার পর জেলা আনসার ক্যাম্প থেকে সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে তাদের উদ্ধার করেন।
এ ঘটনার ২ মিনিট ৩৬ সেকেন্ডের একটি সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছে দ্য ডেইলি স্টার। ওই ফুটেজে দেখা যায় যে, ধারালো অস্ত্র হাতে থাকা দুর্বৃত্তদের প্রায় সবার মুখ মাস্ক, কানটুপি ও কাপড়ে ঢাকা।
এ ঘটনার পর একই রাতে ৩টার দিকে সদর উপজেলার করিমপুর ইউনিয়নের পঞ্চবটি এলাকায় ২০টি দোকানে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। পুলিশের ধারণা, অস্ত্র লুটের সঙ্গে জড়িতরা এই ডাকাতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকতে পারে।
নরসিংদী জেলা আনসারের সহকারী জেলা কমান্ডেন্ট মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন সেলিম জানান, যাদের কাছ থেকে অস্ত্র লুট হয়েছে, সেই ২ আনসার সদস্যকে জেলা অফিসে সংযুক্ত করা হয়েছে। এ ঘটনার বিভাগীয় তদন্ত চলছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ ঘটনার ছায়াতদন্ত চালাচ্ছেন র্যাব-১১, জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি), অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) কর্মকর্তারা। তারা এরই মধ্যে বাজার এলাকা থেকে সংগ্রহ করা কয়েকটি সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করেছেন।
Comments