ট্রাম্প-বাইডেন প্রেসিডেন্সিয়াল ডিবেটে উঠে এলো যেসব বিষয়

মার্কিন প্রেসিডেন্সিয়াল ডিবেটে মুখোমুখি বাইডেন-ট্রাম্প। ছবি: রয়টার্স
মার্কিন প্রেসিডেন্সিয়াল ডিবেটে মুখোমুখি বাইডেন-ট্রাম্প। ছবি: রয়টার্স

নির্বাচনের আগে প্রথমবারের মতো আটলান্টায় প্রেসিডেন্সিয়াল ডিবেটে মুখোমুখি হয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প ও জো বাইডেন।

আজ শুক্রবার ডয়চে ভেলের এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানানো হয়েছে। 

৭৮ বছরের ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা চলছে। অন্যদিকে, ৮১ বছরের জো বাইডেন দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে তারা দুইজনে মুখোমুখি বিতর্কে অংশ নেন সিএনএন টেলিভিশন চ্যানেলে।

মার্কিন অর্থনীতি প্রসঙ্গ

মার্কিন প্রেসিডেন্সিয়াল ডিবেটে বাইডেন। ছবি: রয়টার্স

বিতর্কের শুরুতেই বাইডেন তুলে আনেন ট্রাম্পের আগে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কথা। তার অভিযোগ, ট্রাম্পের আমলে অর্থনীতির পতন শুরু হয়েছে। তার মধ্যে এসেছে কোভিড পরিস্থিতি। ট্রাম্প কোভিড পরিস্থিতি সামলাতে পারেননি বলে অভিযোগ করেন বাইডেন। ট্রাম্পের অপারগতার কারণেই কোভিডে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে সরাসরি অভিযোগ করেন বাইডেন।

জবাবে ট্রাম্পও বেছে নেন অর্থনীতির প্রসঙ্গ। তার অভিযোগ, বাইডেনের আমলে অর্থনৈতিক মন্দা রেকর্ড ছুঁয়েছে। মন্দার কারণে মানুষ কাজ হারাচ্ছেন। যুক্তরাষ্ট্র ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।

ট্রাম্প দাবি করেছেন, একাধিক ক্ষেত্রে তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে এক নম্বরে নিয়ে গেছেন। তবে কোনো উদাহরণ তিনি দেননি।

গাজা-ইউক্রেন প্রসঙ্গ

মার্কিন প্রেসিডেন্সিয়াল ডিবেটে ট্রাম্প। ছবি: রয়টার্স
মার্কিন প্রেসিডেন্সিয়াল ডিবেটে ট্রাম্প। ছবি: রয়টার্স

গাজা এবং ইউক্রেন প্রসঙ্গ একাধিকবার উঠে এসেছে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের বিতর্কে। ট্রাম্প অভিযোগ করেছেন, বাইডেনের আমলে গোটা বিশ্ব যুদ্ধের মুখোমুখি। উত্তরে বাইডেন বলেছেন, 'এত মিথ্যে, এত ভুল তথ্য আমি জীবনে কখনো শুনিনি।'

ট্রাম্পের অভিযোগ, বিশ্ব যদি একজন ভালো মার্কিন নেতা পেতো, তাহলে আজ এই যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হতো না। এরপরেই ইউক্রেনকে দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রর সাহায্যের প্রসঙ্গ টেনে আনেন ট্রাম্প। বলেছেন, এখনো পর্যন্ত ইউক্রেনকে শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্র ২০০ বিলিয়ন ডলার দিয়েছে।

'এটা অনেক টাকা। এই টাকায় যুক্তরাষ্ট্রবাসীর অনেক উন্নতি করা সম্ভব ছিল। অর্থনীতিকে সতেজ করে তোলা সম্ভব ছিল। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি', যোগ করেন ট্রাম্প।

বাইডেন এর উত্তরে বলেছেন, ইউক্রেনকে এই সাহায্য অস্ত্র দিয়ে করা হয়েছে। অন্যান্য দেশও সমপরিমাণ অর্থ খরচ করেছে ইউক্রেনকে সাহায্য করার জন্য। বাইডেনের অভিযোগ, ট্রাম্প তার শাসনামলে ন্যাটো থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু তার শাসনামলে যুক্তরাষ্ট্র অন্তত ৫০টি দেশকে ইউক্রেনের পাশে দাঁড়াতে রাজি করাতে পেরেছে।

বয়সের প্রসঙ্গ

মার্কিন প্রেসিডেন্সিয়াল ডিবেটে ট্রাম্প-বাইডেন। ছবি: রয়টার্স
মার্কিন প্রেসিডেন্সিয়াল ডিবেটে ট্রাম্প-বাইডেন। ছবি: রয়টার্স

এবারের নির্বাচনে বয়স্কতম দুই প্রার্থী লড়াইয়ের মঞ্চে নেমেছেন। বাইডেন বলেছেন, রেকর্ড বয়সে কংগ্রেসে সিনেটর হয়েছিলেন তিনি। অত অল্প বয়সে আর কখনো কেউ সিনেটর হননি। পাশাপাশি তিনি বলেছেন, অনেকেই তার বয়স নিয়ে ঠাট্টা করেন। কিন্তু ট্রাম্প তার চেয়ে মাত্র তিন বছরের ছোট।

বাইডেনের দাবি, এই বয়সেও প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি যা কাজ করেছেন, তা অভূতপূর্ব।

ট্রাম্প বাইডেনকে প্রতিযোগিতায় আহ্বান করেছেন। ট্রাম্পের বক্তব্য, 'চিকিৎসকদের সামনে দাঁড়িয়ে কে বেশি ফিট, তার পরীক্ষা হোক।'

ট্রাম্পের দাবি, ২৫ বছর আগে তিনি যতটা 'তরতাজা' ছিলেন এখন তার চেয়েও একটু বেশি ভালো আছেন। কারণ, আগের চেয়ে ওজন কমেছে তার।

অন্যান্য বিষয়

এদিনের বিতর্কে একাধিক বিষয় সামনে এসেছে। তার মধ্যে গাজা, ইউক্রেন যুদ্ধের প্রসঙ্গ যেমন এসেছে। তেমনই এসেছে অর্থনীতি, অভিবাসন প্রসঙ্গ। তবে বাইডেনের শারীরিক পরিস্থিতি বিতর্কের অনেকটা অংশ জুড়ে ছিল। পাশাপাশি উঠে এসেছে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে চলতে থাকা একাধিক মামলার প্রসঙ্গও।

সিএনএনের সাংবাদিক ডেভিড কিং মন্তব্য করেন, 'ট্রাম্প অসংখ্যবার ফ্যাক্ট চেকিং মেশিনকে পরাস্ত করেছেন।'

ট্রাম্প যা বলেছেন, তার সঙ্গে বাস্তবের সম্পর্ক নেই বলে দাবি করেন এই সাংবাদিক। 

অন্যান্যরা জানান, বাইডেনও বিতর্কে খুব সফল, এমনটা বলা যায় না। কোনো ক্ষেত্রে ট্রাম্পকে জবাব দিতে পারলেও, বেশ কিছু ক্ষেত্রে তিনি সময়মতো জবাব খুঁজে পাননি। ট্রাম্পকে পর্যুদস্ত করতে পারেননি তিনি। বেশ কয়েকবার কথার খেই হারিয়ে ফেলেন তিনি। 

রয়টার্স, এপি, এএফপি

Comments

The Daily Star  | English

One killed in multi-vehicle crash on Dhaka-Mawa highway

The chain of crashes began when a lorry struck a private car from behind on the Mawa-bound lane

52m ago