বিশ্বগণমাধ্যমে একাত্তরের ডিসেম্বর
একাত্তরে আমাদের যুদ্ধ ৯ মাস ধরে হলেও পূর্ব রণাঙ্গনে বাংলাদেশের যোদ্ধাদের সঙ্গে শেষের দিকে যুক্ত হয় ভারত। সে সময় ভারত পাকিস্তানের মধ্যে সর্বাত্মক যুদ্ধ চলে মাত্র ১৩ দিন। ৩ ডিসেম্বর শুরু হয়ে যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণ আর বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন দিয়ে। যুদ্ধ যখন চলছিল তখন উপমহাদেশে উপস্থিত বিদেশি সাংবাদিকরা ব্যস্ত ছিলেন পুঙ্খানুপুঙ্খ সংবাদ সংগ্রহে। তাদের পরিবেশিত সংবাদে ফুটে উঠেছে আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের সময়।
ভারতে প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ৩ তারিখ রাতে বেতার ভাষণে বলেন—"দেশের এবং মানুষের এক গভীর সংকটের মুহূর্তে আপনাদের সামনে বলছি--আজ বিকেল ৫:৩০ এর কিছু পরে পাকিস্তান আমাদের সাথে এক সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু করেছে। পাকিস্তানের বিমান বাহিনী আমাদের অমৃতসর, পাঠানকোট, শ্রীনগর, অভান্তিপুর, উত্তেরলাই, যোধপুর, আমবালা এবং আগ্রা বিমান ঘাটিতে সহসা আক্রমণ চালিয়েছে। তাদের স্থল বাহিনী সুলেমনাখি, খেমখেরান, পুন্চ এবং অন্যান্য স্থানে আমাদের প্রতিরক্ষা অবস্থানে গোলা নিক্ষেপ করেছে।
গত মার্চ থেকে আমরা সবচেয়ে ভারী বোঝা বহন করছি, শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য বিশ্বকে অনুরোধ করার প্রবল প্রচেষ্টা চালিয়েছি যাতে তারা একটি জাতিকে শুধুমাত্র গণতন্ত্রের জন্য ভোট দেওয়ার অপরাধে ধ্বংস করতে না পারে। কিন্তু বিশ্ব মূল কারণকে অস্বীকার করেছে। আজ বাংলাদেশের যুদ্ধ ভারতের যুদ্ধে পরিণত হয়েছে, দায়িত্ব বর্তেছে আমার উপর আমার সরকারের উপর এবং ভারতের জনগণের উপর। যুদ্ধে যাওয়া ছাড়া আমাদের আর বিকল্প নেই। সারা ভারতে জরুরী অবস্থা জারী করা হয়েছে। সম্ভব্য সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে এবং সম্ভব্য সকল ঘটনার জন্য আমরা প্রস্তুত।"
৪ ডিসেম্বর রাত ৮:৩০। ঢাকা শহর বাতি শূন্য। কিছুই চলছে না। বিকেল ৫:৩০-এ শুরু হয়েছে কারফিউ। পর্দা টানা। জানালা আড়াল করে মোমবাতি জ্বলছে। চারিদিক একেবারে শব্দহীন। কোথাও থেমে থেমে একটি কুকুর ডাকছে। আলো ঢেকে একটা জীপ বা ট্রাক চলছে। মেঘ চন্দ্রপ্রভাকে আড়াল করেছে, তারা গুলিও উজ্জ্বলতাহীন। কাকেরা সারাদিন মাথার উপর পাকিস্তান আর ভারতের বিমানের গর্জন শুনে এখন ক্লান্ত। রাত ৮:৩২ মিনিটে ঢাকার অদূরে তিনটি বোমার শব্দ, সাইরেন বাজল তবে কোন বিমানের শব্দ পাওয়া গেল না। রাত ৮:৩৭ মিনিটে অনেক দূরে জেটের শব্দ শোনা গেল কোন গোলা বর্ষণ হয়নি। হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টাল জাতি সংঘের কর্মকর্তাদের পরিবার, ঠিকাদার, ত্রাণ দলের লোকজন, আমেরিকান, ব্রিটিশ, অস্ট্রেলিয়ান এবং অন্যান্য দেশের লোকজনে ঠাসা, সবাই তাড়াতাড়ি করে সুটকেস গুছিয়ে এনেছে। তাদেরকে বলা হয়েছে জাতি সংঘের একটি বিমান আমেরিকান সি-১৩০ হারকিউলিকস, ব্যাংকক থেকে আসছে সবাইকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে।
