রুশ পরমাণু নীতিতে পরিবর্তনের ঘোষণা দিলেন পুতিন
পরমাণু শক্তিধর কোনো দেশের সমর্থনে পরমাণু শক্তিহীন কোনো দেশ রাশিয়ায় আক্রমণ চালালে একে 'যৌথ হামলা' হিসেবে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তার এই ঘোষণাকে ইউক্রেন যুদ্ধে পারমানবিক অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি হিসেবে দেখা হচ্ছে।
বুধবার রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদের সঙ্গে বৈঠকে দেশের পরমাণু নীতিতে পরিবর্তন আনার কথা জানান পুতিন। তিনি বলেন, 'রাশিয়ার বিরুদ্ধে কোনো পরমাণু শক্তিহীন দেশ আক্রমণ চালালে তা একরকম। কিন্তু সেই দেশ যদি পরমাণু শক্তিধর অন্য কোনো দেশ বা একাধিক দেশ থেকে সাহায্য পায়, তাহলে রাশিয়া বিষয়টিকে যৌথ আক্রমণ হিসেবে দেখবে। এবং সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।'
পুতিনের এই ঘোষণা চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে পশ্চিমা বিশ্বে। ইউক্রেন তার মিত্র দেশগুলোর কাছে দূরপাল্লার মিসাইল চেয়েছে। তারা রুশ ভূখণ্ডের অভ্যন্তরে হামলার পরিকল্পনা করছে।
গত আগস্টে রাশিয়ার সীমান্ত অঞ্চল কুরস্কের একাংশের দখল নেয় ইউক্রেন।
সম্প্রতি এক বক্তৃতায় ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ইউক্রেনের পরমাণু চুল্লিগুলোতে আক্রমণের চিন্তা করছে রাশিয়া। যেভাবেই হোক তা প্রতিরোধ করতে হবে।
বেলারুশে আক্রমণ হলে পারমাণবিক অস্ত্রে পাল্টা হামলা
বুধবারের বৈঠকে পুতিন আরও বলেন, ১৯৯৯ সালে বেলারুশের সঙ্গে রাশিয়ার একটি বিশেষ চুক্তি হয়েছিল। সেই চুক্তি অনুযায়ী, বেলারুশ রাশিয়ার মিত্র রাষ্ট্র।
বেলারুশে কোনো আক্রমণ হলে রাশিয়া পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারে বাধ্য হবে বলে হুমকি দেন পুতিন।
ইউক্রেন যুদ্ধে বেলারুশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ইউক্রেনে সরাসরি সেনা মোতায়েন করেনি দেশটি। তবে বেলারুশকে ব্যবহার করে ইউক্রেনে আক্রমণের রাস্তা করে দিয়েছে রাশিয়ান বাহিনীকে।
বৈঠকে পুতিন বলেন, বেলারুশের আকাশ ব্যবহার করে ইউক্রেন রাশিয়ায় মিসাইল ছুঁড়ছে, বিমান পাঠাচ্ছে। এমনটা আর হতে দেওয়া যাবে না। সরাসরি পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি দেন তিনি।
'পারমাণবিক অস্ত্র এতদিন রাশিয়ার জনগণকে সম্ভাব্য আক্রমণের হাত থেকে সুরক্ষিত রেখেছে। রাশিয়ার হাতে এমন অস্ত্র আছে এটা জানায় বহু দেশ রাশিয়া আক্রমণ করেনি। কিন্তু এখন যুদ্ধের কৌশল বদলেছে। রাশিয়াও তার কৌশল বদলেছে। দেশের মানুষকে নিরাপদ রাখতে সর্বশেষ হাতিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র। আর কোনো উপায় না থাকলে রাশিয়া এই অস্ত্র ব্যবহার করতে বাধ্য হবে,' বলেন পুতিন।
রয়টার্স, এপি, এএফপি
Comments