চলতি বছরে কর্মক্ষেত্রে নিহত ৯৬৭, আহত ২২৮

চলতি বছরে কর্মক্ষেত্রে নিহত ৯৬৭, আহত ২২৮
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন ওশি ফাউন্ডেশনের সদস্যরা। ছবি: সংগৃহীত

দেশে গতবছরের তুলনায় চলতি বছরে কর্মক্ষেত্রে হতাহতের সংখ্যা বেড়েছে। এ বছর ১ জানুয়ারি থেকে ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত কর্মক্ষেত্রে হতাহত হয়েছেন মোট ১ হাজার ১৯৫ জন। তাদের মধ্যে নিহত ৯৬৭ জন এবং আহত ২২৮ জন।

আজ শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে ওশি ফাউন্ডেশন এই তথ্য জানিয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সারাদেশে বিভিন্ন সেক্টরে দুর্ঘটনায় মোট ১ হাজার ১৯৫ জন হতাহতের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক খাতে ২৪৬ জন এবং অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে ৯৪৯ জন হতাহতের শিকার হয়েছেন। গতবছর পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ১ হাজার ৮৯ জন হতাহতের শিকার হয়েছিলেন।

২০২২ সালে প্রাতিষ্ঠানিক খাতে কর্মরতদের মধ্যে নিহত হয়েছেন ১৫২ জন এবং আহত হয়েছেন ৯৪ জন। আর অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে ৮১৫ জন মারা গেছেন এবং আহত হয়েছেন মোট ১৩৪ জন। প্রাতিষ্ঠানিক খাতে যে ৯৬৭ জন নিহত হয়েছেন তার মধ্যে নারী ২৪ জন আর পুরুষ ৯৪৩ জন। আর অপ্রাতিষ্ঠানিকর খাতে ২২৮ জনের মধ্যে নারী ২৮ জন এবং পুরুষ ১৯০ জন নিহত হয়েছেন।

২০২২ সালে প্রাতিষ্ঠানিক খাতে যে ৯৬৭ জন হতাহতের শিকার হন তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি নিহত হয়েছেন পরিবহন খাতে। এই খাতে হতাহতের সংখ্যা ৪৭৬ জন। তাদের মধ্যে ৪২৫ জন নিহত এবং ৫১ জন আহত হয়েছেন। যা মোট হতাহতের ৪০ শতাংশ।

হতাহতের দিক দিয়ে পরিবহন খাতের পরেই আছে সেবামূলক খাত। এই খাতে ২৭০ জন হতাহতের শিকার হয়েছেন। তাদের মধ্যে ২১১ জন মারা গেছেন। আহত হয়েছেন ৫৯ জন। যা মোট হতাহতের ২৩ শতাংশ। সেবামূলক খাতের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত আছে ওয়ার্কশপ, গ্যাস, বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, হোটেল, রেস্টুরেন্ট, সরকারি সেবাদানকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী।

সেবাখাতের পর আছে কৃষিখাত। এই খাতে ১৩৯ জন হতাহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ১২৪ জন মারা গেছেন। আহত হয়েছেন ১৫ জন। যা মোট হতাহতের ১২ শতাংশ।

এরপর রয়েছে নির্মাণ খাত। এ বছর নির্মাণ খাতে ১৩৪ জন বিভিন্ন দুর্ঘটনায় হতাহত হয়েছেন। নিহত হয়েছেন ১০৫ জন এবং ২৯ জন আহত হয়েছেন যা মোট হতাহতের ১১ শতাংশ। ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে মোট হতাহতের সংখ্যা ১০০ জন। তাদের মধ্যে ৬৭ জন নিহত এবং ৩৩ জন আহত যা মোট হতাহতের ১৮ শতাংশ।

এ বছর তৈরি পোশাক শিল্প খাতে মোট ৫৪ জন হতাহতের শিকার হন। তাদের মধ্যে ২৮ জন নিহত হয়েছেন এবং ২৬ জন আহত হন। যা মোট হতাহতের ৪ শতাংশ। জাহাজ ভাঙ্গা শিল্পে হতাহতের সংখ্যা ২২ জন। তাদের মধ্যে নিহত ৭ জন এবং আহত ১৫ জন। যা মোট হতাহতের ২ শতাংশ।

এ বছর সবচেয়ে বেশি হতাহত হয়েছেন আগস্ট মাসে। এ মাসে মোট হতাহতের সংখ্যা ১৪২ জন। যাদের মধ্যে ১১৭ জন নিহত এবং ২৫ জন আহত হয়েছেন। এছাড়াও জানুয়ারি মাসে ৮১ জন, ফেব্রুয়ারি মাসে ৭৯ জন, মার্চ মাসে ৭৫ জন, এপ্রিল মাসে ৯৯ জন, মে মাসে ৯৬ জন, জুন মাসে ১০২ জন, জুলাই মাসে ১২০ জন, সেপ্টেম্বর মাসে ১৩৯ জন, অক্টোবর মাসে ১১৬ জন, নভেম্বর মাসে ৭৮ জন এবং ডিসেম্বর মাসে (১-২৯ তারিখ পর্যন্ত) ৬৮ জন হতাহত হয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, ওশি ফাউন্ডেশনের গবেষণায় দেখা যায়, গত এক দশকে (২০১৩-২০২২) মোট ১৫ হাজার ২৫৯ জন কর্মক্ষেত্রে হতাহতের শিকার হন। যাদের মধ্যে ৯ হাজার ৫৫৮ জন নিহত এবং ৫ হাজার ৭০১ জন আহত হন।

লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নে জবাব দেন সংস্থার পরিচালক মো. আলম হোসেন এবং প্রকল্প সমন্বয়ক এমএম কবীর মামুন। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন ওশি ফাউন্ডেশনের প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর ইশরাত জাহান, এমআইএস অফিসার মো. সোহেল শেখ, মনিটরিং অফিসার মো. নূর আলম, ডক্যুমেন্টেশন অ্যাসিসটেন্ট মো. সুমন হাওলাদারসহ অনেকে।

Comments

The Daily Star  | English

US retailers lean on suppliers to absorb tariffs

Rather than absorbing the cost or immediately passing it on to consumers, many US apparel retailers and brands have turned to their suppliers in Bangladesh, demanding they share the pain

2h ago