জাপানে ১ মাসের ব্যবধানে ৩ মন্ত্রীর পদত্যাগ

তহবিল তছরুপের অভিযোগের জেরে জাপানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মিনোতহবিল তছরুপের অভিযোগের জেরে জাপানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মিনোরু তেরাদা আজ সোমবার পদত্যাগ করেছেন। ছবি: রয়টার্সরু তেরাদা আজ সোমবার পদত্যাগ করেছেন।
তহবিল তছরুপের অভিযোগের জেরে জাপানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মিনোরু তেরাদা আজ সোমবার পদত্যাগ করেছেন। ছবি: রয়টার্স

তহবিল তছরুপের অভিযোগের জেরে জাপানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মিনোরু তেরাদা আজ সোমবার পদত্যাগ করেছেন।

বিশ্লেষকদের মতে, ১ মাসেরও কম সময়ের মধ্যে এ নিয়ে মন্ত্রিসভার ৩ সদস্যের পদত্যাগের ঘটনা প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার 'নড়বড়ে' সরকারের ওপর একটি বড় আঘাত।

আজ সোমবার কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

জুলাইতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের হত্যাকাণ্ডের পর ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির রাজনীতিবিদদের সঙ্গে ইউনিফিকেশন চার্চের দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকা নিবিড় সম্পর্কের বিষয়গুলো প্রকাশ পায়। এরপর থেকেই কিশিদার জনপ্রিয়তা কমতে শুরু করেছে।

'তেরাদাকে বরখাস্ত করতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী কিশিদা', গণমাধ্যমে এ ধরনের সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তার পদত্যাগপত্র জমা দেন।

আজ সোমবার তেরাদার জায়গায় সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাকেআকি মাতসুমতোকে নিয়োগ দিয়েছেন কিশিদা।

মাতসুমতোকে নিয়োগ দেওয়ার পর কিশিদা সাংবাদিকদের বলেন, 'রাজনৈতিক অঙ্গীকারের মূলে রয়েছে জনগণের ভরসা। একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে আমাকে জনগণের আস্থা টিকিয়ে রাখতে পারিপার্শ্বিকতার বিচার ও নিরীক্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।'

তেরাদার পদত্যাগের আগে এক সমীক্ষায় জানা গেছে, ৩০ দশমিক ৫ শতাংশ নাগরিকের কাছে এখনো কিশিদা জনপ্রিয়। অক্টোবরের তুলনায় এই হার ২ দশমিক ৬ পয়েন্ট কম।

৫১ শতাংশ মানুষ জানিয়েছেন, অর্থমন্ত্রী দাইশিরো ইয়ামাগিওয়া ও বিচারমন্ত্রী ইয়াসুহিরো হানাশির পদত্যাগের বিষয়টি সঠিকভাবে ব্যবস্থাপনা করতে ব্যর্থ হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা। ছবি: রয়টার্স
জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা। ছবি: রয়টার্স

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের হত্যার ঘটনার পর থেকে কিশিদার জনপ্রিয়তা বিভিন্ন কারণে কমে গেছে। তেরাদার পদত্যাগের ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীর জনপ্রিয়তা আরও কমে যেতে পারে বলে বিশ্লেষকরা মত প্রকাশ করেছেন।

এর আগে, আবে'র সন্দেহভাজন খুনি জানান, তার মা ইউনিফিকেশন চার্চের কারণে দেউলিয়া হন। তিনি একইসঙ্গে এই চার্চের প্রচারণা করার জন্য আবেকে দায়ী করেন। এলডিপি পরবর্তীতে স্বীকার করে, তাদের অনেক আইনপ্রণেতার সঙ্গে এই চার্চের সংযোগ রয়েছে। তবে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে রাজনৈতিক দলটি কোনোভাবেই এই ধর্মীয় সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত নয় বলে তারা দাবি জানায়। এ সব বিতর্কে কিশিদার জনপ্রিয়তার ওপর বড় আঘাত আসে।

সেপ্টেম্বরের শেষে আবের জন্য ব্যয়বহুল ও জাঁকজমকপূর্ণ রাষ্ট্রীয় শেষকৃত্যের আয়োজন করে কিশিদা আরও সমালোচিত হন।

ইউনিফিকেশন চার্চের সঙ্গে সংযুক্ত থাকার দায় মাথায় নিয়ে ইয়ামাগিওয়া গত ২৪ অক্টোবরের পদত্যাগ করেন।

আগস্টে বিচারমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়া হানাশি গত ৯ নভেম্বর এক রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে বলেন, বিচারমন্ত্রী একটি 'নিন্ম-গুরুত্বপূর্ণ' পদ এবং এটি 'শুধুমাত্র ফাঁসির নথিতে সিলমোহর দেওয়ার সময় সংবাদমাধ্যমের শীর্ষ গল্প' হয়ে ওঠে।

পরে হানাশির এই মন্তব্য ঘিরে ব্যাপক সমালোচনার শুরু হয়। বিরোধীরা দাবি করে, এটি অগ্রহণযোগ্য মন্তব্য এবং হানাশি বিচারমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের যোগ্য নন। পরে, হানাশি দ্রুত ক্ষমা চাইতে বাধ্য হন এবং কিশিদার কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন।

পদত্যাগপত্রে হানাশি উল্লেখ করেন, 'আমি দুঃখিত যে, মৃত্যুদণ্ডকে খুব হালকাভাবে ব্যবহার করেছি। যা জনগণকে ক্ষুব্ধ করেছে। তাই এই পদে থাকার নৈতিকতা আমি হারিয়ে ফেলেছি।'

বিশেষত, হানাশি ও তেরাদার পদত্যাগ কিশিদার জন্য বড় আঘাত, কারণ এই ২ নেতা ক্ষমতাসীন দলে তার কাছের লোক ছিলেন।

Comments

The Daily Star  | English

No justifiable reason to delay nat'l polls beyond Dec: Salahuddin

We have been able to make it clear that there is not even a single mentionable reason to hold the election after December, says the BNP leader

7h ago