প্রায় ৫০ জন সাংবাদিক মোমের আলোতে টাইপরাইটারে টাইপ করে চলেছেন। সাংবাদিক এবং ফটোগ্রাফার সংবাদ পাঠাতে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। অনেকেই রেডিও নব ঘুরিয়ে নতুন সংবাদ জানার চেষ্টার চালাচ্ছেন।
দিনের বেলা বিমান যুদ্ধ হাজার হাজার ঢাকাবাসীর জন্য দর্শনীয় প্রদর্শনীর আমেজ এনে দিয়েছে। হাজার হাজার মানুষ এবং ছেলে মেয়েরা ছাদে উঠে বিমান যুদ্ধ দেখছেন। দুপুর ১২:৩০ মিনিটে সাংবাদিকদের একটি ভূপতিত ভারতীয় বিমান দেখাতে এয়ারপোর্টে নিয়ে যাওয়া হয়। সাংবাদিকদের জানান হয় ঢাকা ছাড়া চট্টগ্রামে ভারতীয় বিমান আক্রমণ হয়েছে এদের লক্ষ্য ছিল জ্বালানি মজুদে আঘাত হানা। ঢাকার আকাশে ধুয়ার কুণ্ডলী দেখা যাচ্ছিল—জানা গেল নারায়ণগঞ্জে গেরিলারা একটি পাট গুদামে আগুন দিয়েছে।
এদিকে গতকাল যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য কিছু রাষ্ট্র জাতিসংঘের নিরাপত্তার পরিষদের জরুরী সভার আহ্বান করার অনুরোধ করে। যুক্তরাষ্ট্রের সেক্রেটারি অব ষ্টেট উইলিয়াম রজাস যুদ্ধ বিরতির আশা ব্যক্ত করেন। এখন পর্যন্ত রাশিয়া ভারতকে এবং চীন পাকিস্তানকে সমর্থন করবে বলে মনে হয়। যুদ্ধ শুরুর দুই দিনের মাথায় আমেরিকা পাকিস্তানের সমর্থনে ভারতকে দোষারোপ করে একটি বিবৃতি দেয় যা আমেরিকায় তীব্র সমালোচনার জন্ম দেয়।
ডিসেম্বরের ৮ তারিখের মধ্যেই যশোর শহর শত্রু মুক্ত হয়। ভারতীয় বাহিনী এবং মুক্তি বাহিনীর সাথে নিউ ইয়র্ক টাইমসের বিশেষ সংবাদদাতা সিডনি সেনবার্গ যশোরে প্রবেশ করেন। যশোর মুক্ত হওয়ায় বাঙালীরা বাসের উপর উঠে নৃত্য করে, স্বাধীনতার শ্লোগান দিয়ে রাস্তায় নেমে আসে আবেগে একে অপরকে জড়িয়ে ধরে। আজ বাঙালীদের জন্য "যশোরে মুক্ত দিবস" গতকাল পর্যন্ত আট মাস যাবত এই শহরটি পাকিস্তান আর্মির দখলে ছিল। মুক্তিদাতারা ছিল ভারতীয় বাহিনী। তারাও বাঙালীদের মতই উচ্ছ্বসিত ছিল কিন্তু থেমে আনন্দ করার মত সময় তাদের ছিল না। তারা এগিয়ে চলছিল দক্ষিণপূর্বে আরেক শহর খুলনার দিকে। তবুও তারা তাদের সামরিক যান আর ট্যাঙ্ক থেকে বেড়িয়ে হাত নাড়ছিল, মানুষের সাথে হেসে ছবি তুলছিল।
যশোর খুলনার মাঝে একটি প্রধান সেতু, সীমান্ত থেকে প্রায় ২৩ মাইল ভিতরে পাকিস্তানী বাহিনী খুলনার দিকে চলে যাবার সময় সেটা ধ্বংস করে। সেতুটির ছয়টি স্পেনের মধ্যে পাঁচটি স্টিলের স্পেন নদীতে পড়ে যায়। সেখানে একটি পনটুন স্থাপনের জন্য তারা স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে কাঠের গুড়ি বসাতে ভারতীয় সেনাদের সাহায্য করে বাঙালীরা। প্রকৌশলীরা বাতাস দিয়ে বিশালাকার পনটুন টি ফোলালে জনতা সেটিকে ব্রিজের জায়গায় আনতে সাহায্য করেছিল। সবাইকে মনে হচ্ছিল দারুণ খুশি।
যুদ্ধের মাত্র ছয় দিনের মাথায় পূর্ব পাকিস্তান প্রায় পতনের মুখে যদিও পাকিস্তানীরা তা অস্বীকার করছিল। যুদ্ধের অগ্রগতি এবং পাকিস্তানের অস্বীকৃতির সংবাদ দিয়ে নিউ ইয়র্ক টাইমসের বিশেষ সংবাদদাতা সিডনি সেনবার্গ কোলকাতা থেকে ভারতীয় পূর্বাঞ্চলের কমান্ডার ল্যাফটেনেন্ট জেনারেল জগজিৎ শিং অরোরা'র বরাতের লেখেন, ভারতীয় বাহিনী শত্রুদেরকে কোণঠাসা করে পূর্ব পাকিস্তানের রাজধানী ঢাকার দিকে নিয়ে গেছে।
