খুমেক শিক্ষার্থী-ওষুধ ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষ: ইন্টার্ন চিকিৎসকের কর্মবিরতি

খুলনা মেডিকেল কলেজের সামনে ওষুধ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের গতকাল সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ছবি: স্টার

খুলনা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ওষুধ ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষের ঘটনায় ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা আজও অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি পালন করছেন।

তারা জানিয়েছেন দোষীদের গ্রেপ্তার না করা পর্যন্ত তারা কর্মবিরতি চালিয়ে যাবেন।

গতকাল রাত ১০টা থেকে ইন্টার্ন চিকিৎসরা এই কর্মবিরতি শুরু করেন।

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি সাইফুল ইসলাম অন্তু দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, গতকালের রাতের সংঘর্ষের ঘটনায় আমাদের ১১ জন গুরুতর আহত হয়েছেন, এর মধ্যে চার জনের অবস্থা আশঙ্কজনক। যারা আমাদের মেডিকেল শিক্ষার্থী ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের মেরে আহত করেছে তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করেনি।

'আমরা এখনো কলেজ প্রশাসনের সাথে মামলা করার ব্যাপারে কোনো ঐক্যমতে আসতে পারিনি, আজ কলেজ প্রশাসন বাদি হয়ে কেস করবে বলে আমরা আশা করছি,' বলেন তিনি

'যেহেতু আজ ১৫ আগস্ট তাই আমরা আজ কোনো কর্মসূচি পালন করছি না। কিন্তু আগামীকাল থেকে আমরা কঠোর কর্মসূচি দেব,' বলেন তিনি।

গতকাল সোমবার রাত ৯টার দিকে হাসপাতালের সামনে এ সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত ২০ শিক্ষার্থী ও ৯ জন ওষুধ ব্যবসায়ী আহত হয়েছেন বলে উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।

এদিকে সংঘর্ষের ঘটনায় হাসপাতালের সামনের ওষুধ ব্যবসায়ীরা দোকান বন্ধ রেখেছেন। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ রোগীরা।

খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার হোগলা বুনিয়া গ্রাম থেকে ইসমাইল হোসেন ও তার স্ত্রী রাজিয়া বেগম হাসপাতালে এসেছিলেন চিকিৎসা নিতে। বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে তাদের হাসপাতালের মেইন গেটের উত্তর পাশে বসে থাকতে দেখা যায়। জরুরি বিভাগ থেকে মৌখিক পরামর্শ নিয়ে তারা খুলনা সদর হাসপাতালে রওনা হচ্ছিলেন।

ইসমাইল হোসেন বলেন, অসুস্থ স্ত্রীকে এসেছিলাম ভর্তি করাব, কিন্তু এখান থেকে পরামর্শ দেয়া হয়েছে ভর্তি হবে না। কী কারণে ভর্তি করাবে না তা কিছু বলেনি, পরে ইমার্জেন্সি বিভাগ থেকে মৌখিকভাবে বলা হয়েছে অন্য জায়গায় ভর্তি হওয়ার জন্য।

'তাই আমরা সদর হাসপাতালে যাচ্ছি। তাছাড়া এখানকার ওষুধের দোকানগুলো তো সব বন্ধ আছে। তাই আমরা অন্য ব্যবস্থা করার চেষ্টা করছি,' বলেন তিনি।

এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

সোনাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মমতাজুল হক বলেন, আমরা দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। কিন্তু কোনো সমাধানে আসতে পারেনি। এখনো পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।

খুলনা মেডিকেল কলেজ সামনের সব ওষুধের দোকানগুলো বন্ধ রয়েছে বলে জানান তিনি।

খুলনা মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক মেহেদী নেওয়াজ বলেন, 'ওষুধের দাম বেশি রাখার প্রতিবাদ করায় আমাদের শিক্ষার্থীদের খুব বাজেভাবে মারা হয়েছে। গুরুতর আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আমরা শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।

সোমবার সন্ধ্যায় হাসপাতালের সামনের একটি ওষুধের দোকানে ওষুধ কিনতে গিয়ে ব্যবসায়ী ও মেডিকেল শিক্ষার্থীর মধ্যে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।

Comments

The Daily Star  | English

Dhaka airport receives 2nd bomb threat

Operations at HSIA continue amid heightened security

2h ago