নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য পদে ভারতকে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন

নিরাপত্তা কাউন্সিলের বৈঠকে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। ফাইল ছবি: সংগৃহীত
নিরাপত্তা কাউন্সিলের বৈঠকে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। ফাইল ছবি: সংগৃহীত

দীর্ঘদিন ধরেই জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে স্থায়ী সদস্য পদ চেয়ে এসেছে ভারত। সম্প্রতি, এই দাবি আরও জোরালো হয়েছে।

ভারতকে পূর্ণ সদস্য পদ দেওয়ার পক্ষে বক্তব্য রেখেছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ফ্রান্সের ইমানুয়েল মাখোঁ একই ধরনের যুক্তি দেন।

আজ শুক্রবার এই তথ্য জানিয়েছে এনডিটিভি

গতকাল বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে দেওয়া বক্তব্যে ভারতের দাবির পক্ষে সমর্থন জানান যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী। কয়েকদিন আগেই ভারতের দাবির পক্ষে যুক্তি দিয়েছেন বাইডেন ও মাখোঁ।

স্টারমার বলেন, নিরাপত্তা পরিষদে 'আরও বেশি দেশের প্রতিনিধিত্ব বাড়াতে হবে'।

বর্তমানে নিরাপত্তা পরিষদে পাঁচ স্থায়ী সদস্য ও ১০ অস্থায়ী সদস্য রাষ্ট্র রয়েছে। অস্থায়ী সদস্যরা নিজ নিজ অঞ্চল থেকে দুই বছরের মেয়াদে নির্বাচিত হয়।

স্থায়ী সদস্যরা হলো রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, চীন, ফ্রান্স ও যুক্তরাষ্ট্র। স্থায়ী সদস্যরা নিরাপত্তা পরিষদের যেকোনো সিদ্ধান্তে ভেটো দিতে পারে।

স্টারমার বলেন, 'আমরা চাই কাউন্সিলে আফ্রিকা থেকে স্থায়ী সদস্য অন্তর্ভুক্ত হোক। পাশাপাশি ব্রাজিল, ভারত, জাপান ও জার্মানিকেও স্থায়ী সদস্য করা উচিত। সঙ্গে নির্বাচিত সদস্যদের জন্য আসনও বাড়ানো প্রয়োজন।'

জাতিসংঘের ৭৯তম সাধারণ অধিবেশনে বক্তব্য রাখছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। ছবি: রয়টার্স
জাতিসংঘের ৭৯তম সাধারণ অধিবেশনে বক্তব্য রাখছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। ছবি: রয়টার্স

বুধবার নিরাপত্তা পরিষদে ভারতকে স্থায়ী সদস্য করার পক্ষে জোরালো যুক্তি দেন মাখোঁ।

'যতদিন পর্যন্ত নিরাপত্তা পরিষদের দরজা বন্ধ থাকবে এবং প্রতিটি পক্ষ শুধু তাদের নিজ নিজ স্বার্থ রক্ষা করবে, ততদিন আমরা সামনে এগিয়ে যেতে বাধার মুখে পড়ব। আসুন জাতিসংঘকে আরও কার্যকর করে তুলি। এ বিষয়ে প্রাথমিক উদ্যোগ হওয়া উচিত একে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক করে তোলা। এ কারণে, নিরাপত্তা পরিষদের পরিসর বাড়ানোর পক্ষে মত দিচ্ছে ফ্রান্স', বলেন তিনি।

তিনি বলেন, 'জার্মানি, জাপান, ভারত ও ব্রাজিলের স্থায়ী সদস্য হওয়া উচিত। সঙ্গে আফ্রিকার দুইটি দেশ, যা তারা নিজেরাই নির্ধারণ করবে।'

গত সপ্তাহে জো বাইডেনও ভারতের পক্ষে বক্তব্য দেন।

ওয়াশিংটনে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আলোচনায় বাইডেন উল্লেখ করেন, তিনি জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলের সংস্কার চান। তিনি দেখতে চান, নিরাপত্তা পরিষদসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বৈশ্বিক সংগঠনে ভারতের অংশগ্রহণ বাড়ুক।

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে লেবানন প্রসঙ্গে বৈঠক করছে নিরাপত্তা কাউন্সিল। ছবি: রয়টার্স
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে লেবানন প্রসঙ্গে বৈঠক করছে নিরাপত্তা কাউন্সিল। ছবি: রয়টার্স

নিরাপত্তা পরিষদে ভারতের স্থায়ী সদস্য পদের দাবি পূরণে সহায়তা করার আশ্বাস দেন বাইডেন। 

বেশ কয়েক দশক ধরে নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য পদের দাবি জানিয়ে এসেছে ভারত। নয়াদিল্লির দাবি, ১৯৪৫ সালে গঠিত ১৫ জাতির কাউন্সিল যুগের চাহিদা মেটাতে যথেষ্ঠ নয়। ২১ শতকের ভূরাজনৈতিক বাস্তবতার প্রতিফলন নেই এই সংগঠনে।

অপরদিকে গত রোববার জাতিসংঘের মহাসচিব ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদকে 'সেকেলে' বলে অভিহিত করেন এবং জানান, এই সংস্থার কর্তৃত্ব কমছে।

অ্যান্তোনিও গুতেরেস মন্তব্য করেন, এই সংগঠনের সদস্য পদ ও কার্যধারায় সংস্কার না আনলে এটি অদূর ভবিষ্যতে সব ধরনের বিশ্বাসযোগ্যতা হারাবে।

Comments

The Daily Star  | English
Gen Z factor in geopolitics

The Gen Z factor in geopolitics and the Bangladesh-US dynamics

Gen Z should keep in mind that the US cannot afford to overlook a partner like Bangladesh given the country’s pivotal position in South Asia’s economic landscape.

10h ago