আপনি কি অ্যাসিডিটিতে ভুগছেন
আপনার কি পেট জ্বালাপোড়া করে? ঝাল, মশলা বা তেলজাতীয় খাবার খেলে পেট জ্বলে বা ব্যাথা হয়? তাহলে বুঝতে হবে আপনি অ্যাসিডিটিতে ভুগছেন।
সাধারণত পরিবারের বাইরে থাকা শিক্ষার্থী বা ব্যাচেলর চাকরিজীবীদের এ সমস্যায় ভোগার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। এসিডিটিকে গুরুত্ব সহকারে না নিলে এর মাত্রা বেড়ে গিয়ে আলসারের দিকে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজের গ্যাস্ট্রো-এন্টেরোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ মাজহারুল হকের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেল অ্যাসিডিটি দূর করার কিছু উপায়।
তেল-মশলাযুক্ত ও ঝালজাতীয় খাবার
বিভিন্ন হোটেল, ক্যান্টিনের খাবারে দেখা যায় তেল-মশলার পরিমাণ বেশি থাকে যা অ্যাসিডিটিকে তরান্বিত করে। সাধারণ খাবার ছাড়াও তেহারি, মোরগপোলাও, বিরিয়ানির মত খাবার নিয়মিত খেলে সমস্যা বাড়বে। রাস্তার পাশের বিভিন্ন ভাজা-পোড়া, ঝালজাতীয় খাবারও এড়িয়ে চলতে হবে। এসব খাবার অ্যাসিড রিফ্লাক্স ঘটায়। অর্থাৎ পাকস্থলির অ্যাসিড গলায় চলে আসে। তাই খালি পেটে বেগুনি, আলুর চপ অথবা বেশি ঝাল দিয়ে ফুচকা-বেলপুরি খাওয়ার অভ্যাস পরিহার করতে হবে।
ফাস্ট ফুড ও কার্বনেটেড বেভারেজ
তরুণদের মাঝে আজকাল ফাস্ট ফুডের জনপ্রিয়তা বেশি। অনেকেই ভাত-তরকারির বদলে এগুলো নিয়মিত খেতে পছন্দ করেন। কিন্তু এসবে থাকা উচ্চমাত্রার ফ্যাট আপনার অ্যাসিডিটির জন্য খুবই বিপজ্জনক। এগুলোর সঙ্গে কোকাকোলা, পেপসি জাতীয় ড্রিংকস পান করাও পরিহার করতে হবে। বরং বেভারেজের বদলে পানি খাওয়া কাজে দেবে।
ধূমপান-মদ্যপান
সিগারেট, মদ্যপান এমনিতেই স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। সিগারেটে থাকা নিকোটিন ও অ্যালকোহল অ্যাসিড রিফ্লাক্স ঘটায়। তাই ধূমপান বা মদ্যপান চলতে থাকলে এ সমস্যা বাড়বে।
সময়মত খাওয়া
খাওয়া-দাওয়ায় অনিয়ম অ্যাসিডিটির অন্যতম কারণ। আমাদের পাকস্থলিতে নির্দিষ্ট সময় পর পর পরিপাকে সহায়তাকারী অ্যাসিড নিঃসরিত হয়। যদি পেটে খাবার না থাকে তাহলে অ্যাসিড জমে ধীরে ধীরে পাকস্থলিতে ক্ষত সৃষ্টি করতে পারে। তাই সময়ানুযায়ী খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
টকজাতীয় খাবার
টক জাতীয় খাবারে সাইট্রাস অ্যাসিড বেশি থাকে। তাই যাদের অ্যাসিডিটির সমস্যা বেশি, তারা কমলা, লেবু, টমেটোসহ বিভিন্ন সাইট্রাসজাতীয় খাবার পরিহার করুন।
অনেকে পেট জ্বালাপোড়া করলে ব্যাথার ওষুধ বা গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ খান। মনে রাখতে হবে ব্যাথার সঠিক কারণ না জেনে ওষুধ খাওয়া ঠিক নয়। কারণ অ্যাসিডিটি ছাড়াও বিভিন্ন কারণে পেট জ্বালাপোড়া করতে পারে। তাই নিজ থেকে দীর্ঘদিন গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ না খেয়ে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। এ ধরনের ওষুধ আপনাকে সাময়িক স্বস্তি দিতে পারে, কিন্তু অনিয়ম চলতে থাকলে এগুলো অ্যাসিডিটি দূর করতে পারবে না।
মনে রাখা জরুরি অ্যাসিড রিফ্লাক্স বন্ধ করাটাই অ্যাসিডিটির অন্যতম সমাধান। তাই উপরিউক্ত পরামর্শের পাশাপাশি খাওয়ার পরপরই না শোয়া, ভরপেট না খেয়ে অল্প অল্প করে খাওয়া রিফ্লাক্স বন্ধে ভালো কার্যকরী।
Comments