শিশুর আবদার রক্ষায় করণীয়

শিশুদের আবদারের কোনো শেষে নেই। প্রতিদিন তাদের নতুন নতুন আবদার তৈরি হয়। তবে, এজন্য তাদের দোষারোপ করা উচিত নয়। হয়তো তাদের আবদার আপনার ওপর চাপ সৃষ্টি করে বলে সবসময় হ্যাঁ বলেন। কিন্তু, বাস্তবতা হলো শিশুর সব দাবির সঙ্গে হ্যাঁ বলা সম্ভব হয় না। আবার সবসময় না বললে শিশুর মাঝে নেতিবাচক প্রভাব তৈরি হয়। এ কারণে শিশুর সঙ্গে আপনার দূরত্বও তৈরি হতে পারে।

তবে, কিছু কৌশল আছে যা আপনাকে এ ব্যাপারে সহায়তা করতে পারে। অর্থাৎ শিশুকে সবসময় না না বলে বরং সে কী করবে এবং কী করবে না তা শেখাতে পারেন।

সহজ জিনিসকে হ্যাঁ বলুন

সহজ জিনিস থেকে হ্যাঁ বলা শুরু করুন। যেমন- চকলেটের দ্বিতীয় টুকরা, পার্কে যাওয়া, বৃষ্টিতে খেলা, তাদের প্রিয় খেলনা পাওয়া ইত্যাদির মতো ছোট ছোট আবদারগুলোকে হ্যাঁ বলুন। আর, হ্যাঁ বলার অভ্যাস শিশুর সঙ্গে আপনার সম্পর্ককে অনেক দূর নিয়ে যাবে। তাই, আপনি যদি সব সময় না বলতে অভ্যস্ত হন তবে এই কৌশলের সহায়তা নিন। আর সহজে পূরণ করা যায় এমন ইচ্ছেকে হ্যাঁ বলে শিশুকেও অবাক করে দিন।

হ্যাঁ বলুন, কিন্তু সীমা নির্ধারণ করুন

শিশুরা কখনো কখনো এমন কিছু দাবি করতে পারে, যা তাদের স্বাস্থ্য এবং সুস্থতাকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। যেমন- মোবাইল ফোনে গেম খেলা, স্ক্রিনে দীর্ঘ সময় থাকা, খুব বেশি চিনিযুক্ত খাবার খাওয়া বা এমন জিনিস কেনা যা তাদের প্রয়োজন না। এক্ষেত্রে যখন আপনি হ্যাঁ বলবেন তখন নিয়ম ও সময়কে সীমাবদ্ধ করে দিনে। ওকে বলে দিনে ফোনে গেম খেললে কতক্ষণ খেলতে পারবে। একইভাবে, যদি প্রিয় খাবার খেতে চায় তবে আগেই বলে দিন খুব শিগগির সে এটা আর পাবে না। এভাবে তার মধ্যে রুটিন মাফিক চলার প্রবণতা তৈরি হবে এবং নিজের স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতনতা বাড়বে।

কেন হ্যাঁ বলছেন তার কারণ বলুন

হ্যাঁ বলা এত সহজ হওয়া উচিত নয়। আপনার সন্তানের অবশ্যই জানা উচিত কেন আপনি তার আবদারে রাজি হচ্ছেন। আপনি কেন হ্যাঁ বলছেন তার যৌক্তিক কারণ বলুন। যেমন- যদি সে বন্ধুদের সঙ্গে খেলতে যেতে চায়, তাহলে তাকে সময়মতো হোমওয়ার্ক শেষ করতে বলুন। হোমওয়ার্ক শেষ হলে তার প্রশংসা করুন এবং খেলার ব্যাপারে 'হ্যাঁ' বলুন। তাহলে সে বুঝবে সময়মতো হোমওয়ার্ক করলে বাকি সময়টুকু খেলতে পারবে। একইভাবে, যদি সে দেরি করে বিছানায় যেতে চায় তাহলে এর ক্ষতিকর দিকগুলো তার কাছে তুলে ধরুন। এভাবে তার মধ্যে মননশীলতার বিকাশ হবে।

শব্দ চয়নে সতর্কতা

হ্যাঁ মানে সবসময় 'হ্যাঁ' বলা নয়। আপনার সন্তান যদি এমন কিছু দাবি করে যা ওই মুহূর্তে পূরণ করতে পারবেন না। সেক্ষেত্রে তাকে না বলার পরিবর্তে বুঝিয়ে বলুন। যেমন- দৌড়াবে না বলার পরিবর্তে বলুন, তুমি হাঁটতে পারো। একইভাবে, চিৎকার ও চেচামেচিতে না বলার পরিবর্তে বলুন- চিৎকার না করে আপনার কাজে সাহায্য করতে পারবে কিনা। কোনো প্রাণীকে আঘাত করা বন্ধ করতে বলার পরিবর্তে তাদের দয়ালু হতে বলুন। এই কথাগুলো কেবল আপনাকে শিশুর কাছে ইতিবাচক হিসেবে উপস্থাপন করছে না, বরং তাকে কী করতে হবে আর কী করতে হবে না তা বলে দিচ্ছে।

Comments

The Daily Star  | English

Make right to vote a fundamental right

The Constitutional Reform Commission proposes voting to be recognised as a fundamental right, so that people can seek legal remedies if it is violated.

14h ago