ধৈর্য হারিয়ে ফেলছেন?

ছবি: সংগৃহীত

জীবনে সাফল্য পেতে ধৈর্য ধরার বিকল্প নেই। যার ধৈর্য ধরার ক্ষমতা কম, তিনি অধৈর্য হয়ে অনেক সময় সিদ্ধান্ত নিয়ে নেন। তা পরে তার জন্য ক্ষতিকরও হতে পারে। অনেক সময় রাগ, হতাশা, ব্যর্থতায় কাবু হয়েও আমরা ধৈর্য হারিয়ে ফেলি। কিন্তু কঠিন পরিস্থিতিতেই সবচেয়ে বেশি ধৈর্য ধারণ করা প্রয়োজন। কারণ কথায় আছে, ধৈর্যের ফল মিষ্টি হয়।

কিন্তু ধৈর্য গুণটি নিজের মধ্যে ধারণ করা কি সহজ কাজ? 'আমাকে ধৈর্য দাও, এক্ষুণি দাও!' বললেই কিন্তু ধৈর্য চলে আসবে না! এর জন্য প্রয়োজন চর্চা। প্রয়োজন অভ্যাসের পরিবর্তন, চিন্তার পরিবর্তন।  

অনিশ্চয়তা মেনে নিতে শিখতে হবে

এ পৃথিবীর সবকিছুই আপেক্ষিক। যেখানে ১ সেকেন্ড পরে কী হতে যাচ্ছে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই, সেখানে কোন ঘটনাকে নিশ্চিত ধরা যাবে না। আমাদের সবার আগে এটা মেনে নিতে হবে।

জার্নাল অফ এক্সপেরিমেন্টাল সাইকোলজিতে প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় বলা হয়, জীবনের সকল ক্ষেত্রে ধৈর্য চর্চা করা বেশ কঠিন কাজ হলেও সুন্দর ভবিষ্যতের আকাঙ্ক্ষা এই কাজকে সহজ করে দেয়। এই পুরস্কারের আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে ধাপে ধাপে আমাদের ধৈর্য চর্চা করার ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়।

ধৈর্য চর্চা করতে লক্ষ্য রাখতে হবে-

  • জীবনের যে বিষয়গুলো আমরা চাইলে বদলাতে পারি বা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারি সেদিকে মনযোগী হওয়া। যেমন- রাগ কমানো, উত্তেজিত হয়ে গেলে চুপ থাকা।
  • যেকোনো পরিস্থিতিতে ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করলে অনেক কাজই সহজ হয়ে যায়। এতে ধৈর্য যেমন বাড়ে, মানসিক শান্তিও বজায় থাকে।
  • কোনোকিছু মানসিক শান্তি নষ্ট করলে কিংবা পরিস্থিতি আরও জটিল করে ফেললে সেই বিষয় ত্যাগ করার মত মানসিক শক্তি থাকতে হবে। তা হোক কোনো প্রিয় মানুষ কিংবা অভ্যাস।

প্রত্যাশা বাস্তবসম্মত রাখুন

আশাবাদী হওয়া নিঃসন্দেহে ভালো একটি গুণ। কিন্তু আপনার প্রত্যাশা যেন বাস্তবসম্মত হয় সেদিকেও লক্ষ্য রাখা জরুরি। কোনো কাজে আপনি যতটুকু শ্রম দিয়েছেন, সেই অনুযায়ী প্রত্যাশা রাখতে হবে। এক্ষেত্রে পরিবেশ, পরিস্থিতি, সময়ও বড় ভূমিকা রাখে। তাই নিজের আশা অনুযায়ীই সব ঘটবে এরকম মনোভাব পোষণ করা অনেক সময় নিজের মানসিক সুস্থতার জন্য ক্ষতিকর হয়ে দাঁড়ায়। ধৈর্যহারা হয়ে যেতে পারে।

অন্যের ওপর নির্ভরশীলতা নয়

এমন কোনো পর‌্যায়ে চলে যাওয়া উচিত নয় যেখানে অন্য ব্যক্তির ওপর নির্ভরশীলতা চলে আসে। এটি যেমন আত্মবিশ্বাস কমিয়ে দেয়, তেমনি অধৈর্য ও অসহিষ্ণু করে তোলে। এতে জীবনে হরহামেশাই নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।

আরও কিছু বিষয় মনে রাখা জরুরি

  • প্রতিকূল পরিবেশে নিজের চিন্তাভাবনা নিয়ে সচেতন থাকতে হবে। কোনোভাবেই মেজাজ হারালে চলবে না।
  • আপনাকে আনন্দ বা স্বস্তি দেয় এমনকিছুতে ফোকাস করে নিজেকে ধৈর্যশীল করতে হবে।
  • সহানুভূতিশীল হওয়ার চেষ্টা করুন, ক্ষমাশীল হোন। নিজের ব্যর্থতা না খুঁজে সম্ভাবনাময় দিকগুলো নিয়ে কাজ করুন।
  • যেকোনো বিষয়ে আপনার নিজের প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে কৌতূহলী হোন এবং নিজেকে জিজ্ঞেস করুন, 'আমি কি পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করে তুলছি?' এবং 'নিজের ও অন্যদের আরও ভাল করার জন্য আমি কী করতে পারি?'

যদি আপনার ধৈর্য ধরতে বেশি সমস্যা হয় বা একেবারেই পারছেন না বলে মনে হয়, সেক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে পারেন।

 

Comments

The Daily Star  | English

MRT-1 unlikely to be ready before 2030

Five years have passed since the country’s first underground metro rail project was approved, but construction of the key structure has not yet begun.

9h ago