পুতিনকে ফোন কলে যা বললেন ট্রাম্প

পুতিনের সঙ্গে ট্রাম্পের ফোন কলের কেন্দ্রে ছিল ইউক্রেন যুদ্ধ। ছবি: এএফপি
পুতিনের সঙ্গে ট্রাম্পের ফোন কলের কেন্দ্রে ছিল ইউক্রেন যুদ্ধ। ছবি: এএফপি

নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চান পুতিন। গত বৃহস্পতিবার এই তথ্য জানান তিনি। সেদিনই পুতিনকে ফোন করেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

আজ সোমবার ওয়াশিংটন পোস্টের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে এএফপি। 

বৃহস্পতিবার ফ্লোরিডায় মার-আ-লাগো এস্টেট থেকে পুতিনকে ফোন করেন ট্রাম্প।

ট্রাম্পের যোগাযোগ বিষয়ক পরিচালক স্টিভেন চিউং এই ফোনকলের বিষয়টি নিশ্চিত করেননি। এএফপিকে এক লিখিত বিবৃতিতে জানিয়েছেন, 'আমরা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও অন্যান্য বৈশ্বিক নেতার মধ্যে ব্যক্তিগত ফোন কল নিয়ে কোনো মন্তব্য করি না।'

ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে কয়েকটি সূত্রের কথা উল্লেখ করা হয়, যারা নাম না প্রকাশের শর্তে এই ফোন কলের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ট্রাম্পের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ এক সূত্র জানান, ফোন কলে পুতিনকে ইউক্রেনে যুদ্ধের মাত্রা আর না বাড়ানোর পরামর্শ দেন ট্রাম্প। একইসঙ্গে, ইউরোপে মার্কিন সেনাবাহিনীর শক্তিশালী উপস্থিতির বিষয়টি মনে করিয়ে দেন রিপাবলিকান পার্টির নেতা।

২০১৯ সালের জি২০ সম্মেলনের সাইডলাইনে ট্রাম্প-পুতিন। ফাইল ছবি: রয়টার্স
২০১৯ সালের জি২০ সম্মেলনের সাইডলাইনে ট্রাম্প-পুতিন। ফাইল ছবি: রয়টার্স

তবে সেনা উপস্থিতির বিষয়টিকে ট্রাম্প হুমকির আকারে উপস্থাপনা করেছেন কী না, সেটা প্রতিবেদনে স্পষ্ট করে বলা হয়নি।

দুই নেতা 'শিগগির ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান' ঘটানোর বিষয়ে আলোচনা করবেন বলে একে অপরকে কথা দিয়েছেন।

এ থেকে ধারণা করা যায়, ফোন কলটি সৌহার্দ্যপূর্ণ ছিল।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের শুরু থেকেই আলোচনায় রয়েছে এ বিষয়টি—ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হলে ইউক্রেন যুদ্ধের কি হবে?

রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ইউক্রেনের প্রতিরোধ অনেকটাই টিকে রয়েছে মার্কিন সহায়তার ওপর। অস্ত্র ও বিপুল পরিমাণ অর্থ দিয়ে যুদ্ধের প্রথম দিন থেকেই দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির পাশে থেকেছে জো বাইডেনের ডেমোক্র্যাটিক সরকার। বাইডেন, তথা ডেমোক্র্যাটিক পার্টির জনপ্রিয়তায় ভাটার পেছনে অতিরিক্ত ইউক্রেন প্রীতি অনেকটা দায়ী—এমনও বলেছেন অনেক বিশ্লেষক। 

অপরদিকে ট্রাম্প বরাবরই বলে এসেছেন, ইউক্রেনকে এত সাহায্য সহযোগিতা করার কোনো মানে নেই। এই যুদ্ধ থামানোও কোনো ব্যাপার না। নিজে প্রেসিডেন্ট হলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে থেমে যাবে যুদ্ধ, এমন দাবিও করেছেন ট্রাম্প। 

এএফপি জানিয়েছে, বুধবার ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলেছেন জেলেনস্কি। বহুল আলোচিত এই ফোন কলে ট্রাম্পের অন্যতম সহযোগী ধনকুবের ইলন মাস্কও যোগ দিয়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেন।

ট্রাম্পের ফিরে আসার সংবাদে রুশ সরকার সতর্ক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ রোববার বলেন, '(ট্রাম্পের জয়ের পর) ইতিবাচক হাওয়া বইছে। অন্তত তিনি সংঘাত নয়, শান্তি নিয়ে কথা বলছেন।'

ট্রাম্প ও তার মিত্ররা ইতোমধ্যে বেশ কয়েকবার ইউক্রেনের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক সহায়তা বন্ধের উদ্যোগ নিলেও তা ব্যর্থ হয়েছে।

ট্রাম্পের বড় ছেলে ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র শনিবার ইনস্টাগ্রামে একটি ছবি পোস্ট করেন। সেখানে দেখা যায়, ট্রাম্প ও জেলেনস্কি পাশাপাশি দাঁড়িয়ে। ছবির ক্যাপশনে বলা হয়: 'পিওভি (পয়েন্ট অব ভিউ): ৩৮ দিন পর আপনি আপনার নিয়মিত চাঁদার উৎস হারাতে চলেছেন।'

বিশ্লেষকদের মতে, দ্রুত যুদ্ধ নিরসনের যেকোনো চুক্তির কেন্দ্রে থাকবে রাশিয়া ইতোমধ্যে ইউক্রেনের যেটুকু ভূখণ্ড দখল করেছে, তার দাবি ছেড়ে দেওয়া। বিশেষত, ২০১৪ সালে অধিকৃত ক্রিমিয়া ফিরে পাওয়ার কোনো আশাই নেই।

Comments