গাজাবাসীর একযোগে শাস্তি গ্রহণযোগ্য নয়: কাতার, হামাসের কারণে সহায়তা পৌঁছানো কঠিন: ব্লিঙ্কেন
ইসরায়েলের সর্বাত্মক অবরোধ এবং মুহুর্মুহু বিমান হামলায় কার্যত মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা।
কাতারের শীর্ষ কূটনীতিকরা বলছেন, গাজাবাসীকে একযোগে শাস্তি দেওয়ার বিষয়টি কোনোভাবেই 'গ্রহণযোগ্য নয়'।
কাতারের প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান আল থানি জানান, এ অঞ্চলে রক্তপাত এবং সহিংসতা হ্রাসে যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছাতে অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করছে দোহা।
আজ শুক্রবার দোহায় মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে বৈঠকের পর এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, 'কাতারের অগ্রাধিকার হলো- একটি যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানো, বেসামরিকদের রক্ষা করা, বন্দিদের মুক্তি দেওয়া এবং এ অঞ্চলে সহিংসতা যেন আর ছড়াতে না পারে সেজন্য কাজ করা।'
কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, 'ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে মধ্যস্থতার ক্রীড়নক হতে চায় কাতার, তবে সেখানে অবশ্যই "ফিলিস্তিনি সমস্যার ন্যায্য সমাধান" থাকতে হবে।'
একই সংবাদ সম্মেলনে ব্লিঙ্কেন বলেন, 'আমরা জানি মানবিক পরিস্থিতি জরুরি। গাজার মানবিক সমস্যার সমাধানে আমরা কাতারসহ অংশীদারদের সঙ্গে আলোচনা করছি।'
'আমরা ফিলিস্তিনি পরিবারগুলোকে স্বীকার করি, যারা কোনো দোষ করা ছাড়াই ভুগছে। ফিলিস্তিনি নাগরিকরা জীবন হারাচ্ছেন', যোগ করেন তিনি।
তবে হামাস বেসামরিকদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করায় এবং ফিলিস্তিনিদের দক্ষিণ গাজায় যেতে বাধা দেওয়ার কারণে গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর বিষয়টি কঠিন হয়ে পড়েছে বলে জানান ব্লিঙ্কেন।
তিনি বলেন, 'এটা কেন ঘটছে, সে দিক থেকে আমাদের দৃষ্টি সরে যায়নি। ইসরায়েল গাজায় অভিযান পরিচালনা করছে কারণ হামাস সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে দেশটির ১ হাজার ৩০০ মানুষকে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর উপায়ে হত্যা করেছে।'
এদিকে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান বলেছেন, 'গাজার ২০ লাখ মানুষের বিদ্যুৎ, পানি, জ্বালানি ও খাদ্য বিচ্ছিন্ন করা "সবচেয়ে মৌলিক মানবাধিকারের লঙ্ঘন"।'
ইস্তাম্বুলে এক অর্থনৈতিক ফোরামে তিনি বলেন, 'গাজাবাসীকে সম্মিলিত শাস্তি দেওয়া সমস্যাটিকে আরও বড় করে তুলবে, আরও যন্ত্রণা, আরও উত্তেজনা এবং আরও কান্নার দিকে নিয়ে যাবে।'
ওষুধ, খাদ্য ও চিকিৎসা সামগ্রী নিয়ে একটি মানবিক সহায়তাকারী বিমান আজ সকালে মিশরের এল আরিশ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেছে বলেও জানান তিনি।
এসব সামগ্রী মিশর ও গাজার মধ্যে রাফাহ বর্ডার ক্রসিং দিয়ে পৌঁছাতে অনুমতি দেওয়ার জন্য ইসরায়েলি সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন এরদোয়ান।
গাজায় ইসরায়েলের 'মানবতাবিরোধী অপরাধ' বন্ধ করতে আরও বেশি উদ্যোগ গ্রহণের জন্য জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের কাছে আবেদন করেছেন জাতিসংঘে ফিলিস্তিনি দূত রিয়াদ মনসুর।
জাতিসংঘে আরব গ্রুপের রাষ্ট্রদূতদের বৈঠকের আগে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, 'জাতিসংঘ মহাসচিবের আরও কিছু করা উচিত, যা করা হচ্ছে তা যথেষ্ট না। ইসরায়েলের মানবতাবিরোধী অপরাধ বন্ধে আমাদের সকলেরই আরও বেশি কিছু করা দরকার।'
Comments