জেনারেল অরোরা সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে বললেন যে তিনি নদী পার হতে বেশি দিন অপেক্ষা করতে চান না। বললেন, "আমরা একটা পরিকল্পনা করেছি" পশ্চিম দিক থেকে তার বাহিনী মাগুরা দখল করে একটু সামনে এগিয়ে ছোট্ট নদী মধুমতীর কাছে অবস্থান করছে, এই নদীতে চলাচল করা ফেরি পাকিস্তানী বাহিনী ধ্বংস করেছে। ভারতের অগ্রগামী বাহিনী গোয়ালন্দ ঘাট থেকে ২২ মাইল দূরে মেঘনা নদীর পার হওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে। সেখান থেকে ঢাকা ৩৫ মাইলের মত দূরে। ভারত মেঘনা নদী পাশে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ শহর আশুগঞ্জ, চাঁদপুর এবং দাউদকান্দি দখল করেছে। এইসব শহর ঢাকা থেকে ২৫ মাইলেরও কম দূরত্বে।
পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডার ইন চীফ গতকাল কুমিল্লা শহর ঘুরে দেখেন। তিনি বলেন—যখন তার হেলিকপ্টার এয়ারফিল্ডে নামলো তখন প্রায় ২০০০ মানুষ সেখানে জড় হয়, তারা তাকে ছিনিয়ে নেয়, হাত মেলাতে থাকে, কোলাকোলি করতে থাকে, জড়িয়ে ধরে, আনন্দে কাঁদতে থাকে। এক পর্যায়ে তারা তাঁকে কাঁধে তুলে নিয়ে নাচতে থাকে। সিডনি সেনবার্গ আরও জানান যে ভারতীয় সেনারা পাক সেনাদের কুমিল্লা শহর থেকে ১৫ মাইল দূরে সেনানিবাস ঘেরাও করে রেখেছে।
ডিসেম্বরের ১৪ তারিখ। সেটা ছিল ভারত –পাকিস্তান যুদ্ধের ১১ তম দিন যখন ভারতীয় বাহিনী চারিদিক দিয়ে পূর্ব পাকিস্তানের রাজধানী ঢাকাকে ঘিরে ফেলেছে। তারা তখন ঢাকা থেকে প্রায় ছয় মাইল দূরে অবস্থান করছিল। পাকিস্তানী সৈন্যরা তখন নিজেদের গুটিয়ে নিতে ব্যস্ত। কোন কোন স্থানে বিচ্ছিন্নভাবে সেনারা আত্মসমর্পণ করছে। এই দিনেই পাকিস্তানকে সহযোগিতাকারি পূর্ব পাকিস্তানে বেসামরিক গভর্নর হিসাবে ১৯৭১ সালের ৩১ আগস্ট নিয়োগ প্রাপ্ত গভর্নর ডা. আবদুল মোতালেব মালিক (এ এম মালিক) তার মন্ত্রীসভাসহ পদত্যাগ করেন। তার মন্ত্রীসভার অন্যান্য সদস্যরা ছিলেন—আবদুল মোমেন খান, সৈয়দ আজিজুল হক, ফজলুল কাদের চৌধুরী, খান এ সবুর, ইউসুফ আলী চৌধুরী, সুলতাউদ্দিন আহমেদ, আবদুল জব্বার খান, গোলাম আজম এবং পীর মহসীনউদ্দিন। ভারতীয় মিগ-২১ যখন ডা. এ. এম মালিক বাসভবন গভর্নর হাউস ধ্বংস করছিল তখন তিনি কাঁপা কাঁপা হাতে বল পেন দিয়ে অফিসের একটা খসড়া কাগজে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার কাছে তার মন্ত্রীসভার পদত্যাগপত্র লিখলেন।
গভর্নর মালিক তার মন্ত্রীসভা পরিবেষ্টিত ভাবে তার পদত্যাগ পত্রটি জাতিসংঘের কর্মকর্তা জন কেলী এবং লন্ডনের অবজারভারের সাংবাদিক গাভিন ইয়ং–কে দেখান। তারা বিমান আক্রমণের সময় ডা. মালিকের সঙ্গে বাঙ্কারে আটকা পরেন। পাশেই একটি কক্ষে ড. মালিকের স্ত্রী এবং কন্যাও আটকা পরেছিলেন।
বিকেলে ভারতীয় মিগগুলিকে বিনা বাধায় ঢাকার আকাশে উড়তে দেখা যায়। এর আগে একটি ভারতীয় ডিসি-৩ বিমানকে উপর থেকে প্রচারপত্র ফেলতে দেখা যায়। প্রচার পত্রে অবাঙালী এবং অনিয়মিত বাহিনী আত্মসমর্পণ করলে জান এবং মালের নিরাপত্তার প্রদানের অঙ্গীকার করা হয়।
