ভ্রমণ
ভ্রমণ

বালির স্বল্প পরিচিত আকর্ষণীয় ৫ পর্যটন স্পট

বালি ঘুরতে গেলে পর্যটকদের ভিড়ে খেই হারানো লাগতেই পারে। তবে যারা বালির প্রাকৃতিক সব সৌন্দর্য্যকে একটু নিবিড়ভাবে উপভোগ করতে চান তারা চাইলে বালির এই ৫টি অপেক্ষাকৃত কম পরিচিত অসাধারণ জায়গাগুলো বেছে নিতে পারেন আপনার পরবর্তী ভ্রমণের জন্য।   
বালির স্বল্প পরিচিত আকর্ষণীয় ৫ পর্যটন স্পট
ছবি: সংগৃহীত

অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি ইন্দোনেশিয়ার বালি দ্বীপটিকে বলা হয় 'পৃথিবীর অন্তিম স্বর্গোদ্যান' বা 'দ্য লাস্ট প্যারাডাইস অন আর্থ'। অসাধারণ সব মন্দির, দিগন্ত বিস্তৃত ধানের ক্ষেত, সুন্দর সব ঝর্ণা আর আগ্নেয়গিরি, কী নেই এই বালিতে! আর এসব দর্শণীয় স্থান বালিকে করেছে বিশ্বব্যাপী পর্যটকদের কাছে এক অন্যতম আকর্ষণ। 

এ কারণে বালি ঘুরতে গেলে পর্যটকদের ভিড়ে খেই হারানো লাগতেই পারে। তবে যারা বালির প্রাকৃতিক সব সৌন্দর্য্যকে একটু নিবিড়ভাবে উপভোগ করতে চান তারা চাইলে বালির এই ৫টি অপেক্ষাকৃত কম পরিচিত অসাধারণ জায়গাগুলো বেছে নিতে পারেন আপনার পরবর্তী ভ্রমণের জন্য। 
 
মুন্ডুক

অতুলনীয় প্রাকৃতিক দৃশ্য আর  শ্বাসরুদ্ধকর সুন্দর সব জলপ্রপাত মুন্ডুককে অতুলনীয় করে তুলেছে। বালির অন্যতম বিখ্যাত মন্দির পুরা উলুন দানু ব্রাটান, দুর্দান্ত সব জলপ্রপাত যেমন বানিওমালা জোড়া জলপ্রপাত এবং মুন্ডুক জলপ্রপাত জায়গাটিকে দর্শণার্থীদের আকর্ষণের কেন্দ্রে রেখেছে। 

এ ছাড়া বালির সেরা কফিগুলোর কিছু এখানেই উৎপাদিত হয়। ঘুরতে ফিরতে তাই অসংখ্য কফি খামার চোখে পড়ে এখানে।

ঘুড়ে বেড়ানোর মতো চমৎকার সব জায়গা এবং সুযোগ-সুবিধা মুন্ডুক ভ্রমণকে করে তুলবে রোমাঞ্চকর। বাঞ্জার ন্যাচারাল হট স্প্রিংসহ মুন্ডুক ওয়াইল্ডারনেস ল্যান্ড রোভার অ্যাডভেঞ্চার যার অন্যতম উদাহরণ। এ ছাড়া এখানে হন্টেড উপত্যকার জলপ্রপাতে এটিভি ট্রেক আর মাউন্টেন বাইক ভ্রমণের অভিজ্ঞতা নিতে পারবেন যা আজীবন স্মরণীয় হয়ে থাকবে। 

নুসা পেনিদা

এশিয়া মহাদেশের একেবারে দক্ষিণপ্রান্তে অবস্থিত বালির এই ছোট্ট উপদ্বীপ নুসা পেনিদা। এখনো এটি বিশ্বব্যাপী পর্যটকদের খুব বেশি নজরে আসেনি বলেই এই দ্বীপটিতে গেলে দেখা পাবেন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের সবচেয়ে অকৃত্তিম রূপটির। সুন্দর সব প্রাকৃতিক দৃশ্য, উপহ্রদ, হিন্দু মন্দিরসহ এখানে পাবেন বেশ কিছু দর্শনীয় স্থাণ। এ ছাড়া কেলিংটন বিচ, এঞ্জেলা বিলাবং, ডায়মন্ড বিচ, ব্রোকেন বিচ-এর মতো জায়গাগুলো ইন্সটাগ্রাম-উপযোগী সুন্দর সব ছবি তোলার জন্য হতে পারে আদর্শ জায়গা।
 
