ঘন কুয়াশায় নষ্ট হচ্ছে বোরো ধানের বীজতলা
ঘন কুয়াশায় গাজীপুরে বোরো ধানের বীজতলা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
কৃষকরা জানিয়েছেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, সার-কীটনাশকের দাম বৃদ্ধি, বিদ্যুতের অসহনীয় বিল, উৎপাদিত ধানে লোকসানে এমনিতে বেহাল অবস্থা, এর মধ্যে চলতি মৌসুমে ঘন কুয়াশায় বীজতলা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে গাজীপুরের শ্রীপুর, কাওরাইদ ও কাপাসিয়ার বিভিন্ন অঞ্চল ঘুরে দেখা যায়, ঘন কুয়াশায় বোরো ধানের বীজতলা বিবর্ণ হয়ে যাচ্ছে।
কৃষকরা জানান, বীজতলা রক্ষায় বিভিন্ন ধরনের ছত্রাকনাশক ছিটিয়েও ফল পাওয়া যাচ্ছে না।
এবার বোরোর চারার সংকট দেখা দিতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন তারা।
শ্রীপুর উপজেলার বরমী ইউনিয়নের ডালে শহর গ্রামের কৃষক মোশারফ হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বোরো বীজতলার অর্ধেকই কুয়াশায় বিবর্ণ হয়ে গেছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে নতুন করে আবারও বীজতলা তৈরি করতে হবে।'
একই গ্রামের কৃষক আমির উদ্দিন বলেন, 'এখনো জমি আবাদ শুরু করতে পারিনি। ঘন কুয়াশায় আমার মতো অনেকের বীজতলা নষ্ট হয়ে গেছে।'
কাপাসিয়া উপজেলার বেলাশী গ্রামের কৃষক আনিসুজ্জামান বলেন, 'তিন বিঘা জমির বীজতলা নষ্ট হয়ে গেছে। নতুন করে বীজতলায় ধান ফেলে এখন অপেক্ষা করছি। আরও মাস খানেক সময় লাগবে জমিতে চারা রোপণ করতে।'
অন্য কৃষকের কাছ থেকে বীজতলা কিনেছেন বলে জানান তরগাঁও এলাকার বামনখলা গ্রামের কৃষক জামাল মিয়া।
কাপাসিয়া উপজেলা উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মোখলেছুর রহমান ডেইল স্টারকে বলেন, 'বোরো চাষে উপযোগী তাপমাত্রার চেয়ে কম থাকায় এবং কুয়াশার কারণে বীজতলা বিবর্ণ হয়ে যাচ্ছে। আবহাওয়া এ রকমই থাকলে বীজতলা রক্ষায় কৃষকদের ইউরিয়া সার ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।'
তিনি আরও বলেন, 'এরপরও যদি কাজ না হয়, তাহলে জিপসাম সার দিতে হবে। এতে বীজতলা বিবর্ণ হবে না। যেগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেগুলোও ভালো থাকবে।'
গাজীপুর জেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. গোলাম মোস্তফা জানান, 'বীজ রক্ষায় আমরা প্রতিনিয়ত কৃষকদের মাঠ পর্যায়ে পরামর্শ দিচ্ছি। ঘন কুয়াশা বা বেশি ঠান্ডা পড়লে সকালে বীজতলায় পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। এরপর পানি ঝেরে দিতে হবে।
'রাতে পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখতে পারলে ভালো হয়। সেসব পরামর্শ আমরা কৃষকদের দিচ্ছি,' বলেন তিনি।
Comments