একুশের একাত্তর

টাঙ্গাইলে প্রথম শহীদ মিনার হয় ১৯৫৩ সালে

সেদিন শহরের বেশিরভাগ দোকান বন্ধ ছিল। এক পর্যায়ে পুলিশ ছাত্রদের মিছিলে লাঠিচার্জ শুরু করলে ছাত্ররা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। মিছিল ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে। পুলিশ মিছিল থেকে উপেন মালাকার, সামসুর রহমান খান, বদিউজ্জামান খান, নারায়ণ চন্দ্র বিশ্বাসসহ বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে। পুলিশের রাইফেলের বাঁটে আহত হন সৈয়দ নুরুল হুদা।
টাঙ্গাইলে ভাষা আন্দোলন
টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার। ছবি: সংগৃহীত

(ভাষা আন্দোলনের ৭১ বছর পূর্ণ হচ্ছে চলতি বছর। ভাষা আন্দোলনের একাত্তরতম বছরে ডেইলি স্টারের ধারাবাহিক বিশেষ আয়োজন 'একুশের একাত্তর'। ধারাবাহিক এই আয়োজনে ২১ দিনে ডেইলি স্টার প্রকাশ করবে ভাষা আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ ২১ জনপদের ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস। আজকের দ্বাদশতম পর্বে থাকছে টাঙ্গাইলের ভাষা আন্দোলনের চিত্র।)

ভাষা আন্দোলনের গণজোয়ার পৌঁছে গিয়েছিল টাঙ্গাইলেও। ১৯৪৮ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তান গণপরিষদে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দেওয়ার দাবি জানিয়ে গণপরিষদ সদস্য ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের প্রস্তাবের বিরুদ্ধে তমিজুদ্দিন খানের নেতৃত্বে মুসলিম লীগের সদস্যদের বিরোধিতা ও খাজা নাজিমুদ্দিনের বক্তৃতার পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মতো গর্জে উঠেছিল টাঙ্গাইলের ছাত্রসমাজও।

ঢাকায় আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কর্মসূচি ঘোষিত হওয়ার পর মার্চের প্রথম সপ্তাহে মুসলিম লীগ নেতা শামসুল হক মার্চের আন্দোলন বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনার জন্য ঢাকা থেকে টাঙ্গাইলে গিয়ে হাজির হন।

৮ মার্চ রাতে স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে ভাষা আন্দোলন বিষয়ে বৈঠক হয়। বৈঠকে নুরুল হুদাকে আহ্বায়ক, হযরত আলী শিকদার, সৈয়দ নুরুল হুদা ও নুরুল ইসলামকে সদস্য হিসেবে নির্বাচিত করে টাঙ্গাইলে গঠিত হয় ভাষা সংগ্রাম কমিটি।

১১ মার্চ কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে টাঙ্গাইলে ধর্মঘট পালনের সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছিল টাঙ্গাইলের শিক্ষার্থীরা। শহরের বেশ কয়েকটি পাড়া-মহল্লায় পোস্টার সেঁটে দেন করটিয়ার সা'দত কলেজের ছাত্ররা। একইসঙ্গে চোঙা দিয়ে প্রচারণা ও লিফলেট বিলি করে টাঙ্গাইলের ভাষা আন্দোলনকে এগিয়ে নিতে ব্যাপক ভূমিকা পালন করেছিল।

পোস্টার সাঁটানো ও ভাষা আন্দোলনের পক্ষে প্রচারণার জন্য পুলিশ বেশ কয়েকজন ছাত্র নেতা ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীকে আটক করে। তাদের মধ্যে ছিলেন আলী আকবর খোকা, উপেন মালাকার, সৈয়দ আবদুল মতিন, ফজলুর রহমান কায়সার প্রমুখ। তবে গণগ্রেপ্তার দমাতে পারেনি টাঙ্গাইলের ভাষা আন্দোলন।

১১ মার্চ সকাল ১১টার দিকে সৈয়দ নুরুল হুদা ও বদিউজ্জামানের নেতৃত্বে টাঙ্গাইলের করটিয়ার সা'দত কলেজের ছাত্ররা টাঙ্গাইল শহরে চলে আসেন। সেসময় অন্যান্য স্কুলকলেজের শিক্ষার্থীরাও রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে মিছিল নিয়ে পুরো শহর প্রদক্ষিণ করে। তাদের স্লোগান ছিল, 'রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই', 'আমাদের দাবি মানতে হবে/ দাবি না মানলে গদি ছাড়', 'মুসলিম লীগ মুর্দাবাদ' ইত্যাদি।

