১৩ লাখ পিস ইয়াবা উদ্ধার মামলা: ৫ বছর পর ‘পলাতক’ ইউপি সদস্য গ্রেপ্তার
২০১৮ সালের ৩ মে চট্টগ্রাম মহানগরীর হালিশহরের একটি বাসা থেকে ১৩ লাখ পিস ইয়াবা উদ্ধারের ঘটনায় করা মামলায় গত বছরের ২৭ অক্টোবর ১২ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দেয় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
পূর্ণাঙ্গ নাম-ঠিকানা না পাওয়ায় দুই রোহিঙ্গাসহ ৪ জনের নাম চার্জশিট থেকে বাদ দেয় সিআইডি।
পরে মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআইতে) নির্দেশ দেয় আদালত।
ওই মামলায় প্রায় ৫ বছর পলাতক থাকা চার্জশিটভুক্ত এক ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে চট্টগ্রাম পিবিআই মেট্রো ইউনিট।
আজ রোববার নগরীর লালদীঘি এলাকা থেকে ইউপি সদস্য মো. আনোয়ারকে (৫৫) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিনি আনোয়ারা উপজেলার বরুমচড়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য।
পিবিআইয়ের (মেট্রো) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জুনায়েদ কাউসার দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, 'চট্টগ্রামের হালিশহর থানার শ্যামলী আবাসিক এলাকার আশরাফ আলী ২০১৮ সালের ৭ এপ্রিল শাহজালাল বিমানবন্দর হয়ে মিয়ানমার যান। পরে সেখান থেকে বোট চালিয়ে মিয়ানমার থেকে সাগর পথে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে নিয়ে আসেন ১৩ লাখ ইয়াবার চালান। পরবর্তীতে চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ তাকে ও তার ভাই হাসানকে গ্রেপ্তার করে।'
তিনি জানান, মামলার তদন্ত চলাকালে চট্টগ্রামের রিয়াজউদ্দিন বাজারের ব্যবসায়ী জুবায়ের ওরফে রেদোয়ান, রাশেদ মুন্নাসহ আরও কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। একই মামলায় কক্সবাজারে 'বন্দুকযুদ্ধে' নিহত সাইফুল করিমের সংশ্লিষ্টতাও মেলে।
পরে ২০১৮ সালের ১২ ডিসেম্বর ডিবি মামলার চার্জশিট দেয় এবং ওই চার্জশিটে ইউপি সদস্য আনোয়ারের নাম ছিল বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জুনায়েদ।
তিনি বলেন, 'আদালতের নির্দেশে মামলাটি পরে সিআইডিতে পাঠানো হয়। সিআইডি মোট ১২ জনকে আসামি করে এবং নাম-ঠিকানা না পাওয়ায় আগের চার্জশিটের ৪ জনকে বাদ দিয়ে অভিযোগপত্র জমা দেয়। এতেও ওই ইউপি সদস্যের নাম ছিল।'
'কিন্তু ওই চার্জশিটে সন্তুষ্ট না হওয়ায় আদালত আবার পিবিআইকে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেয়,' বলেন তিনি।
তিনি বলেন, 'আসামি আনোয়ার চার্জশিটভুক্ত আসামি হলেও দীর্ঘদিন তিনি স্থানীয় পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে গ্রেপ্তার এড়িয়েছেন। এর মধ্যেই তিনি ইউপি মেম্বার হিসেবে নির্বাচন করেন।'
আসামি আনোয়ারকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে আসামি আশরাফ বলেন, 'এই ইয়াবা কক্সবাজারের সাইফুল করিম ও চট্টগ্রামের রিয়াজউদ্দিন বাজারের ব্যবসায়ী জুবায়ের ওরফে রেদোয়ানের জন্য আনা হয়েছিল। ইয়াঙ্গুন থেকে রোহিঙ্গা মাদক চোরাকারবারি আবদুর রহিম ও লা-মিম তাদের জন্য ইয়াবার চালানটি পাঠান।
সাইফুল পুলিশের সঙ্গে 'বন্দুকযুদ্ধে' ২০১৯ সালের ১০ জুন নিহত হন।
Comments