অ্যাম্বুলেন্স দুর্ঘটনা: বন্ধুর অসুস্থ মাকে নিয়ে ঢাকা যাচ্ছিলেন মাসুদ রানা

মাসুদ রানার মরদেহ গ্রামের বাড়ি পৌঁছানোর পর তার মা ও স্ত্রী কান্নায় ভেঙে পড়েন। ইনসেটে মাসুদ রানা। ছবি: সংগৃহীত

শরীয়তপুরে পদ্মা সেতুর টোল প্লাজা সংলগ্ন এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত সাংবাদিক মাসুদ রানার মরদেহ পৌঁছেছে তার গ্রামের বাড়ি বরিশাল জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলার বাসাইল গ্রামে।

আজ মঙ্গলবার বিকেল ৪টায় তার মরদেহ পৌঁছানোর পর থেকে ওই গ্রামে শুরু হয় স্বজনদের আহাজারি।

মঙ্গলবার ভোরে জাজিরায় ট্রাকের সঙ্গে অ্যাম্বুলেন্সের ধাক্কায় মাসুদসহ ৬ জন নিহত হন। নিহত মাসুদ রানা ছিলেন দৈনিক নবচেতনার বরিশাল ব্যুরো চিফ।

রাত ৮টার দিকে জানাজার নামাজের পর পারিবারিক কবরস্থানে মাসুদ রানার দাফন হয়। 

মাসুদের বন্ধু ও স্বজনরা জানান, দুর্ঘটনায় নিহত লিমা তার পারিবারিক বন্ধু ও ব্যবসায়িক অংশীদার ছিলেন। লিমার অসুস্থ মা জাহানারা বেগমকে ঢাকায় হাসপাতালে ভর্তি করতেই অ্যাম্বুলেন্সে তাদের সঙ্গে যাচ্ছিলেন মাসুদ রানা।

যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী লিমার মা জাহানারা বেগমকে দেখাশোনা করার কেউ না থাকায় কয়েক মাস আগে দেশে আসেন লিমা। মায়ের কিডনি রোগ ও ডায়াবেটিসের জটিলতা বৃদ্ধি পেলে মাকে যুক্তরাষ্ট্র নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।

কিন্তু সোমবার হঠাৎ করে জাহানারা বেগম অসুস্থ হয়ে পড়েন। অবস্থার অবনতি হলে বরিশালের স্থানীয় একটি প্রাইভেট হাসপাতালের চিকিৎসকদের পরামর্শে উন্নত চিকিৎসার জন্য মাকে ঢাকার হাসপাতালে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন লিমা। তাদের সঙ্গী হন সাংবাদিক মাসুদ রানা।

তার বন্ধু আমিন রাসেল ডেইলি স্টারকে জানান, মাসুদ রানা একটি ওয়েব পোর্টালও চালাতেন। এছাড়া ফ্রিল্যান্সিং করতেন। স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে একটি রেস্টুরেন্টের ব্যবসাও চালাতেন তিনি। 

প্রতিদিনের মতো স্ত্রী মালা আক্তার রেস্টুরেন্টে না গিয়ে ভোরে স্বামীর মরদেহ আনতে বরিশাল থেকে শরীয়তপুরের জাজিরা যান। 

মাসুদ রানা পরোপকারী ছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'মাসুদ আজও বন্ধু লিমার মাকে হাসপাতালে ভর্তি করতে অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকা যাচ্ছিলেন।'
 
স্থানীয় সাংবাদিক মিনার ডেইলি স্টারকে জানান, মাসুদ রানা কম্পিউটার চালনায় দক্ষ হওয়ায় ডিজাইন থেকে শুরু করে নিউজ পোর্টাল তৈরি করা ও হোস্টিংয়ের কাজ নিজেই করতেন। বরিশালের সাংবাদিকদের সব অঙ্গনে তার সাবলীল পদচারণা ছিল।

উদীয়মান এই সাংবাদিকের মৃত্যুতে শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত বরিশাল প্রেসক্লাব, বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটিসহ সাংবাদিক সংগঠনগুলো শোক প্রকাশ করেছে।

 

Comments

The Daily Star  | English

Reforms, justice must come before election: Nahid

He also said, "This generation promises a new democratic constitution for Bangladesh."

4h ago