ভাষা শহীদদের স্মরণে ১৯৫৩ সালে নির্মিত টাঙ্গাইলের প্রথম শহীদ মিনার। ছবি: সংগৃহীত

সেদিন শহরের বেশিরভাগ দোকান বন্ধ ছিল। এক পর্যায়ে পুলিশ ছাত্রদের মিছিলে লাঠিচার্জ শুরু করলে ছাত্ররা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। মিছিল ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে। পুলিশ মিছিল থেকে উপেন মালাকার, সামসুর রহমান খান, বদিউজ্জামান খান, নারায়ণ চন্দ্র বিশ্বাসসহ বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে। পুলিশের রাইফেলের বাঁটে আহত হন সৈয়দ নুরুল হুদা।

১৫ মার্চ আন্দোলনকারীদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দীনের ৮ দফা সমঝোতা চুক্তি সই হলে চুক্তির শর্ত অনুযায়ী ঢাকার মতো টাঙ্গাইলে গ্রেপ্তারকৃত ছাত্ররা মুক্তি পেতে থাকেন। প্রথম পর্বের ভাষা আন্দোলন শেষেও টাঙ্গাইলে ভাষা আন্দোলনের পক্ষে নানান কর্মসূচি পালিত হয়।

১৯৫২ সালের ২৭ জানুয়ারি খাজা নাজিমুদ্দীনের 'উর্দুই হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা' ঘোষণার মধ্য দিয়ে পূর্ববঙ্গের অন্যান্য শহরের মতো টাঙ্গাইলের ছাত্রজনতাও বিক্ষোভে ফেটে পড়ে।

১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে সারাদেশে হরতাল ও বিক্ষোভ মিছিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ। টাঙ্গাইল মহকুমা সদরে কলেজ ছিল না। তাই স্কুল শিক্ষার্থীরা আন্দোলন গড়ে তুলতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে। একই সঙ্গে টাঙ্গাইল মহকুমা সদরের কাছে করটিয়ার সা'দত কলেজ ও মির্জাপুরের কুমুদিনী মহিলা কলেজের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন গড়ে তুলতে সাহায্য করেন।

২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্দোলনের মূল দিন হিসেবে ধরে নিয়ে ১৭/১৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকা থেকে টাঙ্গাইলে আসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ও ভাষাসংগ্রামী সোফিয়া খান।

টাঙ্গাইলে তিনি ছাত্রনেতা বদিউজ্জামান খান, সৈয়দ নুরুল হুদা, শামসুজ্জোহা ও নারায়ণ বিশ্বাসের সঙ্গে বৈঠক করে ২১ ফেব্রুয়ারি মূল আন্দোলনের দিনকে সফল করার পরামর্শ দেন। তিনি বেশ কয়েকজন রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে বৈঠক করে ঢাকায় ফিরে যান।

এরপরই টাঙ্গাইলের ভাষা সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক নুরুল হুদা ও ছাত্রনেতা বদিউজ্জামান খান শহরের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ এবং সা'দত কলেজের ছাত্রনেতাদের সঙ্গে নিয়ে আন্দোলনের কর্মসূচি চূড়ান্ত করেন।

পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে আন্দোলনকারীরা সেসময় গোপনে টাঙ্গাইল শহরের মন্টু মিয়ার বাসায় বৈঠক করতেন। এক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আবদুস সালাম খান, ফজলুর রহমান কায়সার, শামসুর রহমান খান শাজাহান, মির্জা তোফাজ্জল হোসেন মুকুল, আলী আকবর খান, ইসরাইল হোসেন, আবু সাইদ প্রমুখ।

মেয়েদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন জ্যোৎস্না, ঝর্ণা, সালেহা প্রমুখ।

আন্দোলন চালানোর খরচ সংগ্রহের জন্য ২ পয়সা মূল্যের কুপন ছাপানো হয়। জনসাধারণ চাঁদা হিসেবে কুপন নিয়ে ভাষা আন্দোলনের তহবিলে দান করেন।

২১ ফেব্রুয়ারি আন্দোলনের মূল দিন টাঙ্গাইলে শিক্ষার্থীদের মিছিলে শহর প্রকম্পিত হয়। শহরের সব স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে আসে। তাদের মধ্যে ছিলেন টাঙ্গাইলের বিন্দুবাসিনী বালক উচ্চ বিদ্যালয় ও বিন্দুবাসিনী বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

