ডেস্টিনেশন ওয়েডিংয়ের জন্য বেছে নিতে পারেন যেসব জায়গা

ডেস্টিনেশন ওয়েডিংয়ের প্রচলন আমাদের দেশে নতুন হলেও বহির্বিশ্বে এই ধারণা বেশ পুরনো। শহর থেকে দূরে নির্মল পরিবেশে কিংবা কোনো বিশেষ স্থান নির্বাচন করে বিয়ে করে থাকেন অনেকেই। তারকাসহ বিভিন্ন খ্যাতিমান ব্যক্তিদের এমন বিয়ের আয়োজন গণমাধ্যমে দেখে বর্তমানে এই ধারার বিয়ের সঙ্গে সবাই বেশ পরিচিত। সম্প্রতি বাংলাদেশেও এ ধরনের বিয়ের প্রচলন বাড়ছে।
ছবি: সংগৃহীত

ডেস্টিনেশন ওয়েডিংয়ের প্রচলন আমাদের দেশে নতুন হলেও বহির্বিশ্বে এই ধারণা বেশ পুরনো। শহর থেকে দূরে নির্মল পরিবেশে কিংবা কোনো বিশেষ স্থান নির্বাচন করে বিয়ে করে থাকেন অনেকেই। তারকাসহ বিভিন্ন খ্যাতিমান ব্যক্তিদের এমন বিয়ের আয়োজন গণমাধ্যমে দেখে বর্তমানে এই ধারার বিয়ের সঙ্গে সবাই বেশ পরিচিত। সম্প্রতি বাংলাদেশেও এ ধরনের বিয়ের প্রচলন বাড়ছে।

অনেকেই ভেবে থাকেন ডেস্টিনেশন ওয়েডিং কোনো একটি নির্দিষ্ট শ্রেণির মানুষের জন্য বা যাদের বিশেষ অর্থবিত্ত রয়েছে তাদের জন্য। আবার অনেকে ঝামেলা মনে করে এমন বিয়ের পরিকল্পনা করেন না। তবে বাস্তবতা ভিন্ন রকমের। একটু পরিকল্পনা করে নিলে সহজেই ডেস্টিনেশন ওয়েডিংয়ের আয়োজন করা যায়।

বর-কনের এই বিশেষ দিনটিকে ডেস্টিনেশন ওয়েডিংয়ের সাহায্যে কীভাবে ভিন্ন মাত্রায় নিয়ে যাওয়া যায় তারই বিস্তারিত আলোচনা করছি আজকের লেখায়।

ঢাকার আশেপাশের রিসোর্ট

ঢাকার পাশে যারা ডেস্টিনেশন ওয়েডিংয়ের পরিকল্পনা করেন তাদের জন্য আছে ঢাকার পাশের রিসোর্টগুলো। গাজীপুরে বেশকিছু রিসোর্ট আছে যেখানে সুন্দরভাবে এ ধরনের আয়োজন সম্ভব। ঢাকার কাছে হওয়ায় কনে চাইলে মেকআপ আর্টিস্টের কাছ থেকে ঢাকাতেই সেজে বিয়ের ভেন্যুতে যেতে পারেন।

রিসোর্টে ডেস্টিনেশন ওয়েডিং কিছুটা ব্যয়বহুল। তবে সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে যদি করা যায় তাহলে খরচ অনেকটাই কমিয়ে আনা যাবে। যেমন অফ সিজনে রিসোর্টগুলোতে অনেক বেশি ডিসকাউন্ট থাকে। যদি বেশ আগে থেকে অফ সিজনের কোনো তারিখে বুকিং দেওয়া যায় তাহলে বেশ সাশ্রয়ী হতে পারে এই আয়োজন।

গাজীপুরের পাশাপাশি পূর্বাচল ও মুন্সিগঞ্জের আশেপাশের বিভিন্ন রিসোর্টগুলোতেও কম বাজেটের মধ্যে বিয়ের আয়োজন করা সম্ভব। সেগুলোতে ৭০ হাজার থেকে আড়াই লাখ টাকা পর্যন্ত বুকিং খরচ হয় সিজনভেদে।

সমুদ্রে বিয়ের স্বপ্নিল আয়োজন

যদি আপনার বিয়ের আয়োজনে খুব বেশি অতিথি না থাকে এবং আপনি যদি হন সমুদ্র অনুরাগী, তাহলে সমুদ্রের আশেপাশে বিয়ের পরিকল্পনা হতে পারে আদর্শ। তবে সমুদ্রে বিয়ের পরিকল্পনায় কিছু বিষয় বিবেচনা করা বিশেষভাবে জরুরি। ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট, অতিথির তালিকা, তাদের টিকিট বুকিং, সবার পোশাক ও থাকার ব্যবস্থা কী হবে সেগুলো আগেই ভেবে নিতে হবে। সমুদ্রে পরিকল্পনার ক্ষেত্রে যত কম মানুষ অংশ নেবেন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন ততটাই সহজ হবে।  