ঢাকা যখন প্রায় শত্রু মুক্ত তখন জাতিসংঘকে ব্যবহার করে যুদ্ধ থামানোর পাকিস্তানি প্রচেষ্টায় জুলফিকার আলী ভুট্টো তার সাধ্য মত চেষ্টা করেন। কিন্তু তাঁর সকল চেষ্টা ব্যর্থ হয়। তিনি বিফল মনোরথ হয়ে জাতিসংঘকে ভৎসনা করে ক্রন্দনরত অবস্থায় অধিবেশন ত্যাগ করেন।
জাতিসংঘ নিউ ইয়র্ক থেকে নিউ ইয়র্ক টাইমসের বিশেষ সংবাদদাতা হেনরি টেনার-এর সংবাদটির শিরোনাম ছিল "ভৎসনা করে ক্রন্দনরত ভুট্টোর পরিষদ ত্যাগ" পরে ভুট্টো তার হোটেলে সাংবাদিকের বলেন তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতাকামীদের সাথে একটি শর্তে আলোচনার পক্ষে যেখানে 'পাকিস্তান' একটি সত্তা হিসাবে থাকবে। পূর্ব এবং পশ্চিমের সম্পর্ক হবে খুব শিথিল। ঢাকার পতন হলে কিভাবে সেটা সম্ভব হবে এই প্রশ্নে তিনি বলেন, "আমার মনে হয় স্বাধীনতাকামীদের নেতারা এটাতে উৎসাহ দেখাবেন, তারা দরজা বন্ধ করবেন না।..." সাক্ষাৎকার চলার সময় মি. ভুট্টো তাঁর অষ্টাদশী তনয়ার বেনজির ভুট্টো'র কাছ থেকে ফোন পান যিনি হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে 'সরকার' নিয়ে অধ্যয়ন করছিলেন। কথোপকথনের এক অংশে তিনি তাঁকে বলেন, "আমি বর্জন করেছি কারণ এটি ছিল একটি প্রহসন, কিছু সত্যি আমার বলা দরকার ছিল। না আমি মেজাজ হারাইনি"
১৫ ডিসেম্বর পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডার ল্যাফটেন্যান্ট জেনারেল নিয়াজি আমেরিকার দূতাবাসের মাধ্যমে ভারতীয় বাহিনীর কাছে যুদ্ধ বিরতির প্রস্তাব পাঠান। নয়া দিল্লীর আমেরিকান এমব্যাসির মাধ্যমে আজ বাংলাদেশে সময় ১৪৩০ ঘণ্টায় জেনারেল মানেকস যুদ্ধ বিরতি সংক্রান্ত যোগাযোগের নথি পান। ১৬ ডিসেম্বর। বিকেল ৪:৩১, সেই মাহেন্দ্র ক্ষণ। স্থান রেসকোর্স ময়দান। পাকিস্তানী সেনারা অনেক টালবাহানার পর বিনা শর্তে ভারত এবং বাংলাদেশের যৌথ বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণে সম্মত হয়। বুধবার গ্রিনিচ সময় ১১:৩০ থেকে ভারতীয় বোমা আক্রমণ বন্ধ রাখা হয়েছিল। সর্বশেষে সময় শেষ হওয়ার সামান্য আগে আত্মসমর্পণের বার্তা পাওয়া গেল।
ঢাকার প্রাণকেন্দ্র বিস্তীর্ণ ঘাস বিছান মাঠ যাকে রেসকোর্স বলা হয়, সেখানে পাকিস্তানী বাহিনী যুদ্ধ শুরু হওয়ার ১৩ দিন পর আজ আত্মসমর্পণ করে। এটি সেই রেসকোর্স যেখানে শেখ মুজিব ৭ মার্চ ঐতিহাসিক ভাষণ দেন, যে ভাষণে তিনি সামরিক আইনের অবসান এবং নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের আহ্বান জানান।
আজ কোন বক্তৃতা নেই, শুধু মাত্র ঘাসের উপর রাখা একটি ছোট টেবিলে ভারতীয় পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরার কাছে পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল এ এ এক নিয়াজি ৭০ হাজার সৈন্যসহ আত্মসমর্পণের আনুষ্ঠানিক কাগজে সাক্ষর করেন। আত্মসমর্পণের দলীল সাক্ষরের পর জেনারেল নিয়াজি একটি সাধারণ গাড়িতে এবং অরোরা স্টাফ গাড়িতে স্থান ত্যাগ করেন।
Comments