স্টেন্টের দাম বৃদ্ধিতে দেশে ব্যয়বহুল হার্টের চিকিৎসা

হার্টের চিকিৎসা: স্টেন্টের দাম বৃদ্ধিতে রোগীর ওপর বাড়তি চাপ

বাবার চিকিৎসা নিয়ে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলেন মহিউদ্দিন আহমেদ। তার কারণ শুধু এই নয় যে ৬৮ বছর বয়সী বাবার কার্ডিয়াক স্টেন্ট ইমপ্লান্টেশন অপারেশ হচ্ছিল। গত মার্চে অপারেশনের জন্য তিনি যে টাকা ধার করেছিলেন, সেটা কীভাবে ফেরত দেবেন তা নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন।

তিনি এতটা উদ্বিগ্ন হতেন না যদি সরকার ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ডলারের বিপরীতে টাকার তীব্র অবমূল্যায়নের কারণে কার্ডিয়াক স্টেন্টের দাম ২০-৩৫ শতাংশ না বাড়িয়ে দিত। যেখানে সাধারণ মানুষ জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান ব্যয়বৃদ্ধি সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন, সেখানে বাংলাদেশে ব্যয়বহুল কার্ডিয়াক চিকিৎসা আরও ব্যয়বহুল করে তোলা হয়েছে। 

সম্প্রতিকালে মহিউদ্দিন নামের ওই আইনজীবী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এটা আমার পরিবারের ওপর অনেক বড় একটা চাপ।' হার্টে ব্লক ধরা পড়ার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) অস্ত্রোপচারের জন্য প্রয়োজনীয় ৩ লাখ ৬৪ হাজার টাকার ব্যবস্থা করতে তার ৩ সপ্তাহ সময় লেগে যায়।

প্রতিটি স্টেন্টের বিল হয়েছে প্রায় ১ লাখ টাকা, যা ভারতে তুলনায় যার দাম দ্বিগুণেরও বেশি।

আমেরিকান মেডিকেল ডিভাইস প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান অ্যাবটের তৈরি শিনস এক্সপেডিশন স্টেন্টের ক্ষেত্রে দেখা গেছে ভারতে এর দাম প্রায় ৪৭ হাজার টাকা এবং নেপালে ৭০ হাজার টাকার মতো। 

তবে বাংলাদেশে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর কর্তৃক দাম বৃদ্ধির পর এর সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য এখন ১ লাখ ২৫ হাজার ৫০০ টাকা। যা আগে ছিল ১ লাখ ৮ হাজার ৬২৮ টাকা।

বোস্টন সায়েন্টিফিকের প্রোমাস প্রিমিয়ার, প্রমাস এলিট, জার্মান কোম্পানি বায়োট্রনিকের ওরসিরো এবং মেডট্রনিকের রেজোলিউট অনিক্সের মতো অন্যান্য কোম্পানির স্টেন্টের দামের ক্ষেত্রে এই ধরনের বড় পার্থক্য পাওয়া গেছে।

ভারতে, স্টেন্টের দাম ৯ হাজার ৮৪২ টাকা থেকে শুরু হয়ে ৩৫ হাজার ৮৩৫ টাকা পর্যন্ত  হয়ে থাকে। 

বাংলাদেশে ঔষধ প্রশাসনের মূল্য-নির্ধারণ কমিটির মাধ্যমে নির্ধারিত সীমা অনুযায়ী স্টেন্টের মূল্য নির্ধারণ করা হয়। এটা ১.৪২ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছিল, যার মধ্যে সরবরাহকারীর পাশাপাশি ডিলারদের ট্যাক্স এবং লাভের পরিমাণ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এ ছাড়াা এতে মধ্যস্বত্বভোগীদের জন্য ১১.৫ শতাংশ 'খুচরা কমিশন' অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, সম্প্রতিকালে টাকার মান কমে যাওয়ায় স্টেন্টের দাম বাড়ানো হয়েছে।

 

ইংরেজি থেকে সংক্ষেপিত। মূল লেখা পড়তে ক্লিক করুন

https://www.thedailystar.net/news/bangladesh/news/cardiac-treatment-patients-hit-hard-costly-stents-3312006

 

Comments