‘নেতানিয়াহুর প্রতি কারও আস্থা নেই’

গাজা যুদ্ধে বিভক্ত ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা

সমালোচনার মাত্রা এতটাই কঠোর ছিল যে প্রধানমন্ত্রী শেষ পর্যন্ত টুইটটি মুছে ফেলতে বাধ্য হন এবং পোস্টটির জন্য ক্ষমা চেয়েছেন।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ছবি: রায়টার্স

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর এক টুইটের পর প্রকাশিত হয়েছে দেশটির রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, প্রধানমন্ত্রী ও সামরিক সংস্থাগুলোর মধ্যকার ফাটল।

আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোববার মধ্যরাতের ঠিক পরে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু লিখেছেন, ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার সতর্কতা বিষয়ে তাকে কিছুই জানানো হয়নি। তার পরিবর্তে নেতানিয়াহু এই হামলার জন্য সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দা প্রধানকে দায়ী করেছেন। যে হামলায় অন্তত ১ হাজার ৪০০ জন ইসরায়েলি নিহত হয়েছেন। নেতানিয়াহু আরও বলেছেন, হামলার আগে তাদের ধারণা ছিল হামাস 'ভয় পেয়ে মীমাংসার জন্য' প্রস্তুত। 

নেতানিয়াহুর বক্তব্যে দেশটিতে তোলপাড় শুরু হয়েছে। গাজায় সামরিক অভিযানের মধ্যে নেতানিয়াহুর এ ধরনের বক্তব্যকে রাজনৈতিক খেলা হিসেবে অভিহিত করে তার বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন দেশটির অন্যান্য রাজনৈতিক নেতারা। সমালোচনার মাত্রা এতটাই কঠোর ছিল যে প্রধানমন্ত্রী শেষ পর্যন্ত টুইটটি মুছে ফেলতে বাধ্য হন এবং অপেক্ষাকৃত নরম সুরে পোস্টটির জন্য ক্ষমা চেয়েছেন। তিনি বলেছেন, 'আমার ভুল হয়েছে।'

বিশ্লেষকরা বলছেন, এ ঘটনা রাজনৈতিক দল ও সামরিক সংস্থাগুলো মধ্যে একটি বড় ধরনের ফাটলের উপস্থিতি প্রমাণ করেছে। এ ঘটনায় অনেকের মনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, নেতা হিসেবে তিনি ব্যক্তিগত স্বার্থকে পাশকাটিয়ে দেশের স্বার্থকে প্রাধান্য দিতে পারবেন কি না?

ব্রিটিশ থিংকট্যাংক চ্যাথাম হাউসের মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা প্রোগ্রামের সহযোগী ফেলো ইয়োসি মেকেলবার্গ বলেছেন, 'তিনি সঠিক অবস্থানে ছিলেন বলাটা হবে এ বছরের সবচেয়ে আন্ডারস্টেটমেন্ট।'

তিনি বলেছেন, 'খুবই কঠিন একটি সামরিক অভিযান চলছে, তাই আপনারা একজন দায়িত্বশীল প্রধানমন্ত্রী চান। তবে (সরকারে) এমন একজন ব্যক্তিও নেই যিনি নেতানিয়াহুকে বিশ্বাস করেন- এটি এই মন্ত্রিসভার প্রধান সমস্যা।'

গত ৭ অক্টোবরের পরই নেতানিয়াহু একটি যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা গঠন করেছেন। যেখানে বেশ কয়েকজন সাবেক উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা আছেন।

নেতানিয়াহুর বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন অন্যান্য নেতারাও। বিরোধী দলের পার্লামেন্ট সদস্য আভিগডর লিবারম্যান বলেছেন, 'নেতানিয়াহু দেশের নিরাপত্তার বিষয়ে আগ্রহী নন, তিনি জিম্মিদের প্রতিও আগ্রহী নন, শুধু রাজনীতির বিষয়ে আগ্রহী' 

তবে ইসরায়েল সেনাবাহিনীর শীর্ষ মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি এ বিষয়ে বিস্তারিত মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি বলেছেন, 'আমরা যুদ্ধের মধ্যে আছি।'

 

 

Comments