পাহাড় ধসে স্বামী-সন্তান হারানো শরীফা বললেন ‘কারে নিয়ে বাঁচমু’

পাহাড় ধস
চট্টগ্রামের ষোলশহর রেলওয়ে স্টেশনের কাছে পাহাড় ধসে ৭ মাসের শিশু কন্যাসহ বাবা নিহত হন। ছবি: রাজীব রায়হান/স্টার

'স্বামী-সন্তান মারা গেছে, দুনিয়ায় আমার আর কিছু রইল না। কিসের আশায় বাঁচমু, কারে নিয়ে বাঁচমু।'

আজ রোববার দুপুর আড়াইটার দিকে চট্টগ্রাম নগরের ষোলশহর এলাকায় রেলওয়ে কলোনিতে পাহাড় ধসে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া ঘরে বসে এভাবে বিলাপ করছিলেন শরীফা বেগম।

এর আগে আজ ভোর সাড়ে ৫টার দিকে পাহাড় ধসে মারা গেছেন তার স্বামী মো. সোহেল (৩৫) এবং ৭ মাস বয়সী মেয়ে বিবি জান্নাত।

এ ঘটনায় শরীফা বেগম ও তার বড় মেয়ে বিবি কুলসুমা (১০) আহত হয়েছেন।

শরীফা বলেন, 'স্বামীর আয়-রোজগার বেশি হলে তো ভালা ঘরে থাকতাম। অভাবের কারণে এইহানে ছিলাম। আমার সব শেষ হয়ে গেল।'

শরীফার পাশে ছিলেন তার মা ও বড় বোন।

প্রতিবেশীরা জানান, অভাব থাকলেও শরীফা-সোহেলের সংসার ছিল সুখের। রেল স্টেশনে চা বিক্রি করে ২ মেয়েকে নিয়ে ভালোই চলছিল এই দম্পতির সংগ্রামী জীবন।

ফেনী জেলার শর্শদি ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. সোহেল ২ দশক আগে জীবিকার টানে বন্দর নগরীতে এসেছিলেন। প্রায় ১ যুগ আগে তাদের দাম্পত্য জীবন শুরু হয়েছিল।

সোহেলের ভাতিজি বিবি ফাতেমা বলেন, 'হঠাৎ বিকট শব্দ হয়। এরপর বাইরে গিয়ে মোবাইল ফোনের আলো জ্বালিয়ে দেখতে পাই, যে ঘরে কাকারা থাকতেন সেটির ওপর দেয়াল ও মাটি ধসে পড়েছে। এরপর আমার ছোট ভাই ষোলশহর স্টেশন গিয়ে বিষয়টি জানালে তারা ফায়ার সার্ভিসকে ফোন করে। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে তাদের উদ্ধার করে।'

রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ওই কলোনিতে রেলের প্রকৌশল বিভাগের কর্মীরা বসবাস করেন। তবে কোয়ার্টারের আশপাশের খালি আঙ্গিনায় অবৈধভাবে ঘর তৈরি করে ভাড়া দিয়েছেন বেশিরভাগ কর্মী। এ ছাড়া, কলোনির পাহাড়গুলো কেটেও ঘর তৈরি করা হয়েছে।

যেখানে ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে, সেই ঘরগুলো তৈরি করে ভাড়া দিয়েছেন রেলের প্রকৌশলী বিভাগের চৌকিদার আবদুল খালেক।

ফরিদ উদ্দিন নামে এক বসবাসকারী জানিয়েছেন, খালেক পাহাড় কেটে ঘর তৈরি করে ভাড়া দিয়েছেন। তিনি ঘর তৈরি না করলে মানুষ ঝুঁকি নিয়ে এখানে বসবাস করতে পারতো না।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে আবদুল খালেকের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। এমনকি তার মোবাইল নম্বরটিও বন্ধ পাওয়া গেছে।

এ বিষয়ে জানতে রেলওয়ের বিভাগীয় প্রকৌশলী আবদুল হানিফকে কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

 

Comments

The Daily Star  | English

US tariff talks: First day ends without major decision

A high-level meeting between Bangladesh and the Office of the United States Trade Representative (USTR) ended in Washington, DC, yesterday without a major decision, despite the looming expiry of a 90-day negotiation window on July 9.

8h ago