সার আত্মসাতের ঘটনায় সরকার বিব্রত, খতিয়ে দেখা হচ্ছে বললেন কৃষিমন্ত্রী

কৃষিমন্ত্রী
কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক | ছবি: টেলিভিশন থেকে নেওয়া

সরকারিভাবে আমদানি করা ৭২ হাজার মেট্রিক টন সার আত্মসাতের ঘটনায় সরকার বিব্রত বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

অভিযোগ উঠেছে, সরকারিভাবে আমদানি করা ৭২ হাজার মেট্রিক টন সার বন্দর থেকে খালাসের পর গুদামে পৌঁছে না দিয়ে আত্মসাৎ করেছে পরিবহনের দায়িত্বে থাকা আওয়ামী লীগ নেতার মালিকানাধীন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স পোটন ট্রেডার্স। এতে সরকারের ৫৮২ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। দুদককে এ বিষয়ে ৬০ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলেছেন হাইকোর্ট। এ বিষয়ে জানতে চাইলে কৃষিমন্ত্রী বলেন, 'আমরা চেক করছি গুদাম। অবশ্যই গুদামে যদি না থেকে থাকে জবাব দিতে হবে। তাকে আইনের আওতায় আসতে হবে।'

এখানে ‍কৃষি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব ছিল কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'অবশ্যই দায়িত্ব ছিল। কৃষি মন্ত্রণালয়, আমাদের যেসব প্রতিষ্ঠান এর সঙ্গে জড়িত শিল্প মন্ত্রাণলয়; সবাইকে দায়িত্ব নিতে হবে। দায়িত্ব এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই।

'আমরা খতিয়ে দেখছি। আমরা এটুকু অন্তত বলতে পারি, মন্ত্রাণলয় বসে নেই। প্রচলিত আইনে তাদের শাস্তি হবে। আদালত শাস্তি দেবে।'

দুর্নীতির ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতার নাম আসা সরকারের জন্য বিব্রতকর কিনা জানতে চাইলে রাজ্জাক বলেন, 'অবশ্যই এটি সরকারের জন্য বিব্রতকর।'

আগামী ১১ জানুয়ারি বিএনপির গণঅবস্থান কর্মসূচি প্রসঙ্গে রাজ্জাক বলেন, 'বিএনপি যত কর্মসূচি দিক এই বৈধ সরকারের পতন ঘটাতে পারবে না। আগামী জানুয়ারির ১১ তারিখ পর্যন্ত এই সরকারই থাকবে এবং একটি সুষ্ঠু-সুন্দর নির্বাচন হবে। আন্দোলন করে বিএনপি এই সরকারের পতন ঘটাতে পারবে না।'

বিএনপির কর্মসূচি ব্যর্থ হবে দাবি করে তিনি বলেন, '১১ ডিসেম্বর কিছু হবে না। দল হিসেবে আমরা তৎপর থাকবো। আমাদের দায়িত্ব হবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতা করা।'

ছাত্রলীগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'ছাত্রলীগ তরুণ-যুবক। আমাদের আগামী প্রজন্ম। তারাই তো দেশকে নেতৃত্ব দেবে। আমরা রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশকে একটি জাতি-রাষ্ট্র হিসেবে সৃষ্টি করেছি। বঙ্গবন্ধু আমাদের স্বপ্ন দেখিয়েছেন, আমরাও বলেছি, বাংলাদেশ হবে একটি ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত, সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ। যে বাংলাদেশ নিয়ে আমরা অহঙ্কার করবো।'

তিনি আরও বলেন, 'যে দেশের মুক্তিযুদ্ধে এবং আমাদের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ছাত্ররা মুখ্য ভূমিকা পালন করেছে, সে দেশ গড়ার জন্য ছাত্রলীগকে অনেক বেশি দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। সব ছাত্র সংগঠনে নানা ভুল-ভ্রান্ত্রি, বিভ্রান্তি রয়েছে। আমরা যারা নেতৃত্ব দেই, আমাদেরও দায়িত্ব আছে কঠোরভাবে তাদের গাইড করা। এখানে দায়িত্ব এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। তাদের শুধু দোষারোপ করলেই হবে না। আমি একজন সংসদ সদস্য, আমি আমার এলাকার ছাত্রলীগকে সঠিকভাবে ব্যবহার করছি কি না, সেটাও আমাদের দেখা উচিত।'

কৃষিমন্ত্রী বলেন, 'আমরা বাণিজ্যিক কৃষিতে যেতে চাই। কাজু বাদাম একটি সফল, নাট আমরা আমদানি করি। আমরা দেখেছি, পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় আমরা এটা উৎপাদন করতে পারি। ভারত এ ব্যাপারে অনেক এগিয়ে আছে। ভারতের দক্ষিণাঞ্চলে ব্যাপকভাবে চাষ হয়, সেখান থেকে আমরা চারা আনছি। আমি বিশ্বাস করি, কাজু বাদাম বাংলাদেশের অন্যতম রপ্তানি আয়ের উৎস হবে। কফিরও সম্ভাবনা আছে।'

তিনি বলেন, 'কৃষিকে আমরা যান্ত্রিককরণে নিয়ে যাচ্ছি। সরকার বড় প্রকল্প নিয়েছে। কৃষককে আমরা নানাভাবে সহযোগিতা করছি। ভারত আমাদের চেয়ে অনেক এগিয়ে আছে। ট্রাক্টর ও অন্যান্য কৃষি যন্ত্রপাতি বাংলাদেশে যেটা আমদানি হয় তার বেশির ভাগই আসে ভারত থেকে।

'আমরা এখন গ্রীষ্মকালে পেঁয়াজ করতে যাচ্ছি। এ বছর আমাদের ভালো উৎপাদন হয়েছে। মহারাষ্ট্রে এই বীজগুলো হয়। সেখান থেকে আমরা বীজ আনার চেষ্টা করছি। যেহেতু বাংলাদেশ ও ভারতের কৃষি আবহাওয়া প্রায় একই রকম, কাজেই তাদের সহযোগিতা নেওয়ার সুযোগ সবচেয়ে বেশি।'

এক প্রশ্নের জবাবে রাজ্জাক বলেন, 'এবার পেঁয়াজ বেশি আমদানি করিনি আমরা। এপ্রিলে যেটা চাষ হয় সেটা গত বছর ভালো হয়েছে। আমাদের সমস্যা হলো, রাখার ব্যবস্থা নেই। থাকলে আমাদের পেঁয়াজের কোনো সমস্যা হতো না।'

Comments

The Daily Star  | English

Technical education hit by teacher shortage, falling enrolment

Bangladesh’s technical education sector is facing a slow-burning crisis, shaped by a severe shortage of teachers, poor infrastructure, and steadily declining student interest.

11h ago