সেন্টমার্টিন, কক্সবাজার ও কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত হতে পারে আপনার ভেন্যু। এরমধ্যে সেন্টমার্টিন হবে বিশেষভাবে আকর্ষণীয়। তবে মনে রাখতে হবে সেন্টমার্টিনে খুব বেশি মানুষের আয়োজন করা কষ্টকর। এ ছাড়া মেকআপ আর্টিস্ট, ফটোগ্রাফার ও বিয়ের অন্যান্য আয়োজন করতে কিছুটা ঝমেলায় পড়তে হতে পারে। কক্সবাজারে অনেক বেশি হোটেল ও রিসোর্ট থাকায় সেখানে বিয়ের আয়োজন করা কিছুটা সহজ। এ ছাড়া ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট যারা থাকেন তারা সহজেই সেখানে অনেক ব্যবস্থা করে ফেলতে পারেন। কক্সবাজারের কিছু হোটেলের ব্যক্তিগত বিচ এরিয়া আছে। যেখানে কিছুটা অর্থ ব্যয় করে সুন্দর বিয়ের আয়োজন করা সম্ভব।

পাহাড়ে বিয়ে

পাহাড়ে বিয়ের আয়োজনের আলোচনা হলে সবার আগে মনে আসবে বান্দরবানের কথা। বান্দরবানে বেশ কিছু হোটেল ও রিসোর্ট রয়েছে। সেখানে ডেস্টিনেশন ওয়েডিংয়ের আয়োজন সুন্দরভাবেই সম্ভব। সেইসঙ্গে কাপ্তাই লেকও বেশ ভালো স্থান। সিলেট বা শ্রীমঙ্গলেও সুন্দর কিছু রিসোর্ট আছে, যেখানে পাহাড়ের পাশে মনোরম পরিবেশে হতে পারে বিয়ের আয়োজন। তবে বিয়ের কারণে পাহাড়ের প্রকৃতির যেন কোনো ক্ষতি না হয় তা খেয়াল রাখা বিশেষভাবে জরুরি।

লঞ্চে হতে পারে বিয়ের মঞ্চ

লঞ্চ হতে পারে ডেসটিনেশন ওয়েডিংয়ের চমৎকার একটি ভেন্যু। নদীর মাঝে অতিথিদের নিয়ে লঞ্চেই সুন্দর আয়োজন করা সম্ভব। যাদের রিভারক্রুজ বা লঞ্চে পিকনিকের সুযোগ হয়েছে তাদের জন্য এগুলো নতুন না। খরচও খুব বেশি নয়। যদি নদীর প্রতি বিশেষ আকর্ষণ থাকে তাহলে এই এই আয়োজন আপনার জন্যই।

গ্রামের কোলাহলে

কেউ চাইলে গ্রামের বাড়িতে খোলা জায়গায় বিয়ের আয়োজন করতে পারেন। সরিষার মৌসুমে যদি বিয়ে করেন তাহলে তো কোনো কথাই নেই। গ্রামের বিয়ের আয়োজনে খাবারের খরচটাই কেবল মুখ্য বিষয় থাকবে। সেক্ষেত্রে বেশ কম বাজেটে এই ধরনের ডেস্টিনেশন ওয়েডিং সম্ভব। খালি জমি, পুরনো বাড়ি কিংবা কোনো মাঠ বা দিঘির পাড়েও করতে পারেন বিয়ের আয়োজন। নদী বা পুকুরের ওপর করতে পারেন ভাসমান কোনো স্টেজ। নিজের ইচ্ছেমতো করে সাজিয়ে নিতে পারেন আপনার বিয়ের ভেন্যু। 

পঞ্চগড়ে অক্টোবর থেকে নভেম্বর মাসে কঞ্চনজঙ্ঘার দেখা মেলে। চাইলে সেই পরিবেশেও নির্বাচন করতে পারেন আপনার বিয়ের জন্য। নারায়ণগঞ্জের সাবদি কিংবা ফুলের সেই গোলাপগ্রামও হতে পারে বিয়ের জন্য উপযুক্ত।

বিয়ের আয়োজনের রয়েছে নানা রকমের ব্যবস্থা। এই দিনকে সবচেয়ে বেশি উপভোগ্য করে তোলার জন্য চাই সঠিক পরিকল্পনা। তাই ডেস্টিনেশন ওয়েডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আগে কেমন খরচ করতে চান, কত দূরে যেতে চান এবং ভেন্যুটির সুবিধা-অসুবিধা বিবেচনায় আনুন।

Comments

The Daily Star  | English

Personal data up for sale online!

Some government employees are selling citizens’ NID card and phone call details through hundreds of Facebook, Telegram, and WhatsApp groups, the National Telecommunication Monitoring Centre has found.

3h ago