ঘুরে আসুন মৌলভীবাজারের এই ৫ স্থান

ছবি: রায়হান ভূঁইয়া

সিলেটের কথা শুনলেই যেন মনে মৌলভীবাজারের দৃশ্যপট ভেসে উঠে। সবুজ চা বাগান, শ্বাসরুদ্ধকর চমৎকার সব ঝর্ণা ও সবুজের সমারোহের জন্য পরিচিত মৌলভীবাজার নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের অন্যতম সুন্দর পর্যটন স্পট।

মৌলভীবাজার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং নৈসর্গিক আকর্ষণের এক অনন্য স্থান, যা ভ্রমণপিয়াসী আর সৌন্দর্যপিপাসুদের অন্তরকে শীতল করতে বাধ্য।

আপনাদের জন্য আমরা মৌলভীবাজারের ৫টি সুন্দর স্থানের একটি তালিকা তৈরি করেছি।

হাম হাম ঝর্ণা

প্রকৃতির এক অপরূপ সৃষ্টি হাম হাম ঝর্ণা। অ্যাডভেঞ্চারের স্বাদ নিতে চাইলে এটি হতে পারে অন্যতম স্থান। হাম হাম জলপ্রপাত যেতে হলে প্রথমে মৌলভীবাজার পৌঁছাতে হবে।

ব্যক্তিগত পরিবহন ব্যবহার করতে পারেন চাইলে। কিংবা কমলগঞ্জ বা শ্রীমঙ্গল থেকে একটি গাড়ি ভাড়া করে গন্তব্যে পৌঁছে যাওয়া যায়। সেখানে অনেক স্থানীয় গাইড আছেন যারা আপনাকে সঠিক দিক নির্দেশনা দিতে পারবেন। তবে এই জলপ্রপাত দেখতে কিন্তু কর্দমাক্ত পথ দিয়ে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা ট্রেকিং করতে হবে। মানসিক প্রস্তুতি রাখবেন।

রাজকান্দি সংরক্ষিত বন

বিশাল সব বৃক্ষে ঘেরা এবং বহু বিপন্ন প্রজাতির বাসস্থান মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার রাজকান্দি সংরক্ষিত বন। সবুজে মোড়ানো এই সমৃদ্ধ বন ৩টি বিট নিয়ে গঠিত-আদমপুর, কুরমা ও কামারছড়া।

আপনি যদি প্রকৃতিতে নির্জনতা ও প্রশান্তি খুঁজে থাকেন তবে রাজকান্দি আপনার জন্য উপযুক্ত। সেখানে অনেক কাছ থেকে বন্যপ্রাণী দেখতে পাওয়া যায়। আর স্থানটি পাখিদের কলতানে মুখরিত থাকে সবসময়।

রাজকান্দি রিজার্ভ ফরেস্টে যাওয়ার সময় সঙ্গে ট্যুরিস্ট গাইড নিয়ে যাওয়া ভালো। এই মায়াময় বনে যেতে খুব একটা ঝক্কি পোহাতে হয় না। নিজস্ব পরিবহনের ব্যবহার করেও যাওয়া যেতে পারে, আবার গণপরিবহনের ব্যবস্থাও রয়েছে। ব্যক্তিগত পরিবহনে গেলে কমলগঞ্জ উপজেলায় যেতে হবে এবং সেখান থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূর এগোলেই বন।

পরিকুণ্ড ঝর্ণা

মৌলভীবাজারের মাধবকুণ্ড জলপ্রপাতের কথা আমরা সবাই শুনেছি। কিন্তু এর কয়েকশো মিটার দূরে মৌলভীবাজারের আরেকটি রত্ন লুকিয়ে আছে। এটিই পরিকুণ্ড ঝর্ণা। বর্ষাকালে এর শান্ত জল ও নির্মল পরিবেশ পর্যটকদের মন জুড়িয়ে দেয়। এটি মূলত মৌসুমী ঝর্ণা হওয়ার কারণে এর সৌন্দর্য শুধু বর্ষাকালেই উপভোগ করা যায়।

পরিকুণ্ড ঝর্ণা পরিকুণ্ড ইকোপার্কের ভেতর অবস্থিত। এটি মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত থেকে খুব বেশি দূরেও নয়। মৌলভীবাজারে পৌঁছানোর পর বড়লেখা উপজেলা থেকে অটোরিকশা নিয়ে সরাসরি মাধবকুণ্ড ইকোপার্কে যাওয়া যাবে। আর সেখানেই দেখা মিলবে পরিকুণ্ড ঝর্ণার।

মাধবপুর লেক

পাহাড় ও চা বাগানের পাশে মাধবপুর লেক যেন সৌন্দর্যের এক লীলাভূমি। বর্ষাকালে এর রূপ বেড়ে দ্বিগুণ হয়। শ্রীমঙ্গল থেকে আনুমানিক ১৬ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত মাধবপুর লেক বিভিন্ন ঋতুতে বিভিন্ন আঙ্গিকে নিজেকে মেলে ধরে। টলটলে জল ও শাপলার উপস্থিতি মনকে প্রশান্তি এবং শান্তির অনুভূতিতে পূর্ণ করে দেয়।

পরিষ্কার নীল আকাশ, সবুজের প্রাচুর্য ও পাতার বুনো গন্ধ আপনার ইন্দ্রিয়কে উদ্বেলিত করবে। শহরের জীবনের একঘেয়েমি, ক্লান্তিমাখা সময়কে কয়েক ঘণ্টার জন্য ঝেড়ে ফেলতে যেতে পারেন মাধবপুর লেক।

বর্ষায় মাধপুর লেকের রূপ বেড়ে যায় কয়েক গুণ। মাধবপুর লেকে যেতে চাইলে শ্রীমঙ্গল যেতে হবে আগে। সেখান থেকে কলাবাগান পাড়া পরবর্তী গন্তব্য, যেখানে গাড়ি বা সিএনজিচালিত অটোরিকশা করে পৌঁছে যাওয়া যাবে। চাইলে একজন ট্যুর গাইডও ভাড়া করে নেওয়া যেতে পারে।

লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান

দৈনন্দিন কোলাহল ছেড়ে পাখি আর প্রকৃতির মধ্য দিয়ে নির্জনে হাঁটার ইচ্ছা? তাহলে লাউয়াছড়া উদ্যান আপনাকেই ডাকছে। মোহনীয় জাতীয় উদ্যানটি সারা বছরই পর্যটকদের সমাগমে প্রাণবন্ত থাকে। সেখানে বিরল প্রজাতির পাখি, বানর ও হরিণ দেখার সুযোগও পাওয়া যায়। এ ছাড়া সংরক্ষিত এই বন হাইকিং ও ট্রেকিংয়ের জন্যও দুর্দান্ত। চাইলে একজন স্থানীয় গাইডের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে।

লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান কমলগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত। সহজেই বাসে বা যেকোনো ব্যক্তিগত পরিবহনে সেখানে যাওয়া যাবে।

অনুবাদ করেছেন আসিয়া আফরিন চৌধুরী

Comments

The Daily Star  | English

Bangladesh, Japan for concluding EPA soon to boost economic, trade ties

Japanese PM Ishiba described Bangladesh as a long-standing friend and said that Japan would stand by Bangladesh in its endeavour for a democratic transition

2h ago