‘মাঠে খেলার সময় দেখি উড়োজাহাজটি ঘুরতে ঘুরতে পড়ে যাচ্ছে’

নেপালে উড়োজাহাজ দুর্ঘটনা
ইয়েতি এয়ারলাইন্সের বিধ্বস্ত উড়োজাহাজ। ছবি: রয়টার্স

মাঘী সংক্রান্তি উৎসবে যোগ দিতে কল্পনা সুনার ৩ দিন আগে নেপালের মধ্যাঞ্চলের তানাহুন জেলা থেকে দেশটির পশ্চিমাঞ্চলের পর্যটন-খ্যাত পোখারায় আসেন।

নিজের বাসার উঠানে কাপড় কাচার সময় তিনি দেখতে পান একটি উড়োজাহাজ পড়তে পড়তে তার দিকেই আসছে।

'উড়োজাহাজটি অস্বাভাবিকভাবে দুলছিল। মুহূর্তেই বোমা ফাটার মতো প্রচণ্ড জোরে বিস্ফোরণের আওয়াজ শুনি।'

গতকাল রোববার ইয়েতি এয়ারলাইন্সের বিস্ফোরণ সম্পর্কে সুনার এ কথাগুলো বলছিলেন। তিনি আরও বলেন, 'এরপর দেখি সেতি পাহাড়ের খাড়ি থেকে ধোঁয়ার কুণ্ডলী বেরিয়ে আসছে।'

পোখারা শহরে ঘরিপাতান এলাকায় স্থানীয় সময় সকাল ১১টায় উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হওয়ার সময় সেখানকার আরেক বাসিন্দা গীতা সুনারের বাড়ির প্রায় ১২ মিটার দূরে এসে পড়ে উড়োজাহাজের একটি পাখা।

নেপালি সংবাদমাধ্যম কাঠমান্ডু পোস্টকে গীতা বলেন, 'উড়োজাহাজটি ঠিক আমাদের বাড়ির সামনে এসে পড়ে। বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে যেত। এটি এসে পড়তে পড়তে বাড়ির সামনে এসে থামে। ভাগ্যিস সেখানে কেউ ছিলেন না।'

সংক্রান্তি উপলক্ষে গীতা গতকাল সকালে মন্দিরে গিয়েছিলেন। প্রার্থনা শেষে ঘরে এসেছিলেন খাওয়ার জন্য।

বিস্ফোরণের শব্দ শুনে গীতা ঘরের বাইরে এসে দেখেন উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়েছে।

গীতা আরও বলেন, 'খাড়ি থেকে ধোঁয়া উঠতে দেখি। আরোহীদের দেহাবশেষ এদিক-ওদিক ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। উড়োজাহাজের ধ্বংসাবশেষের পাশাপাশি আরোহীদের ছোট ছোট ব্যাগগুলোও চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে।'

তিনি জানান, বাচ্চারা যারা মাঠে খেলছিল তারা উড়োজাহাজের ভেতর থেকে আরোহীদের আর্তচিৎকার শুনতে পায়।

বাচ্চাদের অনেকে কাঠমান্ডু পোস্টকে বলে, উড়োজাহাজটি ঘুরতে ঘুরতে আকাশ থেকে সোজা মাটিতে নেমে যায়।

১১ বছর বয়সী সমীর ও প্রাজওয়াল পারিয়ার বলে, মাঠে খেলার সময় দেখি উড়োজাহাজটি ঘুরতে ঘুরতে পড়ে যাচ্ছে। তারা প্রথমে ভেবেছিল, এটা কোনো খেলনা। তারপর এটি কাছে আসতেই তারা দৌড়ে দূরে আশ্রয় নেয়।

সমীর বলে, 'হঠাৎ ধোঁয়ার কারণে চারপাশ অন্ধকার হয়ে যায়। উড়োজাহাজটি যখন মাটিতে পড়ে তখন মনে হচ্ছিল এর চাকা আমাদের ওপর এসে পড়বে।'

সেই এলাকার আরেক বাসিন্দা বাইনশা বাহাদুর গণমাধ্যমটিকে জানান, যদি উড়োজাহাজটি সোজা আসতো তাহলে সেখানকার সব ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়ে যেত।

তিনি বলেন, 'বিধ্বস্ত হওয়ার পরও উড়োজাহাজটির ৭/৮টি জানালা তখনো বন্ধ ছিল। ভেবেছিলাম, হয়তো ভেতরে কেউ বেঁচে থাকবেন। কিন্তু, মুহূর্তেই এর বাকি অংশে আগুন ধরে যায়। দূরে থেকে এই ভয়াবহ দৃশ্য দেখা ছাড়া কিছুই করার ছিল না।'

Comments

The Daily Star  | English

4.8 lakh narcotics cases pending despite deadline

Judge shortage, lack of witnesses, inadequate court infrastructure blamed for delays

6h ago