সমুদ্রের নীচে আকর্ষণীয় প্রবাল-প্রাচীর আর মলা মাছ এই জায়গাটিকে করেছে ডাইভিং আর স্নোরকেলিংয়ের জন্য পুরো বালি দ্বীপের মধ্যে সবচেয়ে সেরা জায়গা। তাই অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমীরা ক্রিসটাল বে-সহ পুরো নুসা পেনিদায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ডাইভিং স্পটগুলোতেও চাইলে ঘুরে আসতে পারেন। 


 
তেগাল ওয়াঙ্গি বিচ গুহা এবং প্রাকৃতিক পুল

স্থানীয়রা তেগাল ওয়াঙ্গি বিচ গুহা ঘুরতে আসেন সবচেয়ে বেশি। পর্যটকদের কাছে এখনো জায়গাটি তেমন পরিচিত নয়। সূর্যাস্তের সময় গুহাটির সবচেয়ে মোহনীয় রূপ উপভোগ করতে পারবেন।


 
বেশিরভাগ ভ্রমণকারীই দিগন্তে সূর্য ডুবে গেলে ঘোরাফেরা শেষ করে চলে যান যদিও ঠিক এরপরই আকাশে বিচিত্র রঙের আবির সৃষ্টি করে অসাধারণ একটি দৃশ্যের। অন্য সব পর্যটকদের সঙ্গে সূর্যাস্তের পরপরই হোটেলে ফিরে গেলে এ দৃশ্য উপভোগ করা হতে আপনি বঞ্চিত হবেন।

গুহাটির নান্দনিক দৃশ্য আপনমনে উপভোগ করতে এবং প্রকৃতির আলো-আঁধারিতে নিজের চোখ ধাঁধাতে, সূর্য ডোবার পর ঠিক ১০ মিনিট অপেক্ষা করুন। আকাশ তখন লাল ও কমলা রঙের এক অপূর্ব মোহনীয় রূপ ধারণ করে। গাড়িতে চড়ে সেখানে যাওয়ার চেয়ে বাইকে করে ঘুরে বেড়ালে বিশাল আকাশের দিগন্তে নিজেকে হারিয়ে ফেলার প্রশান্তি পাওয়া যাবে।

নুসা সেনিনগান

কম জনসমাগম এবং স্বল্পোন্নত পর্যটন অবকাঠামোর কারণে, নুসা সেনিনগান অতীতের বালির কথা মনে করিয়ে দেয়। এই দ্বীপটি পৌঁছানো সহজ এবং এর নিকটবর্তী দ্বীপ নুসা লেম্বনগানের তুলনায় এখানে ভিড়ও বেশ কম। 

এখানে গেলে দ্বীপটির অন্যতম আকর্ষণ ব্লু লেগুন অবশ্যই ঘুরে আসবেন। আপনি যদি আপনার ভ্রমণকে আরও আনন্দদায়ক করতে চান তবে আপনি পুরো উপহ্রদ জুড়ে 'ফ্লাইং ফক্স' চড়তে পারেন। সিক্রেট বিচ, মাহানা পয়েন্ট এবং বিখ্যাত ইয়েলো ব্রিজ হলো এই দ্বীপের কিছু সুপরিচিত ল্যান্ডস্কেপ।

বেজি গুয়াং হিডেন ক্যানিয়ন

বালির সবচেয়ে সুন্দর অনাবিষ্কৃত প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের দেখা পেতে হলে যেতে হবে ছোট্ট গ্রাম সুকাওয়াতির উস নদীতে। এই স্পটটিতে ভ্রমণ করা খানিকটা কষ্টসাধ্য হতে পারে ঠিকই তবে একবার এখানে গেলে এর সৌন্দর্য্য আপনাকে ভ্রমণের সব কষ্ট ভুলিয়ে দেবে। 

আপনাকে প্রথমে একটি ট্যুর গাইড নিতে হবে। কারণ হাইকের প্রথম ৩ কিলোমিটারের জন্য আপনাকে নদী পার হতে হবে, একটু সাঁতার কাটতে হবে এবং নড়বড়ে পাথরে আরোহণ করতে হবে। বেশ রোমাঞ্চকর মনে হচ্ছে, তাই না? একবার এই গোপন উপত্যকায় প্রবেশ করলে এর অদ্ভুত আকারের সব পাথরের সৌন্দর্যের প্রশংসা করতে আপনি বাধ্য হবেন। শ্যাওলা আচ্ছাদিত এসব পাথরের পাশে তুলতে পারবেন অসাধারণ সব ছবি। আর ক্যানিয়নের শান্ত জলে পা ডুবিয়ে পুরো যাত্রার ক্লান্তি দূর করে সতেজ হওয়া যাবে নিমেষেই।  

অনুবাদ করেছেন নাফিসা ইসলাম মেঘা
 

Comments