সা'দত কলেজের ছাত্ররা ক্যাম্পাস থেকে মিছিল নিয়ে কিছুটা ঘুরে গ্রামের ভিতর দিয়ে টাঙ্গাইল আসেন। কারণ শিবনাথ উচ্চ বিদ্যালয়ের আগে পুলিশ আন্দোলনকারীদের গ্রেপ্তার করতে ওঁৎ পেতে ছিল।

করটিয়া কলেজের ছাত্ররা শহরে পৌঁছামাত্র বাকি সব আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মনোবল বেড়ে যায়। তারা পুরো শহর প্রদক্ষিণ করে। মিছিলটির নেতৃত্ব দেন করোটিয়া কলেজের ছাত্রনেতা নুরুল হুদা। পরে করটিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনের মাঠে প্রতিবাদসভা আয়োজন করা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন আবদুস সালাম খান।

'করটিয়া, ৫ই মার্চ টাঙ্গাইলের দক্ষিণাঞ্চলের সমস্ত স্কুল কলেজের ছাত্রদের উদ্যোগে স্থানীয় করটিয়া হাইস্কুল প্রাঙ্গণে মৌ. রিয়াজউদ্দিন সাহেবের সভাপতিত্বে এক বিরাট সভা হয়। সভায় গণপরিষদের আগামী প্রথম অধিবেশনে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা না করিলে সকল পূর্ব পাক প্রতিনিধির পদত্যাগ, পূর্ব পাকিস্তানের বর্তমান মন্ত্রীসভার পদত্যাগ, গুলিবর্ষণ সম্পর্কে নিরপেক্ষ বেসরকারী তদন্ত কমিটি গঠন ও ক্ষমতার অপব্যবহারকারীদের আদর্শ শাস্তি, অগৌণে বন্দী ছাত্রদের মুক্তি এবং আহত ও শহীদ ছাত্রদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান করিয়া এবং পাকিস্তানের ধ্বংসমূলক কার্যকলাপ ও আন্দোলনের দৃঢ় প্রতিরোধের সংকল্প ঘোষণা করিয়া সভায় একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়।'

দৈনিক আজাদ

করোটিয়ায় ২১ ফেব্রুয়ারির কর্মসূচি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল দৈনিক আজাদ পত্রিকায়। প্রতিবেদনে বলা হয়, 'করটিয়া ২২শে ফেব্রুয়ারি। গতকল্য করটিয়া হাইস্কুল, করটিয়া হাই মাদ্রাসা ও করটিয়া কলেজের ছাত্রগণ ধর্মঘট পালন করিয়া বিভিন্ন ধ্বনীসহ এক বিরাট শোভাযাত্রা বাহির করে। শোভাযাত্রা বিভিন্ন স্থান প্রদক্ষিণ করিয়া হাইস্কুলের সম্মুখ প্রাঙ্গণে এক সভায় সমবেত হয়। খান আবদুছ ছালাম খান সভাপতিত্ব করেন। সভায় বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসাবে গ্রহণের দাবী জানাইয়া প্রস্তাব গৃহীত হয়।'

একই দিন মির্জাপুরের কুমুদিনী কলেজের ছাত্রীরাও সভার আয়োজন করে। সভায় সভাপতিত্ব করেন কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী কোহিনুর ইউসুফ শাহী। সভায় যথারীতি বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দেওয়া ও আরবি হরফে বাংলা লেখার বিরুদ্ধে প্রস্তাব গৃহীত হয়।

ঢাকায় পুলিশের গুলিতে ছাত্র হত্যার সংবাদ টাঙ্গাইল শহরে এসে পৌঁছায় ২১ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায়। সে সময় টাঙ্গাইলের আন্দোলনকারীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন।

২২ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইলের তৎকালীন পুলিশ প্যারেড ময়দানে (বর্তমানে পৌর উদ্যান) সমাবেশ হয়। এই নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল দৈনিক আজাদ পত্রিকায়।

সেই প্রতিবেদনে বলা হয়, 'টাঙ্গাইল, ২৩শে ফেব্রুয়ারি। নিরস্ত্র ছাত্র এবং জনসাধারণের উপর পুলিশের লাঠি চালনা ও গুলিবর্ষণের প্রতিবাদে এখানে বিরাট জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনা করা হয়।

