মালয়েশিয়া টিকবে না, যদি না বদলায়: আনোয়ার ইব্রাহিম
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সমৃদ্ধ দেশ মালয়েশিয়ায় সংস্কার প্রয়োজন। যদি না বদলায়, তাহলে দেশটি টিকবে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম।
আজ শুক্রবার কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ তথ্য জানিয়েছে।
সংবাদমাধ্যমটিকে একান্ত সাক্ষাৎকারে মালয় প্রধানমন্ত্রী জানান, তিনি মালয়েশিয়ায় জাতিভিত্তিক নীতি থেকে সরে এসে প্রয়োজনভিত্তিক নীতি প্রণয়নের চেষ্টা করছেন।
আনোয়ার ইব্রাহিম বলেন, 'আমি মনে করি, রাষ্ট্র পরিচালনার বিষয়ে আমার কাজ হচ্ছে দেশে পরিবর্তন আনা। তা না হলে দেশটি ধ্বংস হয়ে যাবে।'
তিনি আরও বলেন, 'সংস্কারের বিষয়ে যদি পরিষ্কার রাজনৈতিক অঙ্গীকার না আসে তাহলে আমার বিশ্বাস মালয়েশিয়া টিকবে না।'
২০২২ সালের নভেম্বরে নির্বাচনে বিজয়ের পর প্রধানমন্ত্রী হয়ে ৭৫ বছর বয়সী আনোয়ার ইব্রাহিম বহুজাতিক মালয়েশিয়ার শীর্ষ পর্যায়ের রাজনীতির ঘূর্ণিপাকে পড়ে যান।
যুবনেতা থেকে বর্ষীয়ান রাজনীতিক আনোয়ার মনে করেন, তার দেশে 'প্রয়োজনভিত্তিক' নীতি নির্ধারণ করা দরকার। তার মতে, 'জাতিভিত্তিক নীতি নির্ধারণের তুলনায় প্রয়োজনভিত্তিক নীতি মালয়দের জন্য বেশি উপকারী হবে। এটা প্রমাণিত যে, জাতিভিত্তিক নীতি বাস্তবায়ন করলে অল্প কিছু সংখ্যক অভিজাত মানুষের উপকার হয়।'
প্রতিবেদন অনুসারে, আনোয়ার ইব্রাহিম যে জোটের প্রধান হয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় এসেছেন সেই জোটের অবস্থা বেশ নাজুক। তাই তিনি চাইলেও প্রয়োজনীয় সংস্কার আনতে পারবেন কি না তা নিয়ে সন্দেহ আছে।
আনোয়ারের পাকাতান হারাপান জোট সরকার গঠনে প্রয়োজনীয় আসন না পাওয়ায় অন্য জাতির ছোট ছোট দলের সমর্থন নিয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রী হয়ে দেশটিতে নতুন ইতিহাস গড়েছেন। কেননা, তিনিই প্রথম নেতা হিসেবে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য অন্য জাতির দলগুলোর সমর্থন নিয়েছেন। দেশটির অর্ধেকের অল্প বেশি মানুষ জাতিগতভাবে মালয়।
দেশটির রক্ষণশীল মালয় ও মুসলিম দলগুলোর জোট ও আনোয়ারের প্রধান বিরোধী পেরিকাতান নাসিনাল বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর বেশকিছু সংস্কার কর্মসূচিকে 'বেপরোয়া' বলে অভিহিত করেছে।
বহু দশক ধরে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকা এই জোটকে মালয়েশিয়ায় জাতিভিত্তিক নীতি নির্ধারণের কারিগর হিসেবে গণ্য করা হয়। এ ছাড়াও, এই জোটকে মনে করা হয়, মালয় জাতির 'রক্ষাকর্তা'।
তবে আনোয়ার ইব্রাহিম মনে করেন, এই পরিস্থিতির পরিবর্তন প্রয়োজন। দেশটিতে সব জাতির অধিকার নিশ্চিত করে সংস্কার আনা প্রয়োজন। তা না হলে দেশটি সংকটে পড়বে।
Comments