তেতো শাক খাবেন যে কারণে

তেতো শাকের পুষ্টিগুণ
ছবি: সংগৃহীত

দৈনন্দিন খাদ্য তালিকার একটি বড় অংশ জুড়ে থাকে শাকসবজি। ভিটামিন ও মিনারেলসের চাহিদা পূরণে শাকসবজি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বিশেষজ্ঞরা নিয়মিত বিভিন্ন ধরনের শাক ও সবজি খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। দেখা যায়, প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় সবজি থাকলেও শাক নিয়মিত খাওয়া হয় না।

আর শাক যদি হয় খেতে তেতো তাহলে সেটি থাকে অপছন্দের তালিকায়। কিন্তু তেতো শাকের রয়েছে অনেক পুষ্টি উপকারিতা যা আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে কাজ করে।

আজ জানব তেতো শাকের পুষ্টি উপকারিতা সম্পর্কে। এ বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন ইবনে সিনা ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড কন্সালটেশন সেন্টারের পুষ্টিবিদ নুসরাত জাহান

তিনি বলেন, তেতো খাবারে রয়েছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান। তেমনি তেতো শাক ও অনেক ঔষধি গুণসম্পন্ন এবং ভীষণ উপকারী শরীরের জন্য। তেতো শাকগুলোতে পাওয়া যায়  ভিটামিন এ,সি, বি কমপ্লেক্স, ক্যালসিয়াম ম্যাগনেসিয়াম, বিটা-ক্যারোটিন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ইনফ্লেমেটরি উপাদান। তেতো শাক খেলে শরীরের সামগ্রিক উন্নয়ন বৃদ্ধি পায় এবং মুখের রুচিও বাড়ে।

চলুন জেনে নেই কয়েকটি তেতো শাকের বিভিন্ন উপকারিতা।

নিম পাতার শাক

নিম গাছের পাতা শাক হিসেবে খাওয়া হয়। এটি সেদ্ধ করে বা হালকা তেলে ভেজে খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য নিম শাক উপকারী। নিয়মিত নিম পাতা খাওয়ার অভ্যাস থাকলে ডায়াবেটিস রোগ নিয়ন্ত্রণে থাক। এর ফলে ব্লাড সুগারসহ অন্যান্য অনেক জটিলতা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। এ ছাড়াও রক্তনালিকে প্রসারিত করে রক্ত সংবহন উন্নত করতে সাহায্য করে।

পাট শাক

পাট গাছের কচি পাতাগুলোকে শাক হিসেবে খাওয়া হয়। এই শাকের মধ্যে রয়েছে ওমেগা-৩ ফ্যাট, লাইকোপিন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। লাইকোপিন শরীরের কোষগুলোকে অক্সিডেটিভ ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। পাট শাকে আরও রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেশিয়াম ও ক্যালসিয়াম, যা হাড় গঠনে সহায়ক এবং হাড়ের ক্ষয় রোধ করে। পাট শাক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।

হেলেঞ্চা শাক

এটিও একটি তেতো শাক। হেলেঞ্চা শাক যকৃতের জন্য ভীষণ উপকারী। যকৃতের সুস্থতায় এবং যকৃতের কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে খাদ্য তালিকায় হেলেঞ্চা শাক রাখা যেতে পারে। এছাড়াও এটি নিম্ন রক্তচাপের সমস্যা কমিয়ে রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে ভূমিকা রাখে।

ব্রাহ্মী শাক

তিতা স্বাদের এই শাকের রয়েছে বিশেষ কিছু ঔষধি গুণ। স্বরভঙ্গ, বসন্ত রোগ, শিশুদের ঠাণ্ডা-কাশিতে এ শাক খাওয়ালে উপকার পাওয়া যায়। এই শাক স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। নিয়মিত ব্রাহ্মী শাক খেলে স্মৃতিশক্তি ভালো থাকে।

থানকুনি ও তেলাকুচার শাক

গ্রামের বিভিন্ন জায়গায় এই লতা জাতীয় গাছ দুটি হয়ে থাকে। এগুলো শাক হিসেবেও খাওয়া যায়। এই শাকগুলোতে অ্যান্টি অক্সিডেন্টের পরিমাণ অনেক বেশি। তাই এটি দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক।

তবে তেলে ভাজলে এর গুণাগুণ নষ্ট হয়ে যায়। তাই সেদ্ধ করে খেলে এর উপকার পাওয়া সম্ভব।

গিমা শাক

প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ গিমা শাকের তেতো স্বাদের কারণে অনেকেরই অপছন্দের তালিকায় থাকে। এটি গিমা শাক খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য হজমের সমস্যা ভালো হয়। এটি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেও ভূমিকা রাখে, ইনসুলিনের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এ ছাড়া এজমা এসিটিটি মাসাল পেইনের মতো বিভিন্ন রোগ উপশমে সাহায্য করে শাকের পুষ্টি উপাদান।

মেথি শাক

মেথির মতো মেথির শাকও অনেক উপকারি। মেথি শাক পুষ্টি জোগাতে অতুলনীয়। এটি অ্যাসিডিটি, ডায়াবেটিস ইত্যাদি সমস্যা দূরে রাখে। তাই তিতা স্বাদের এই শাকটি আপনার খাদ্যতালিকায় রাখতে পারেন।

 

Comments

The Daily Star  | English
US election outcome’s likely impact on the Russia-Ukraine war

US election outcome’s likely impact on the Russia-Ukraine war

The endgame of the Ukraine war remains uncertain with US policy likely to be influenced by the outcome of the US election.

3h ago