ইরানের জনগণও কি ইসরায়েলের মতো শাসনব্যবস্থার পরিবর্তন চায়?

টানা চারদিন ধরে চলছে ইসরায়েল-ইরানের সংঘাত। সংঘাত নিরসনে আন্তর্জাতিক মহলের আহ্বানে পাত্তা না দিয়ে উভয় পক্ষই হামলার তীব্রতা বাড়িয়েছে।
দুই আঞ্চলিক শক্তির এই হামলা-পাল্টা হামলার মধ্যে ন্যাশনাল ইরানিয়ান আমেরিকান কাউন্সিলের সভাপতি জামাল আবদি বলেছেন, আগে থেকে যারা ইরানে শাসনব্যবস্থা পরিবর্তনের ধারণার প্রতি সহানুভূতিশীল ছিলেন, তারাও ইসরায়েলের এই হামলার পর তাদের মত বদলাবেন।
তিনি ওয়াশিংটন ডিসি থেকে আল-জাজিরাকে বলেন, 'আমি মনে করি এটি (ইরানে হামলা) নেতানিয়াহুর মারাত্মক ভুল।'
তিনি আরও বলেন, 'এতে কোনো সন্দেহ নেই যে ইরানের ইসলামী বিপ্লবে নেতৃত্ব দেওয়া শাসকশ্রেণীর গ্রহণযোগ্যতা তলানিতে পৌঁছেছে। ২০২২ সালে নারী স্বাধীনতার দাবিতে যে প্রতিবাদ হয়েছিল, সেটা ছিল ইরানিদের এই শাসনব্যবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়ার চাহিদার বিস্ফোরক বহি:প্রকাশ।'
আবদি বলেন, 'কয়েক দশক ধরে নেতানিয়াহু জোর দিয়ে বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উচিত (ইরানের) শাসনব্যবস্থা পরিবর্তনে জড়িত হওয়া। সেইসঙ্গে ইসরায়েলিরাও ইরানিদের ওপর আরও বেশি চাপ তৈরি করছে এবং ইসলামী প্রজাতন্ত্রকে দোষারোপ করে ইরানিদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি করছে, যেন এর দায় নাগরিকদেরই।'
তার মতে, প্রবাসী ইরানিদের অনেকেই দীর্ঘদিন ধরে তাদের আদি নিবাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি হামলাকে সমর্থন করে এসেছেন। তারা ভেবেছিলেন, ইসরায়েলের হামলার লক্ষ্য হবে শুধুই 'ইসলামী শাসকশ্রেণী সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও স্থাপনা'। সাধারণ ইরানি জনগণ এসব হামলায় প্রভাবিত হবে না বলেই ধরে নিয়েছিলেন তারা।
তবে সেই দৃষ্টিভঙ্গি এখন বদলে গেছে উল্লেখ করে আবদি বলেন, 'নেতানিয়াহু এখন ইরানকে বৈরুতে পরিণত করার কথা বলছেন। বৈরুতের ক্ষেত্রে যে কৌশল অবলম্বন করেছেন, সেই একই কৌশল ইরানেও ব্যবহার করতে চান নেতানিয়াহু। অর্থাৎ, তেহরানেও শিগগির আগুন জ্বলবে।'
'(ইরানিদের মধ্যে) যারা ইসরায়েলিদের বন্ধু ভেবেছিল, তারা এখন বুঝতে পারছে যে আমরা গাজায় যা দেখেছি, লেবাননে যা দেখেছি, এই অঞ্চলজুড়ে যা দেখেছি, সেই একই নিয়তি এখন ইরানিদের জন্য আসছে। এটা মুক্তি নয়, মৃত্যু,' যোগ করেন তিনি।
Comments