রাত পোহাবার কত দেরি পাঞ্জেরির কবির ৫০তম মৃত্যু বার্ষিকী

ছবি: সংগৃহীত

'রাত পোহাবার কত দেরি পাঞ্জেরি?/শুধু গাফলতে শুধু খেয়ালের ভুলে/দরিয়া- অথই ভ্রান্তি- নিয়াছি ভুলে/আমাদেরি ভুলে পানির কিনারে মুসাফির দল বসি/দেখেছে সভয়ে অস্ত গিয়াছে তাদের সেতারা, শশী।'

আজ কবি ফররুখ আহমদের ৫০তম মৃত্যু বার্ষিকী। ১৯৭৪ সালের ১৯ অক্টোবর ঢাকায় মারা যান। তিনি ১৯১৮ সালের ১০ জুন মাগুরা জেলার শ্রীপুর থানার মাঝাইল গ্রামে তার জন্ম। 

বাবা সৈয়দ হাতেম আলী ছিলেন একজন পুলিশ ইন্সপেক্টর। মা রওশন আখতার। ফররুখ আহমদ খুলনা জিলা স্কুল থেকে ১৯৩৭ সালে ম্যাট্রিক এবং কলকাতার রিপন কলেজ থেকে ১৯৩৯ সালে আই.এ. পাস করেন। এরপর স্কটিশ চার্চ কলেজে দর্শন এবং ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন। ছাত্রাবস্থায় তিনি বামপন্থী রাজনীতিতে ঝুঁকে পড়েন। তবে চল্লিশ-এর দশকে তার রাজনৈতিক বিশ্বাসে পরিবর্তন আসে। 

১৯৪২ সালের নভেম্বর মাসে আপন খালাতো বোন সৈয়দা তৈয়বা খাতুন (লিলি)-এর সঙ্গে ফররুখ আহমদের বিয়ে হয়। তার নিজের বিয়ে উপলক্ষে ফররুখ 'উপহার' নামে একটি কবিতা লেখেন যা সওগাত পত্রিকায় অগ্রহায়ণ ১৩৪৯ সংখ্যায় ছাপা হয়। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের প্রতি তার অকুণ্ঠ সমর্থন ছিল। তিনি তখন ধর্মীয় কুসংস্কার ও পাকিস্তানের অপরিণামদর্শী রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে কঠোরভাবে লেখালেখি করেন।

বাংলা ভাষায় আরবি-ফারসি শব্দের প্রয়োগনৈপুণ্য এবং আঙ্গিকের অভিনবত্বে তার কবিতা এক বিশেষ মর্যাদা লাভ করেছে। ব্যঙ্গকবিতা ও সনেট রচনায় তার কৃতিত্ব অনস্বীকার্য।  ১৯৪৫ সাল থেকে ফররুখ আহমদ মাসিক মোহাম্মদী পত্রিকা সম্পাদনা করেন এবং দেশভাগের পর ঢাকায় এসে রেডিও পাকিস্তানের ঢাকা কেন্দ্রে স্টাফ শিল্পী হিসেবে যোগ দেন। এখানে তিনি জনপ্রিয় খেলাঘর অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করতেন। ছাত্রাবস্থায়ই এম. এন. রায়ের র‌্যাডিক্যাল মানবতাবাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে বামপন্থি রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। কিন্তু বিভাগোত্তরকালে তিনি পাকিস্তানি আদর্শ ও মুসলিম রেনেসাঁর একজন সমর্থক হন।

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রতিও ছিল তার অনুরূপ সমর্থন। তার উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ- সাত সাগরের মাঝি (১৯৪৪), সিরাজাম মুনিরা (১৯৫২), নৌফেল ও হাতেম (১৯৬১), মুহূর্তের কবিতা (১৯৬৩), হাতেমতায়ী (১৯৬৬) প্রভৃতি।

সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার, প্রেসিডেন্ট পুরস্কার প্রাইড অব পারফরমেন্স, আদমজী পুরস্কার, ইউনেস্কো পুরস্কার, মরণোত্তর একুশে পদক , স্বাধীনতা পুরস্কার অর্জন করেন।

Comments

The Daily Star  | English

Crowd control: Police seek to stop use of lethal weapon

The police may stop using lethal weapons and lead pellets for crowd control as their widespread use during the July mass uprising led to massive casualties and global criticism.

3h ago