ইন্দোনেশিয়ার ডিজিটাল স্বাস্থ্য ব্যবস্থা
করোনা মহামারিতে ইন্দোনেশিয়ার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ডিজিটাল করার প্রক্রিয়া আরও দ্রুততর হয়েছে। দেশটিতে মহামারির সর্বোচ্চ প্রাদুর্ভাব চলাকালে ২০২১ সালে যানবাহন, শপিংমলসহ যেকোনো জনসমাগমস্থলে প্রবেশাধিকারে জন্য একটি অ্যাপ চালু হয়।
ওই অ্যাপটিতে করোনা পরীক্ষা, টিকা দেওয়ার রেকর্ড এবং স্বাস্থ্য সংক্রান্ত অন্যান্য তথ্য এন্ট্রি করতে হয়। এরপর প্রত্যেকের জন্য আলাদা একটি কিউআর কোড তৈরি হয়। যেটি ব্যবহার করে চলাচল বা প্রবেশাধিকার পাওয়া যায়। স্মার্টফোনে এই অ্যাপটির ব্যবহার শুরুর পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে নির্দিষ্ট ব্যক্তির চলাচলেরও একটি ম্যাপিং তৈরি হয়।
২০২৩ সালের শুরুতে ইন্দোনেশিয়া করোনার নির্দিষ্ট স্বাস্থ্যবিধি প্রত্যাহার করেছে। কাজেই মহামারির জন্য চালু হওয়া অ্যাপটি ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা হারাচ্ছে। ভবিষ্যতে সব নাগরিকের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত তথ্য সমন্বয় করার বিষয়টি বিবেচনা করেই অ্যাপটি চালু করা হয়েছিল।
ইন্দোনেশিয়ার সব স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, কমিউনিটি ক্লিনিক, প্যাথলজি পরীক্ষা কেন্দ্র ও ফার্মেসি এই অ্যাপের মাধ্যমে সংযুক্ত হচ্ছে। বর্তমানে অনলাইন ডাটাবেজ ব্যবহার করে প্রতিটি প্রতিষ্ঠান আলাদাভাবে সেবাগ্রহীতার স্বাস্থ্য রেকর্ড সংরক্ষণ করে থাকে। তবে, এই অ্যাপের মাধ্যমে প্রতিটি নাগরিকের ওষুধ কেনা থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য সংরক্ষণ করা হবে। সেবাদানকারী যেকোনো প্রতিষ্ঠান নির্দিষ্ট কোডের মাধ্যমে সেবাগ্রহীতার রেকর্ড দেখতে পারবেন। সেবাগ্রহীতাও তার স্বাস্থ্য সংক্রান্ত রেকর্ড দেখতে পারবেন এবং প্রেসক্রিপশনসহ যেকোনো রিপোর্ট আ্যপের মাধ্যমেই সংগ্রহ করতে পারবেন। ২০২৩ সালের মধ্যেই এই সমন্বয় প্রক্রিয়া শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে এবং আগামী বছর থেকে এর ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সাল থেকে ইন্দোনেশিয়ার স্বাস্থ্যসেবা সার্বজনীন স্বাস্থ্য বীমার মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে।
বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতে বিরাজমান অব্যবস্থাপনা দুর করতে স্বাস্থ্যখাতে ডিজিটাল প্রযুক্তির সমন্বিত ব্যবহার এবং সার্বজনীন স্বাস্থ্য বীমা চালুর বিকল্প নেই। দক্ষ জনবল, সরঞ্জাম এবং অবকাঠামো উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে এই বিষয়ে নীতিনির্ধারকদের অবশ্যই উদ্যোগ নিতে হবে।
ডা. এম আর করিম রেজা, ত্বক ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ
Comments