২৪ ফেব্রুয়ারি মির্জাপুরে পালিত হয় হরতাল মিছিল ও প্রতিবাদসভা। ২৬ ফেব্রুয়ারি 'মির্জাপুরে পূর্ণ হরতাল' শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল দৈনিক আজাদ পত্রিকায়। প্রতিবেদনে বলা হয়, 'মির্জাপুর, ২৫শে ফেব্রুয়ারি, গতকল্য স্থানীয় সকল স্কুল ও মাদ্রাসায় ছাত্র এবং দোকানদারগণ পূর্ণ হরতাল করে। দুই হাজার লোকের এক সভায় বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করা এবং ছাত্রদের উপর গুলীবর্ষণের জন্য যাহারা দায়ী তাঁহাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানানো হয়।'

ভাষা আন্দোলনের উত্তাপ ক্রমশ ছড়িয়ে পড়েছিল টাঙ্গাইলের সমস্ত থানা, ইউনিয়ন থেকে প্রত্যন্ত গ্রামেও।

২৬ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইলের ভুঞাপুরের এম ই স্কুল, ভুঞাপুর হাইস্কুল, ভুঞাপুর কলেজ ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে রাস্তায় নেমে পুলিশের গুলির প্রতিবাদ জানায়। মিছিল শেষে ভুঞাপুর কলেজের বাংলার শিক্ষক সুলতাণ আহমদ ভূঁইয়ার নেতৃত্বে বিশাল সমাবেশ হয়। সমাবেশে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। ছাত্র হত্যায় দোষীদের বিচারের মুখোমুখি করতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি জানানো হয়।

২৭ ফেব্রুয়ারি ভুঞাপুরের আন্দোলনের সংবাদ দৈনিক আজাদ-এ প্রকাশিত হয়। ২৮ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইলের গোপালপুর ও ঝাওয়াইল ইউনিয়নে স্বতঃস্ফূর্ত হরতাল পালিত হয়। সেদিন ২ ইউনিয়নের স্কুল শিক্ষার্থীরা মিছিল বের করে। পরে ঝাওয়াইল হাটখোলা মাঠে জনসভার আয়োজন করা হয়।

কেবল ফেব্রুয়ারিই নয়, টাঙ্গাইলের ভাষা আন্দোলনের কর্মসূচি পালিত হয়েছিল মার্চ মাসেও। এর মধ্যে ৫ মার্চ করটিয়া হাইস্কুল প্রাঙ্গণে অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রদের উদ্যোগে বিশাল সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

১০ মার্চ দৈনিক আজাদ-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, 'করটিয়া, ৫ই মার্চ টাঙ্গাইলের দক্ষিণাঞ্চলের সমস্ত স্কুল কলেজের ছাত্রদের উদ্যোগে স্থানীয় করটিয়া হাইস্কুল প্রাঙ্গণে মৌ. রিয়াজউদ্দিন সাহেবের সভাপতিত্বে এক বিরাট সভা হয়। সভায় গণপরিষদের আগামী প্রথম অধিবেশনে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা না করিলে সকল পূর্ব পাক প্রতিনিধির পদত্যাগ, পূর্ব পাকিস্তানের বর্তমান মন্ত্রীসভার পদত্যাগ, গুলিবর্ষণ সম্পর্কে নিরপেক্ষ বেসরকারী তদন্ত কমিটি গঠন ও ক্ষমতার অপব্যবহারকারীদের আদর্শ শাস্তি, অগৌণে বন্দী ছাত্রদের মুক্তি এবং আহত ও শহীদ ছাত্রদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান করিয়া এবং পাকিস্তানের ধ্বংসমূলক কার্যকলাপ ও আন্দোলনের দৃঢ় প্রতিরোধের সংকল্প ঘোষণা করিয়া সভায় একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়।'

ভাষা শহীদদের স্মরণে ১৯৫৩ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইলে প্রথম শহীদ মিনার তৈরি হয়। টাঙ্গাইল পাবলিক লাইব্রেরির সামনে সেই শহীদ মিনারের গায়ে মার্বেল পাথরে খোদাই করে লেখা ছিল, '১৯৫২ সালের রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে নিহত শহীদদের স্মরণে স্তম্ভ।'

তথ্যসূত্র: ভাষা আন্দোলন টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া/ আহমদ রফিক

ভাষা আন্দোলন কোষ প্রথম খণ্ড/ এম আবদুল আলীম

২৫, ২৬, ২৭ ফেব্রুয়ারি ও ১০ মার্চ ১৯৫২ দৈনিক আজাদ

ahmadistiak1952@gmail.com

Comments

The Daily Star  | English

Political parties want road map to polls

Leaders of major political parties yesterday asked Chief Adviser Prof Muhammad Yunus for a road map to reforms and the next general election.

3h ago