ভৈরবে দুর্ঘটনা: ১৫ ঘণ্টা পর উভয় লাইনে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক
কিশোরগঞ্জের ভৈরব রেলওয়ে জংশন স্টেশনের আউটারে দুর্ঘটনার ১৫ ঘণ্টা পর আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৬টার পর থেকে থেকে উভয় লাইনে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
আজ ভোর সোয়া ৪টার দিকে দুর্ঘটনায় পড়া এগারসিন্ধুর এক্সপ্রেস ট্রেনের দুটি বগি লাইন থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়।
ভৈরব রেলওয়ে জংশন স্টেশনের কেবিন সূত্রে জানা গেছে, বগি উদ্ধারের পর ঘটনাস্থলের উভয় দিকে আটকে পড়া বিভিন্ন ট্রেন তাদের গন্তব্যের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। তবে সম্পূর্ণ স্বাভাবিক সময়সূচিতে ট্রেন চলতে আরও এক দিনের বেশি সময় লাগতে পারে।
কেবিন সূত্র জানায়, রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে দুর্ঘটনাস্থলের রেললাইনে বর্তমানে ঘণ্টায় ১০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চালাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত এই গতিতে ট্রেন চালানো হবে।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, সোমবার সন্ধ্যার পর আখাউড়া থেকে আসা উদ্ধারকারী ট্রেন উদ্ধার কাজ শুরু করে। দুটি বগি দুমড়েমুচড়ে যাওয়ায় অনেকটা আলাদা করে করে সরানো হয়। উদ্ধারের প্রথম পর্যায়ে মালবাহী ট্রেনটিকে স্টেশনে সরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মালবাহী ট্রেনটি দুর্ঘটনাস্থল থেকে সরানো হয়। এরপর রাত ৮টার দিকে এগারসিন্ধুর এক্সপ্রেস ট্রেনের তিন বগি রেখে বাকি ট্রেনটি গন্তব্যের উদ্দেশে ছেড়ে যায়।
এদিকে, দুর্ঘটনাস্থলে এগারসিন্ধুর এক্সপ্রেস ট্রেনের দুটি বগির নিচ থেকে কারও মরদেহ পাওয়া যায়নি। ফলে এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ১৮ জন বলে নিশ্চিত করেছে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র।
সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনের পশ্চিম প্রান্তে (আউটারে) এগারসিন্দুর ট্রেনটির পেছনের তিনটি কোচে চট্টগ্রামগামী একটি মালবাহী ট্রেন ধাক্কা দেয়। এতে যাত্রীবাহী ট্রেনের পেছনের দুটি কোচ উল্টে গিয়ে ১৮ জন নিহত ও শতাধিক আহত হন। দুর্ঘটনার পর ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট ও ঢাকা-কিশোরগঞ্জ—এই তিন রুটে সাড়ে সাত ঘণ্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল।
দুর্ঘটনার পর মালবাহী ট্রেনের লোকোমাস্টার (চালক), সহকারী লোকোমাস্টার ও পরিচালককে (গার্ড) সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছেন। এ ঘটনা তদন্তে রেলওয়ের পক্ষ থেকে দুটি কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটিকে আগামী তিন কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। কমিটির সদস্যরা আজ মঙ্গলবার দুর্ঘটনাস্থলে এসে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করবেন বলে জানা গেছে।
Comments