বিটরুট কেন খাবেন

বিটরুটের পুষ্টিগুণ
ছবি: সংগৃহীত

বিটরুট নামের গাঢ় গোলাপি বা লালচে রঙের সবজিটি এখনও আমাদের দেশে খুব পরিচিত না। বাজারে দেখলেও কিনতে চান না অনেকে। শীতকালে এ সবজির উৎপাদন বেশি হলেও বর্তমানে সবসময়ই এ সবজির দেখা মেলে। বিভিন্ন পুষ্টিগুণ ও ঔষধিগুণ সম্পন্ন এ সবজিটিকে সুপারফুডও বলা হয়ে থাকে।

আসুন মিরপুর জেনারেল হসপিটাল অ্যান্ড ডায়াগনোস্টিক সেন্টারের পুষ্টিবিদ তারানা জান্নাত মুমুর কাছ থেকে জেনে নিই বিটরুট খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে।

বিটরুটের পুষ্টি উপাদান

বিটরুট ভিটামিন ও খনিজ উপাদানে ভরপুর। আয়রন, জিংক, আয়োডিন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, ফোলেট, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি৬, ভিটামিন সি ইত্যাদি উপাদান আছে এতে। এতে আরও রয়েছে প্রচুর ফাইবার ও অ্যান্টি অক্সিডেন্ট।

 

কীভাবে খাবেন

বিটরুট কাঁচা এবং রান্না করে দুভাবেই খাওয়া যায়। কাঁচা খাওয়া হলে বেশি উপকার পাওয়া যায়। বিটরুটের জুস, স্মুদি এবং সালাদ বানিয়ে খেতে পারেন। এ ছাড়া বিভিন্ন সবজির সঙ্গে যোগ করে রান্না করে খেতে পারেন।

উপকারিতা

  • উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্য বিটরুট অনেক উপকারী। এতে রয়েছে নাইট্রেটস, যা রক্তনালী প্রসারিত করে ও রক্তচাপ কমিয়ে দেয়। রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।
  • বিটে থাকা লুটেইন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট চোখের সমস্যার ঝুঁকি কমায়। এতে রয়েছে ফাইটোকেমিক্যাল, যা চোখের স্বাস্থ্য এবং চারপাশের স্নায়ু টিস্যুগুলোর শক্তি বৃদ্ধি করে।
  • এটি ফাইবার সমৃদ্ধ হওয়ায় হজম ক্ষমতা উন্নত করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা প্রতিরোধ করে।
  • বিটে আছে টালাইন নামক প্রদাহ বিরোধী যৌগ, যা প্রদাহ সৃষ্টিকারী রোগকে নিয়ন্ত্রণ করে।
  • এটি অন্ত্রে ভালো ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ বৃদ্ধি করে রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে।
  • বিটরুটে থাকা আয়রন রক্তে হিমোগ্লোবিন তৈরি করে রক্তস্বল্পতার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
  • বিট মস্তিষ্কের রক্ত চলাচল বাড়িয়ে দেয় এবং মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
  • কোলন ক্যানসার প্রতিরোধের জন্য বিট কার্যকরী সবজি।
  • পর্যাপ্ত পরিমাণে বিটরুটের জুস খেলে শরীরের টক্সিন দূর হয় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
  • রক্তে কোলেস্টেরল বেশি থাকলে বিটের জুস তা কমাতে সাহায্য করে।
  • এতে বিটেইন থাকায় যকৃতে চর্বি জমতে দেয় না। খুব সহজেই শরীরকে ডিটক্সিফাই করে।
  • বিটরুটের পুষ্টি উপাদান ত্বক সুন্দর রাখে এবং চেহারায় বার্ধক্যের ছাপ কমায়।

কারা খাবেন না

  • বিটরুট শরীরের জন্য অনেক উপকারী হলেও একটানা নিয়মিত না খেয়ে সপ্তাহে ৪-৫ দিন খাওয়া ভালো।
  • যাদের নিম্ন রক্তচাপের সমস্যা আছে তাদের জন্য বিটরুট ক্ষতিকর। কারণ এটি রক্তচাপ আরও কমিয়ে দেয়।
  • অনেকের বিটরুটে অ্যালার্জি হয়ে থাকে। যার ফলে ত্বকে ফুসকুড়ি, চুলকানি, জ্বালাপোড়া হতে পারে। অ্যালার্জির সমস্যা হলে এটি খাওয়া উচিত না।
  • যারা কিডনিতে পাথরের সমস্যায় ভুগছেন তাদের বিট খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
  • ডায়াবেটিস থাকলে বিট খাওয়া যাবে না। বিটের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স অত্যন্ত বেশি। ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যাবে দ্রুত।

তাই যারা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত তারা বিটরুট খাদ্যতালিকায় রাখতে চাইলে অবশ্যই চিকিৎসক বা পুষ্টিবিদের পরামর্শ নেবেন।

 

Comments

The Daily Star  | English

Trump says Iran has 'maximum' two weeks, dismisses Europe peace efforts

Israel's war with Iran entered its second week on Friday with the Israeli military chief warning of a "prolonged campaign"

2h ago