শপথের পর ‘বন্ধু' ট্রাম্পের সঙ্গে মোদির প্রথম ফোনালাপ, যা নিয়ে আলোচনা

ফোনে কথা বলেছেন মোদি-ট্রাম্প। কোলাজ ছবি: এএফপি
ফোনে কথা বলেছেন মোদি-ট্রাম্প। কোলাজ ছবি: এএফপি

প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রথমবারের মতো ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফোনালাপের পর আলোচনার বিস্তারিত সামাজিক মাধ্যম এক্সে প্রকাশ করেছেন মোদি।

গতকাল সোমবার দুই নেতা ফোনে আলোচনা করেন। এ বিষয়টি এএফপি, ডয়চে ভেলে, রয়টার্স ও দ্য হিন্দুর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। 

হোয়াইট হাউসের বিবৃতি

দুই রাষ্ট্রপ্রধানের আলোচনার পর হোয়াইট হাউস একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে।

দুই দেশের মধ্যকার সহযোগিতা সম্প্রসারণ ও গভীর করার বিষয়ে আলোচনা করেছেন দুই নেতা। তারা ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের নিরাপত্তা, মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপসহ আঞ্চলিক অনেক বিষয় নিয়েও আলোচনা করেছেন।

ডোনাল্ড ট্রাম্প ও নরেন্দ্র মোদি। ফাইল ছবি: এএফপি
ডোনাল্ড ট্রাম্প ও নরেন্দ্র মোদি। ফাইল ছবি: এএফপি

তারা যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যে শক্তিশালী বন্ধুত্বপূর্ণ ও কৌশলগত সম্পর্কের গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র-ভারত কৌশলগত অংশীদারত্ব ও ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় কোয়াড অংশীদারত্ব এগিয়ে নেওয়ার বিষয়ে নিজেদের অঙ্গীকারের প্রতিও গুরুত্ব আরোপ করেছেন দুই নেতা।

উল্লেখ্য, এ বছরের শেষ দিকে প্রথমবারের মতো কোয়াড শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করতে যাচ্ছে ভারত।

বস্তুত এই আলোচনা শেষেই নরেন্দ্র মোদির সম্ভাব্য ওয়াশিংটন সফর নিয়ে আলোচনা করেছেন দুই রাষ্ট্রনেতা।

তবে মোদি কবে যুক্তরাষ্ট্র যাবেন, তা এখনো জানানো হয়নি।

মোদির এক্স বার্তা

ফোনালাপের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া বার্তায় নরেন্দ্র মোদি বলেন, 'আমার প্রিয় বন্ধু প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলে আমি উচ্ছ্বসিত। (প্রেসিডেন্ট হিসেবে) তার ঐতিহাসিক দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য তাঁকে অভিনন্দন।'

ডোনাল্ড ট্রাম্প ও নরেন্দ্র মোদি। ফাইল ছবি: এএফপি
ডোনাল্ড ট্রাম্প ও নরেন্দ্র মোদি। ফাইল ছবি: এএফপি

ভারতের প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, 'পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট ও বিশ্বস্ত অংশীদারত্বের বিষয়ে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমাদের জনগণের কল্যাণ এবং বিশ্বশান্তি, সমৃদ্ধি ও নিরাপত্তার জন্য আমরা একসঙ্গে কাজ করব।'

ট্রাম্প-মোদি সম্পর্ক

ট্রাম্পের সঙ্গে মোদির বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের বিষয়টি সর্বজনবিদিত। প্রথম মেয়াদের প্রায় শুরু থেকেই ট্রাম্পের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখেছেন মোদি।

ট্রাম্প দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর প্রথম রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে মোদি তাকে অভিনন্দন জানান।

ওই বার্তায় ট্রাম্পকে মোদি 'ডিয়ার ফ্রেন্ড (প্রিয় বন্ধু)' বলে সম্বোধন করেছেন।

ডোনাল্ড ট্রাম্প ও নরেন্দ্র মোদি। ফাইল ছবি: এএফপি
ডোনাল্ড ট্রাম্প ও নরেন্দ্র মোদি। ফাইল ছবি: এএফপি

২০১৯ সালে ট্রাম্পের শাসনামলে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় নাগরিকদের এক সভায় মোদি ভাষণ দিয়েছিলেন। সেই সভার নাম ছিল 'হাউডি মোদি'।

২০২০ সালে ভারত সফরকালে মোদির এলাকা গুজরাটে এসে ট্রাম্প ভাষণ দিয়েছিলেন। সেই সভার নাম ছিল 'নমস্তে ট্রাম্প'। পুরনো সেই সুসম্পর্ককে আরো জোরদার করতে চাইছেন মোদি।

সোমবারের আলোচনায় এ বিষয়টি আরও একবার স্পষ্ট হলো।

ভারত-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক

যুক্তরাষ্ট্র ভারতের বিষয়ে আগ্রহী কারণ, এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলকে চীনকে টক্কর দিতে হলে ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা জরুরি। ভারতও চীনকে দেখাতে চায় যে, যুক্তরাষ্ট্র তার পেছনে আছে। এই পরিস্থিতিতে জো বাইডেনের প্রশাসনও ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে চলেছে। বাইডেনের আমলে মোদি সরকার যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সামরিক সরঞ্জাম কিনেছে।

তবে ট্রাম্পের নতুন শাসনামলে ভারত-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য সম্পর্ক কোন পথে যাবে, তা নিয়ে নানা মহলে আলোচনা আছে। কারণ, ট্রাম্প ভারতকে 'ট্যারিফ কিং' হিসেবে আগেই চিহ্নিত করেছেন।

ডোনাল্ড ট্রাম্প ও নরেন্দ্র মোদি। ফাইল ছবি: এএফপি
ডোনাল্ড ট্রাম্প ও নরেন্দ্র মোদি। ফাইল ছবি: এএফপি

ট্রাম্প যদি ভারতের পণ্য আমদানির ওপর বাড়তি শুল্ক ধার্য করেন, তাহলে ভারতের ব্যবসা মার খাবে বলেই বিশেষজ্ঞদের ধারণা। ইতোমধ্যে ট্রাম্প বেশ কয়েকটি তথাতকথিত মিত্র দেশের বিরুদ্ধে বড় আকারে শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন।

ভারতীয় সেনাবাহিনীর সাবেক লেফটেন্যান্ট জেনারেল ও সামরিক বিশেষজ্ঞ উৎপল ভট্টাচার্য ডয়চে ভেলেকে বলেন, 'চীনকে ঠান্ডা রাখতে যুক্তরাষ্ট্রের ভারতকে প্রয়োজন। চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য ভারতের যুক্তরাষ্ট্রকে প্রয়োজন। বাইডেনের সময়েও এই কূটনৈতিক সম্পর্ক অব্যাহত ছিল। তবে ট্রাম্প-মোদীর সুসম্পর্ক এই কূটনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে।'

 

Comments

The Daily Star  | English

US retailers lean on suppliers to absorb tariffs

Rather than absorbing the cost or immediately passing it on to consumers, many US apparel retailers and brands have turned to their suppliers in Bangladesh, demanding they share the pain

3h ago